ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ফেসবুক পেজ আবারও নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে হ্যাকাররা। শুক্রবার ভোরে এক দফা হ্যাকিংয়ের পর বিকেল ৪টার দিকে সেটি উদ্ধার করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ; এর সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর সেটি আবারও হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। এদিন রাত ৮টা ২৮ মিনিটে ফেসবুক পেজটির প্রোফাইল ও কভার ফটো পরিবর্তন করে হ্যাকররা। এক মিনিট পর ফেসবুক পেজটিতে তারা পোস্ট করে ‘পেজ হ্যাকড?’।
৮টা ৩২ মিনিটে আরেকটি পোস্ট করেÑ ‘হ্যালো ডিয়ার ইসলামী ব্যাংক সো-কল্ড এক্সপার্টস’। এরপর রাত ৯টা ২২ মিনিটে আরেকটি বড় পোস্ট করেছে তারা। দুই দফাতেই তারা নিজেদের পরিচয় দিয়েছে ‘এমএস ৪৭০ এক্স’ নামে।
ভোরে ফেসবুক পেজ হ্যাকিংয়ের পর ইসলামী ব্যাংকের ওয়েবসাইট ও পেজটিতে সাইবার আক্রমণ চালানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল হ্যাকাররা। দুপুরে পেজটিকে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে বিকেল ৪টার দিকে ফেসবুক পেজটি আবার স্বাভাবিক দেখায়, যা রাতে আবার হ্যাকড হয়েছে।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপ মুক্ত হয় ইসলামী ব্যাংক। গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণ থাকাকালে কোনো ধরনের পরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই ছাড়াই মৌখিক নির্দেশে হাজার দশেক ব্যক্তি নিয়োগ পান।
তাতে জনবল বেড়ে দাঁড়ায় ২২ হাজারে, যা ২০১৬ সালে ছিল সাড়ে ১৩ হাজার। মৌখিক নির্দেশে নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে ৫ হাজার ৩৮৫ জনকে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য গত ২৭ সেপ্টেম্বর ডাকা হয়। কিন্তু মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেয় মাত্র ৪১৪ জন। পরীক্ষায় অংশ না নেওয়াদের দায়িত্ব থেকে অবমুক্ত করে রেখেছে ইসলামী ব্যাংক।
জানতে চাইলে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান বলেন, যেহেতু তারা যেকোনোভাবেই ব্যাংকের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে গেছেন, আবার তারা পরীক্ষাও দেননি। তাই যোগ্যদের বেছে নেওয়ার জন্য অনৈতিকভাবে নিয়োগ পাওয়া সবাইকে পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে আসতে হবে।
‘ব্যাংক মানবিক দিক দিয়ে বিষয়টি দেখছে, যারা টিকবে তাদের নেওয়া হবে। বাকিদের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য আবারও সুযোগ দেওয়া হবে, প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
তিনি জানান, দায়িত্ব অবমুক্ত থাকাদের বিষয়ে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করবে ব্যবস্থাপনা বিভাগ। ভোরে ফেসবুক পেজ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর হ্যাকার গোষ্ঠী একটি বার্তা দিয়ে কিছু সময় পর তা সরিয়ে নিয়েছিল।
সেখানে লেখা হয়েছিল, বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের তৎপর কর্তৃপক্ষের অনৈতিক ও অন্যায় আচরণে এমএস ৪৭০এক্স তাদের পেজ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। হাজার হাজার কর্মীর ভবিষ্যৎ রক্ষা করা হবে। অবিলম্বে অন্যায় চাকুরিচ্যুতির ওপর পুনর্বিবেচনা ঘোষণা করা হোক।