সমাজ কিংবা রাষ্ট্রব্যবস্থার পদ্ধতিগত পরিবর্তনে মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস এবং এর সূত্র ধরে দায়িত্বশীলতার পরিচয় প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত করতে হয়। কারণ হঠাৎ জেগে ওঠা আবার হঠাৎ হারিয়ে গেলে সমাজের স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি বা দল বা মহল দুরভিসন্ধি নিয়ে সক্রিয় হয় এবং সবকিছু নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বাত্মক প্রয়াস প্রয়োগ করে। বাংলাদেশে সমাজব্যবস্থার প্রত্যাশিত পরিবর্তনে অঙ্গীকার ব্যক্ত করাই মূল অপরিহার্যতা নয়। বরং নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্বচ্ছ-পরিচ্ছন্ন ভাবধারায় অংশগ্রহণের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচ্য। এই বিবেচনা দীর্ঘ বঞ্চনা-অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বারংবার প্রকাশিত ও প্রমাণিত। কিন্তু জনগণের মধ্য থেকে এরূপ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন মানুষের সম্পৃক্তকরণ অনেকটাই কঠিন ও সমাজব্যবস্থায় বিভাজিত রাজনীতির প্রেক্ষাপটে প্রায় অসাধ্য। এই অসাধ্যতার খেসারত জাতিকে তথা সামগ্রিক জনগণের সমন্বিত উপায়ে ভাগ্য পরিবর্তন অর্থাৎ জীবনযাত্রার গুণগত পরিবর্তনে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
কিন্তু সময়ের প্রেক্ষাপট ও বঞ্চনার শেষাংশে মানুষের তীব্রতা ও একাগ্রতার শক্তি মানুষ তথা দেশকে স্বপ্ন দেখায়। এই স্বপ্ন সময়ের চাপে ও জনআকাক্সক্ষার প্রত্যাশায় অনেকদূর পর্যন্ত প্রসারিত হয়। তবে জনগণের সজাগ দৃষ্টির অভাব থাকলে অথবা নিজ নিজ রাজনৈতিক আদর্শের বা মতামতের ভিত্তিতে ঐক্যে ফাটল ধরালে সুবিধাভোগীরা নতুনরূপে নিয়ন্ত্রণের পরিবেশ ও বয়ান তৈরি করে। বাংলাদেশে অতীত আন্দোলন-সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে দৃশ্যমান যে, আন্দোলন হলো পরিবর্তনের প্রাথমিক দিক। পরবর্তী ধাপগুলো সম্মিলিতভাবে সকলের ভালোর জন্য
বাস্তবায়ন করতে না পারলে আন্দোলনের স্বার্থে ত্যাগ-তিতিক্ষা কোনো আদর্শিক তাৎপর্য বহন করে না।
উদাহরণস্বরূপ নব্বইয়ের রাজনৈতিক গণআন্দোলন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি অঙ্গীকার সৃষ্টি করলেও বাস্তবিক অর্থে রাজনীতি ও সমাজজীবনে এর যথার্থ বাস্তবায়ন হয়নি। একটি আন্দোলনে মানুষের জীবন-উৎসর্গ, ত্যাগ এবং একইসঙ্গে সম্মিলিত ঐক্যের ভিত্তিতে পরিবর্তনের জোয়ার সৃষ্টি হয়। এই ঐক্য একদিনে তৈরি হয় না। মানুষকে পরিবর্তনে শামিল করা, ঝুঁকি গ্রহণ ও প্রশমনের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ব্যাপক পরিসরে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে তৈরি হয়Ñ পরিবর্তনের চূড়ান্ত কর্ম-চিন্তা।
পরবর্তীতে অনৈক্য এবং নিজ স্বার্থের ভিত্তিতে বিভাজিত হলে সেই-ঐক্য পূরণ হয় না। নব্বইয়ের দাবি-দাওয়া যথাযথভাবে পূরণ হলে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হতো না। নানা সময় ও প্রেক্ষাপটে আন্দোলন হয়েছে কিন্তু দাবি-দাওয়ার ধরন ও প্রকরণ প্রায় একই রকম। এটি প্রমাণ করে যথাযথভাবে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো জনকল্যাণে নিয়োজিত থেকে নিরপেক্ষতার অবয়বে জন-চাহিদা পূরণ করে জনতুষ্টি অর্জনে উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারছে না। একটি