ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ক্যাজুয়াল থেকে ক্লাসিক 

মির্জা হাসান মাহমুদ
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ০১:২৩ এএম

শরতের আকাশ যেমন রং বদলায়, তেমনি ফ্যাশন সচেতন মানুষের পোশাকেও বদল আসে। এখন আবহাওয়া এমন যে কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি। এমন সময়ে পরিপাটি থাকার জন্য তাই দরকার এমন পোশাক, যা একইসঙ্গে আরামদায়ক ও স্টাইলিশ। টি-শার্ট গরমের দিনে খুবই জনপ্রিয় হলেও যারা ক্যাজুয়াল আর ফরমাল লুকের মিশ্রণ চান, তাদের জন্য আদর্শ পোশাক হলো পোলো শার্ট। কলার দেওয়া এই বিশেষ টি-শার্ট তারুণদের প্রিয়, কারণ যেকোনো মৌসুমে এটি সমান মানানসই। একই সঙ্গে ক্যাজুয়াল আর ফরমাল লুক পাওয়া যায় বলে এই পোশাক এখন তরুণদের পোশাকের তালিকায় স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। বলা যায়, পরিপাটি লুক পেতে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পোলো শার্ট আজ সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পোশাকগুলোর একটি।

পোলো শার্টের ইতিহাস

উনিশ শতকের শেষভাগে ব্রিটিশ রাজপরিবারের মাধ্যমে পোলো শার্টের আবির্ভাব ঘটে। সে সময় পোলো খেলায় ব্যবহার করার জন্য এই পোশাকের জন্ম হয়। তবে পোলো খেলার জন্য বানানো হলেও তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে টেনিস ও গলফ খেলোয়াড়দের মধ্যে। খেলাধুলার বাইরেও পোলো শার্টের আরামদায়কতা ও স্টাইলিশ ডিজাইন মানুষের মন জয় করে নেয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি সাধারণ পোশাক থেকে পরিণত হয় ট্রেন্ডি ও বিলাসবহুল ফ্যাশন আইটেমে।

স্টাইল ও আরামের সমন্বয়

পোলো শার্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর বহুমুখী ব্যবহার। অফিসে, বন্ধুদের আড্ডায় কিংবা পার্টিতেও পোলো শার্ট মানিয়ে যায়। শুধু পরিবেশ অনুযায়ী রং ও ডিজাইন বেছে নিতে হয়, এই যা। যাদের অফিসে ফরমাল লুকের চাপ থাকে না, তারা হালকা রঙের পোলো শার্ট পরতে পারেন অনায়াসে। সাদা, হালকা আসমানি কিংবা কচুপাতা সবুজ রং অফিস লুককে পরিপাটি করে তোলে। অন্যদিকে আড্ডা বা উৎসবের মেজাজে উজ্জ্বল রং যেমন লাল, কমলা, হলুদ কিংবা কালো বেছে নেওয়া যেতে পারে।

রঙের ব্যবহার

শরতের আবহাওয়া যেমন অনিশ্চিত, তেমনি পোশাকেও থাকতে হয় সচেতনতা। খুব রোদ থাকলে গাঢ় রঙের পোলো শার্ট এড়িয়ে চলাই ভালো, কারণ এগুলো বেশি তাপ শোষণ করে। এর বদলে হালকা রঙের শার্ট আরামদায়ক অনুভূতি দেয়। আবার মেঘলা দিনে চাইলে একটু গাঢ় রংও পরা যেতে পারে। এভাবে আবহাওয়ার সঙ্গে রং মেলালে স্টাইলের পাশাপাশি স্বাচ্ছন্দ্যও পাওয়া যায়।

ট্রেন্ডে বৈচিত্র্য

আগে পোলো শার্ট মূলত একরঙা হতো। কিন্তু এখন ট্রেন্ড বদলেছে। বর্তমান সময়ে ফ্যাশন শুধু আর এক রঙে সীমাবদ্ধ নেই। কালার কনট্রাস্ট, স্ট্রাইপড ও চেক প্রিন্ট এখন বেশ জনপ্রিয়। পোলো শার্টেও এই বৈচিত্র্যের ছোঁয়া এসেছে। ফলে একঘেয়েমি ভাঙতে এবং আলাদা স্টাইল তৈরি করতে প্রিন্টেড বা চেক পোলো শার্ট চমৎকার বিকল্প। বর্তমানে বাজারে পোলো শার্টের অসংখ্য ডিজাইন পাওয়া যায়। যারা একটু লাক্সারি লুক চান, তাদের জন্য একরঙা পোলো শার্টও সব সময় প্রাসঙ্গিক। তরুণরা সাধারণত উজ্জ্বল রং বা প্রিন্টেড ডিজাইন পছন্দ করেন। অন্যদিকে যারা একটু পরিণত বয়সি, তারা সাধারণত একরঙা ও হালকা রং বেছে নেন। এ ছাড়া ডিজাইনের বৈচিত্র্যের কারণে একই পোশাককে বিভিন্ন পরিবেশে ব্যবহার করা যায়।

ফরমাল টাচ

পোলো শার্ট মূলত ক্যাজুয়াল পোশাক হলেও কলার থাকার কারণে এতে ফরমাল ছোঁয়া পাওয়া যায়। সাম্প্রতিক ট্রেন্ডে পোলো শার্টে পকেট যুক্ত হওয়ায় এটি আরও কিছুটা ফরমাল হয়ে উঠেছে। এ ধরনের পোলো শার্ট সহজেই অফিস মিটিং বা সেমি-ফরমাল অনুষ্ঠানে পরা যায়।

যে পোশাকের সঙ্গে মানায়

পোলো শার্টের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এটি বিভিন্ন ধরনের বটমসের সঙ্গে মানিয়ে যায়। জিনস ও চিনোসের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হলেও ট্রাউজারের সঙ্গেও দারুণ লুক পাওয়া যায়। চাইলে শার্ট টাক-ইন করে আরও পরিপাটি ধাঁচ আনা যায়। ফরমাল থেকে সেমি-ক্যাজুয়াল; সব লুকেই পোলো শার্ট মানিয়ে যায়।

জুতা বাছাই

লুক সম্পূর্ণ করতে জুতার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পোলো শার্টের সঙ্গে লোফার, কেডস, ¯িœকারস, কনভার্স; সবই মানায়। এমনকি চাইলে ফরমাল শুয়ের সঙ্গে পড়লেও পাওয়া যায় স্মার্ট লুক। মানানসই জুতা বেছে নেওয়ার মাধ্যমে পুরো সাজের সৌন্দর্য বেড়ে যায়।