মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০২৫, ০৪:১০ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক নিয়ে সরকারের পদক্ষেপে হতাশ ব্যবসায়ীরা

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০২৫, ০৪:১০ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক নিয়ে সরকারের পদক্ষেপে হতাশ ব্যবসায়ীরা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপে হতাশায় ধুঁকছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, শিল্পকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্যে এমন খারাপ সময় আর আসেনি। সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নিলেও সমাধানের সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন তারা। গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক: কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন।

সভায় যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়ে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ। তিনি বলেছেন, আমার ৪০ বছরের ব্যবসাজীবনে এমন সংকট আর আসেনি।

আমরা যাদের কাছে রপ্তানি করি, এমন বড় বড় ব্র্যান্ড যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে চলমান ট্যারিফ নেগোসিয়েশনের বিষয়ে খোঁজখবর রাখছে এবং লবিং করছে। তারা আমাদের জানিয়েছে, তোমরা (বাংলাদেশ) ভালো রেজাল্ট পাবে বলে মনে হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র থেকে হতাশার কথা আসছে।

এ কে আজাদ আরও বলেন, আমরা যখন সরকারের সঙ্গে কথা বললাম, লবিস্ট নিয়োগের জন্য বললাম, তারা আমাদের জানালেন, ৯৫ শতাংশ সমাধান হয়ে গেছে। রোববার আমাকে একটা ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকে মেইল পাঠানো হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে, আগামী ১ তারিখ থেকে যে প্রোডাক্ট তৈরি করা হবে, সেখানে নতুন ট্যারিফ থাকলে আমি (সরবরাহকারী) কত শতাংশ শেয়ার করব, সেটি তাকে জানানোর জন্য। ওই ক্রেতার কাছে আমার রপ্তানি ৮০ মিলিয়ন ডলার, সেখানে আমি ইনকাম করি ১.৩৭ মিলিয়ন ডলার। ৮০ মিলিয়ন ডলার থেকে যদি ৩৫ শতাংশ শেয়ার করি, তাহলে আমার কী থাকবে?

লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বাংলাদেশ সরকার ট্যারিফ ইস্যুতে কোন পথে যাচ্ছে তা নিয়ে আমরা কনফিউজড।
সভায় বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, বাংলাদেশের দর-কষাকষির অভিজ্ঞতা নেই। পাল্টা শুল্ক বিষয়ে অন্য দেশের তুলনায় আমাদের দর-কষাকষি হতাশ করেছে। নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট (এনডিএ) থাকা সত্ত্বেও মালয়েশিয়া জটিল ইস্যুগুলো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করছে।

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, সরকার কী করছে বা হালনাগাদে কী অগ্রগতি আছে, তা ব্যবসায়ীরা জানতে পারেননি। ওই সময় (এপ্রিল মাসে) সরকার থেকে বলা হলো, তারা (সরকার) চেষ্টা করছে। কিন্তু সরকার কী করছে বা হালনাগাদে কী অগ্রগতি আছে, সেগুলো আমরা জানতে পারিনি।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে তিন দিন আগেও আশাবাদী ছিলাম। যারা সরাসরি দর-কষাকষি করছেন, ওনারা অনানুষ্ঠানিকভাবে বলেছেন, তারা খুবই আত্মবিশ্বাসী। তবে দুই দিন আগে থেকে কানাঘুষা চলছে যে তারা বুঝতে পেরেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) পাল্টা শুল্ক কমানোর চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ নয়। ট্রাম্প প্রশাসন হচ্ছে সেই কর্তৃপক্ষ।

এটা বুঝতে এত সময় লাগল!’
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘আমরা যদি বিষয়টি এক মাস আগে জানতে পারতাম, তাহলে লবিস্ট নিয়োগের প্রক্রিয়াটি শুরু করতে পারতাম। গতকাল থেকে আমরা লবিস্ট নিয়োগে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছি। তবে লবিস্টদের কাছ থেকে সাড়া কম পাচ্ছি। তার কারণ, অধিকাংশই বিভিন্ন দেশের পক্ষে যুক্ত হয়ে গেছে। আমার সংগঠনের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এই মুহূর্তে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে নিরুৎসাহিত করছি। তার কারণ, এটা (দর-কষাকষি) ব্যর্থ হতে যাচ্ছে। আমরা কেন ব্যর্থতার দায়ভার নেব?’

মাহমুদ হাসান খান পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, বিজিএমইএর ১ হাজার ৩২২টি সদস্য কারখানা যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। এর মধ্যে ১০০ কারখানার ৯১-১০০ শতাংশ রপ্তানির গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। আর ৮২২ কারখানা শূন্য থেকে ২০ শতাংশ রপ্তানি করে দেশটিতে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ মার্জিন (মুনাফা) ব্যবসা করছি। বাড়তি শুল্ক ২০ শতাংশ হলেও আমরা মনে করব, একটা জায়গায় ভালো। যদি না ভারত, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার পাল্টা শুল্ক আমাদের চেয়ে কম হয়।’

বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘তৈরি পোশাক রপ্তানি আমাদের রুটিরুজি। দেরি হয়ে গেলেও আমরা লবিস্ট নিয়োগ করার চেষ্টা করছি। বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পিআরআইয়ের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি। ইতিমধ্যে দুজন লবিস্টের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। এর মধ্যে একজন সাড়া দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, আমলাতন্ত্রের মধ্যে দড়ি টানাটানি বন্ধ না হলে বেসরকারি খাত এগোবে না। পাল্টা শুল্কের বিষয়ে ‘স্মার্টলি’ দর-কষাকষি করতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত, সরকার কখনোই বেসরকারি খাতকে স্বীকৃতি দেয়নি।

অনুষ্ঠানে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, কোনো দুর্বল সরকার সফল দর-কষাকষি করেছে ইতিহাসে এ নজির খুব কম। একটি অসমন্বিত (সমন্বয় নেই এমন) সরকার তার সবচেয়ে বড় সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পেরেছেÑ এমন ইতিহাসও খুব নেই। এটি এমন এক সমন্বয়হীন সরকার, যার বিভিন্ন কাজের নেতৃত্বে কে আছেন, এটা বোঝা যায় না। এ ছাড়া এ ধরনের সরকারের রাজনৈতিক বৈধতা না থাকলে সেটিও বড় দুর্বলতার অংশ হয়। বর্তমানে যেহেতু সরকার দুর্বল, সেহেতু শুল্কের আলোচনায় দুর্বলতার ঘাটতি পূরণ করতে বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন ছিল। সেটি হয়নি।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!