আন্দোলনের উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট কর্ম-পরিসর ও কর্ম-পরিধি তৈরি করে গণতান্ত্রিক ভাবধারায় মানুষকে অংশগ্রহণের সুযোগ কওে দেয়। বাংলাদেশে সংগঠিত বড় আন্দোলনগুলো আন্দোলনের পরে কিছু মানুষের কাছে বন্দি হয়েছে, পকেটস্থ হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ কিংবা বঞ্চনার গল্প কারো কাছে মূল্য পায়নি। আন্দোলনে জীবনদান ও ত্যাগের প্রয়োজন হলে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান তৈরি হয়। এই রাজনীতি অগণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, যা আস্থাহীনতার সংকটে ফেলেছে দেশের রাজনীতি ও রাজনীতিতে জন-অংশগ্রহণ। ফলে রাজনীতি নিপতিত হয়েছে, নিমজ্জিত করেছে সাধারণ মানুষের জীবনসংগ্রাম। ফলশ্রুতিতে যে যার মতো করে রাষ্ট্রের পরিবর্তনের কথা বলে ক্ষমতায় থাকার দুরভিসন্ধি অঙ্কনের চিত্রকর হয়ে উঠেছে।
একটি রাষ্ট্রে সকলের অর্থাৎ বয়স, শ্রেণি, পেশা নির্বিশেষে সকল বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় জনগণকে রাজনীতি ও সমাজনীতির অন্তর্নিহিত বৈশিষ্ট্য অর্জন ও পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া থেকে বঞ্চিত করলে জন-বিস্ফোরণ তৈরি হয়। বৈষম্যের একটি শক্ত কিংবা পাকাপোক্ত অবস্থান তৈরি হয়। যে অবস্থা মানুষকে বিভাজিত করে, পরস্পর পরস্পরকে শত্রুতে পরিণত করে। এই শত্রুতে পরিণত হলে বুঝতে হবে আন্দোলন-সংগ্রাম হচ্ছে ‘চালাকি কায়দায়’। অন্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের চেয়ে অন্যায়-বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন কাক্সিক্ষত ফলাফল বয়ে আনে। সামগ্রিকভাবে নিজেকে পরিবর্তন তথা নিজেদের পরিবর্তনে আন্দোলন-সংগ্রামের কোনো তাৎপর্য বা আদর্শিক মূল্য তৈরি হয় না। এই আদর্শিক ও সম্মিলিত মূল্য তৈরি না হলে কোনো আন্দোলন-ই মানুষের জীবনচরিত্র পরিবর্তন করতে পারে না।
স্বাধীনতা-উত্তর স্বাধীন বাংলাদেশে চব্বিশের গণআন্দোলনের আগে নব্বইয়ের গণআন্দোলন ছিল সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক জাগরণ। এই জাগরণে দাবি আদায়ে পরিপূর্ণতা অর্জন করে রাজনৈতিক বন্দোবস্তের বিন্যাস ও অনুশীলন যথাযথভাবে সম্পূর্ণ হয়নি। নব্বই কিংবা চব্বিশ উভয় গণআন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে তরুণরাই অগ্রভাগে ছিল। এর সঙ্গে রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ আন্দোলনের বেগ ও গতি লক্ষ্যমুখী করেছে। রাজনৈতিক নিরীক্ষা ও ভাষ্যকে সামনে রেখে পর্যালোচনায় লক্ষ্য করা যায়, নব্বইয়ের তরুণ আর চব্বিশের তরুণ বয়সবন্ধনীতে এক হলেও বৈশিষ্ট্য ও নেতৃত্বের প্রশ্নে সম্পূর্ণ আলাদা ও স্বতন্ত্র। সময় ও প্রেক্ষাপট মানুষকে নিত্য-নতুন বৈশিষ্ট্য ধারণ এবং লক্ষ্য পূরণে উদ্বুদ্ধ করে, অনুপ্রাণিত করে, ঝুঁকি নিতে সাহস জোগায়।
সত্যিকার অর্থে, রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইতিবাচক ডামাডোল ও অনুকূল পরিস্থিতি নব্বইতে সৃষ্টি হলে মানুষের প্রত্যাশিত স্বপ্ন পূরণ এবং মানুষ নিজেদের ক্ষমতায়িত করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের রূপরেখা প্রণয়ন করতে পারত, কিন্তু তা পারেনি। ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে ‘তিন জোটের রূপরেখা’ সান্ত¡না হিসেবে মানুষের আলোচনায় আছে। পরিবর্তনের অতীত সুযোগ বারবার হাতছাড়া হয়েছে। সময়ের চাহিদা ও পরিবর্তনে মানুষের সাহসে নতুনত্ব এসেছে। তরুণরা নতুন উদ্যম নিয়ে, পরিবর্তনের লক্ষ্যে অন্যায়-বৈষম্যের বিরুদ্ধে জোরালোভাবে নিজেদের একত্রিত কওে নেতৃত্বের জায়গাতে আস্থা বা বিশ^াসের স্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল।
