জ্বালানির চাহিদা মেটাতে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই এক কার্গো এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৫১৭ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ টাকা।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো (২২-২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সময়ে ৪০তম) এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
জানা গেছে, পেট্রোবাংলা এই এক কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দর প্রস্তাব আহ্বান করলে তিনটি প্রতিষ্ঠানের দর প্রস্তাব জমা পড়ে। তিনটি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরের মেসার্স আরামকো ট্রেডিং সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমেটেড থেকে এই এলএনজি আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ২৮৯ মার্কিন ডলার। এতে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৫১৭ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ টাকা।
এদিকে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে তুরস্ক থেকে ২৫ হাজার টন পরিশোধিত চিনি আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতি কেজি চিনির দাম ধরা হয়েছে ১০৬ টাকা ৬৬ পয়সা। এতে ব্যয় হবে ১৭৫ কোটি ৯৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ২৫ হাজার টন পরিশোধিত চিনি কেনার প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
এ ছাড়া দেশের কৃষি খাতে ব্যবহারের জন্য সৌদি আরব থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই ৭০ হাজার টন সার কিনতে ব্যয় হবে ৫৪৮ কোটি ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার ২৫০ টাকা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও সৌদি আরবের মা আদেন-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৪০ হাজার টন ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বিএডিসি সৌদি আরব থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির মাধ্যমে ডিএপি সার আমদানি করে। এর আগে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় আগের চুক্তির শর্তগুলো অভিন্ন রেখে ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর আবার চুক্তি নবায়ন করা হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত দাম নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে এখন ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য অনুযায়ী, এই সার আনতে ব্যয় হবে ৩ কোটি ১২ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩৮৩ কোটি ৬২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। প্রতি টন ডিএপি সারের দাম ধরা হয়েছে ৭৮১ ডলার। বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশের কাছ থেকে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা কমিটি।
আপনার মতামত লিখুন :