সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মেহরুন নিশি

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৫, ১০:৫০ এএম

সিএ পেশার আদ্যোপান্ত

মেহরুন নিশি

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৫, ১০:৫০ এএম

সিএ পেশা

সিএ পেশা

আজকের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা শুধু পণ্য বা সেবা বিক্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই; এর জন্য সঠিক আর্থিক পরিকল্পনা, কর ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশে কর আইন, নিরীক্ষা প্রক্রিয়া এবং আর্থিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় অনেক জটিলতা থাকে।

তাই একজন পেশাদার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের সহায়তা ব্যবসার টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। বাংলাদেশে ক্যারিয়ারের জগতে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা সিএ পেশা দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আর্থিক খাতের সবচেয়ে সম্মানজনক পেশাগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। চাকরির বাজারে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা সিএ পেশা একদিকে যেমন সম্মানজনক, তেমনি কর্মসংস্থানের দিক থেকেও অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। আর্থিক পরিষেবা, ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তসহ প্রতিষ্ঠানের সঠিক পরিচালনার ক্ষেত্রে সিএ-দের ভূমিকা অপরিসীম। ব্যাংক, বিমা, করপোরেট হাউস থেকে শুরু করে বহুজাতিক কোম্পানিতেও দক্ষ সিএ দরকার হয়। তাই উচ্চশিক্ষা ও সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ারের পরিকল্পনায় এ পেশার সুযোগ-সুবিধা, চ্যালেঞ্জ ও পথচলা জানা জরুরি-

সিএ আসলে কী?

‘চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট’ পেশা মূলত হিসাবরক্ষণ, নিরীক্ষা (অডিট), কর ব্যবস্থাপনা, ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্ট ও পরামর্শক সেবার সমন্বিত ক্ষেত্র। একজন সিএ শুধু হিসাব রাখার কাজ করেন না। তারা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখা, ট্যাক্স পরিকল্পনা, বাজেট তৈরি, বিনিয়োগের কৌশল নির্ধারণ থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সহজভাবে বললে, ব্যবসার আর্থিক ভাষা বোঝেন এবং সেই ভাষাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করেন।

পড়াশোনার ধাপ

বাংলাদেশে সিএ পড়াশোনা পরিচালনা করে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (ওঈঅই)। এ বিষয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য যেকোনো বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকলেই সুযোগ মেলে। তবে বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা তুলনামূলক এগিয়ে থাকে। সিএ পড়াশোনা ঈবৎঃরভরপধঃব খবাবষ, চৎড়ভবংংরড়হধষ খবাবষ এবং অফাধহপবফ খবাবষ এ তিনটি ধাপে বিভক্ত। প্রতিটি ধাপে আলাদা পরীক্ষা দিতে হয়। এর পাশাপাশি তিন থেকে চার বছরের আর্টিকেলশিপ (ইন্টার্নশিপ) বাধ্যতামূলক। এ সময় শিক্ষার্থীরা কোনো সিএ ফার্মে কাজ করে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।

কাজের সুযোগ

চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের কর্মক্ষেত্র বিস্তৃত। এর মধ্যে কিছু উদাহরণ হলো-

করপোরেট সেক্টর:

বিভিন্ন জাতীয় ও বহুজাতিক কোম্পানিতে ফাইন্যান্স ম্যানেজার, অডিটর, ট্যাক্স কনসালট্যান্ট কিংবা সিএফও হিসেবে কাজের সুযোগ থাকে।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান:

রিস্ক অ্যানালিস্ট, ক্রেডিট কনসালট্যান্ট বা অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার হিসেবে কাজ করা যায়।

সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান:

অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, নিরীক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন জায়গায় সিএ-দের চাহিদা রয়েছে।

নিজস্ব প্রতিষ্ঠান:

অভিজ্ঞতা অর্জনের পর কেউ চাইলে নিজের সিএ ফার্ম খুলে স্বাধীনভাবে পরামর্শক সেবা দিতে পারেন।

সুবিধা ও সম্ভাবনা

সিএ পেশার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের পেশা। দেশে যেমন এর চাহিদা আছে, বিদেশেও সমানভাবে স্বীকৃত। আরেকটি দিক হলো চাকরির নিরাপত্তা ও সম্মান। একজন দক্ষ সিএ আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞ হিসেবে সবসময়ই মূল্যবান। আয়ও তুলনামূলক বেশি; অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে বেতন ও সুযোগ-সুবিধা বহুগুণে বাড়ে।

চ্যালেঞ্জ

সিএ পেশার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো দীর্ঘ সময় ধরে অধ্যয়ন ও অনুশীলনের চাপ। পরীক্ষার পাস রেট তুলনামূলক কম হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ধৈর্যশীল হতে হয়। একই সঙ্গে কম ভাতার কারণে আর্টিকেলশিপের সময় অনেকের জন্য আর্থিক চাপ তৈরি হয়। তবে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করার পর ক্যারিয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল। এ ছাড়া একজন সফল চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হতে শুধু বইয়ের জ্ঞান যথেষ্ট নয়। এর পাশাপাশি দরকার কিছু বিশেষ দক্ষতা থাকতে হয়। হিসাবরক্ষণ ও গণিতে দৃঢ় ভিত্তি, বিশ্লেষণী চিন্তাভাবনা, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা, নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা, সততা ও পেশাদারিত্ব থাকলে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া যায়।

ভবিষ্যৎ দিগন্ত

বাংলাদেশের অর্থনীতি যেমন ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি ব্যবসা ও শিল্প খাতে স্বচ্ছ আর্থিক ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তাও বাড়ছে। ফলে আগামী দিনে সিএ পেশার গুরুত্ব আরও বাড়বে। শুধু চাকরি নয়, বিশ্বায়নের যুগে এটি উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগও তৈরি করছে। অনেকেই সিএ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে নিজস্ব ব্যবসা দাঁড় করাচ্ছেন বা বিদেশে উচ্চতর ক্যারিয়ার গড়ে তুলছেন।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!