কিন্তু ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের আন্দোলন-সংগ্রামের ‘পরবর্তী অধ্যায়’ খুব বেশি শুভকর নয়। অতীতেও একই দৃশ্য লক্ষণীয়। আন্দোলনের পরে আন্দোলনের উদ্দেশ্য পূরণে নিজেদের মধ্যে বিভেদ, পরস্পর দোষারোপ, আন্দোলনের স্বীকৃতি বা কৃতিত্ব কার ঘরে যাবে, আন্দোলনকে রাজনৈতিক ক্ষমতায় রূপান্তরিত করা ইত্যাদি বিষয়গুলো সাধারণ মানুষকে নানাভাবে আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছে। ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে তর্ক-বিতর্ক সবসময়-ই স্বাগত। কিন্তু আন্দোলন-সংগ্রাম পরবর্তী ইতিহাস বাংলাদেশে জন-আকাক্সক্ষা কাক্সিক্ষতভাবে পূরণ না হওয়ার ইতিহাস। তবে একটি বিষয় অত্যন্ত কার্যকরভাবে দৃষ্টিগোচর যে, নব্বইয়ের তরুণরা সমাজ প্রচলিত কায়দায় কিছুটা গণতান্ত্রিক জোশ শরীর ও মননে এনে আন্দোলন-সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিল। কিন্তু চব্বিশের আন্দোলনে নেতৃত্বের অগ্রভাগে থাকা তরুণরা পরিবর্তিত সমাজ নিরীক্ষায় অর্জিত বৈশিষ্ট্যকে পরিপূর্ণভাবে আত্মস্থ করে চলমান ব্যবস্থা তথা শাসনতন্ত্রের ত্রুটিকে সামনে এনে কে কি মনে করবে বা করছে ধারণাকে ‘পাত্তা’ না দিয়ে জন-আকাক্সক্ষাকে স্বাগত জানিয়েছে। যাকে, যেভাবে সম্মান জানানো দরকার তাকে সেভাবেই স্বাগত বা সম্ভাষণ জানানো হয়েছে। আন্দোলনের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে চব্বিশ একেবারে নতুন উপজীব্য।
বাংলাদেশে চব্বিশের আন্দোলনে তরুণরা অর্থাৎ জেন-জি যেরূপে আবির্ভূত হয়েছে তা সবাইকে ভাবাচ্ছে। জেন-জি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে কিংবা প্রশ্ন করার মাধ্যমে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে এবং সে-স্বপ্নকে পূরণে লেগে থাকেÑ এটাই মূল বৈশিষ্ট্যরূপে বিবেচ্য। আন্দোলন-পরবর্তীতে ঐক্য ধরে রাখা কতটা সম্ভব হয়েছে সেটি নানাভাবে নানা ধরনের আলোচনার দাবি রাখে। কিন্তু পরিবর্তনের যে ঝুঁকি কিংবা দুঃসাহস তারা গ্রহণ করেছিল তা জেন-জির পক্ষেই সম্ভব।
বাংলাদেশে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিসরে মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রশ্নবোধ বিশেষ করে রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রয়োগযাত্রার উদাহরণ নেই। ইতিহাসগতভাবে বিভাজনের মধ্যে রাষ্ট্রের তেপান্ন বসন্ত পার হলেও সেখানে বিষাদের ঘনঘটা সবচেয়ে সক্রিয়। আন্দোলন-সংগ্রাম কিংবা পরিবর্তনের সূচনায় নিজেদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অপরিহার্য। এই শর্ত বা প্রয়োজনের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের যেকোনো রাজনৈতিক আন্দোলনের পরে সাধারণ মানুষের মধ্যে পরিবর্তনের যে স্বপ্ন তৈরি হয় তা দিনে দিনে অন্যের বসতিতে কিংবা দখলে চলে যায়। এক্ষেত্রে রাজনীতি একমাত্র কারণ তা নয়। ক্ষমতায়ন বা পরিবর্তিত রূপ গ্রহণে সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক ভাবনাও বিবেচনা করা প্রয়োজন। কারণ দায়িত্বশীল ভূমিকা জবাবদিহিতার পরিম-লে অনুশীলনের বা চর্চার অভ্যাস তৈরি না হলে অন্যকে দোষারোপ করে বেশিদিন বা বেশি বছর স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা অসম্ভব। সর্বোপরি সকলের মঙ্গলের জন্য গঠনমূলক বা উন্নয়ন উপযোগী পরিকল্পনায় নিজেদের নিয়োজিত করা যায় না। বৈশি^ক উন্নয়ন-অনুন্নয়ন ক্ষেত্রে উদাহরণ খুঁজতে গেলে ‘বাংলাদেশ’ একটি যুৎসই উদাহরণ হিসেবে গণ্য হবে।
তবে আন্দোলনের অন্তর্নিহিত বীরত্বগাথা এবং জেগে ওঠার মতো মানুষের অভাব না থাকায় এখানে আন্দোলন বারংবার হবে। কিন্তু এর সূত্র ধরে পরিবর্তন কতটুকু হবে তা অনিশ্চয়তার পরিম-লে আবৃত। বাংলাদেশের মানুষ একটা আশা নিয়ে আন্দোলনকে দেখে। এই দেখাতে দোষ নেই, বরং নিশ্চয়তা খোঁজে। বাংলাদেশে পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় আলাপ-আলোচনা কিংবা নীতি-পরিকল্পনার প্রণয়ন যথেষ্ট হয়েছে কিন্তু এই বিষয়গুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত সুযোগ তৈরি হয়েছে কম। যার ফল পুনরায় জেগে ওঠার স্বপ্ন দেখা কিংবা নিজেদের নির্জীব করে দূরে সরিয়ে রাখা।
একটি গণতান্ত্রিক উত্তরণ দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। মানুষ মনে করে গণতন্ত্র পরিশুদ্ধ হলে কিংবা সকলের জন্য প্রায়োগিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে অবস্থার পরিবর্তন হবে। সাধারণ একদিন অসাধারণ হবে, সাধারণ আর অসাধারণে বিভাজন থাকবে না। মানুষে মানুষে সম্প্রীতির বন্ধন অটুট বা মজবুত হবে। সেখানে সহযোগিতা, সহমর্মিতা প্রতিষ্ঠা পাবে। মানুষের মধ্যে অন্যায় বা বৈষম্যের বিভেদরেখা লোপ পাবে। গণতান্ত্রিক উত্তরণের এই বৈশিষ্ট্যগুলো এদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। সেই প্রত্যাশায় বারবার আশাহতের গল্প এত বেশি লিখিত হয়েছে যে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে কেউ কেউ ভয় পায়। সেই ভয় ব্যক্তিকে অথবা গোষ্ঠীকে নিয়তি মেনে নিতে বাধ্য করে। এরূপ অবস্থার মধ্য দিয়ে পরিবর্তনের জন্য নতুন দিনের সূর্যের উদয় অনেক দূরেই থাকে, থাকে অধরা।
রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় মানুষ যদি ‘পণ্য’ হিসেবে একবার বিবেচনা পায় তখন বারংবার ‘ব্যবহৃত’ হয়। বাংলাদেশে সামাজিক স্তরবিন্যাসের শ্রেণিকরণে ধনী-দরিদ্রের মধ্যকার বৈষম্য মানুষকে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অনুকূল অনুপ্রেরণার সুযোগ দেয়নি। মানুষকে ‘ব্যবহারে’র বক্তব্য আজ আর অজানা নয়। কে কিভাবে কাকে কাছে টানে, কার কাছে কে কি চায়- রাজনীতির এই ‘ভানুমতির খেল’ সবার-ই জানা। রাজনীতির কল্যাণময় উত্তাপ সমগ্র দেশে মানুষের হৃদয়ে, মানুষের ভাবনায়, মানুষের মনুষ্যত্বে সজাগ ও সক্রিয় বৈশিষ্ট্যে উজ্জীবিত হোকÑ এই প্রত্যাশার সম্মিলনে নেমে আসুক স্বপ্নের বন্যা কিংবা সহযোগিতার অভিনব উদাহরণ। নতুনত্বে বাঁচে মানুষ, পুরাতনে নব ছোঁয়া-জাগ্রতকরণের এই উদ্যম সকলকে স্পর্শ করুক। বিশে^ যারা এগিয়েছে তারা নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রেখে অগ্রসর হয়েছে। কাউকে বড় বা ছোট করে নয়, বরং ন্যায্যতার নিরীক্ষা-ই দৃষ্টান্তরূপে টিকে থাকে কালের ঘেরাটোপ পেরিয়ে জ¦লন্ত মহিমায়। এমন দেশ হোক আমার, আমাদের।
লেখক : শিক্ষাবিদ, কবি ও প্রাবন্ধিক

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন