বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শাওন সোলায়মান

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ১২:৫০ পিএম

নিষিদ্ধ হচ্ছে বেটিং সাইট 

শাওন সোলায়মান

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ১২:৫০ পিএম

নিষিদ্ধ হচ্ছে বেটিং সাইট 

ছবি: সংগৃহীত

চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫’। উপদেষ্টা পরিষদের পরবর্তী সভায় অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে। অধ্যাদেশে অনলাইন ও অফলাইনে জুয়া বিজ্ঞাপন এবং অনলাইন বেটিং সাইটের বিরুদ্ধে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

অনলাইন জুয়ার পাশাপাশি ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ই-কমার্সের নামে মাল্টিলেভেল মার্কেটিংয়ের (এমএলএম) মতো কার্যক্রমের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। অন্যদিকে জুয়া, ক্রিপ্টোকারেন্সির প্ল্যাটফর্মগুলো মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসসহ (এমএফএস) বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং পেমেন্ট গেটওয়ে, পিএসও এবং পিএসসি প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত থাকায় এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও সচেতন ও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। 

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পাস হওয়া ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ গত বছরের নভেম্বরে বাতিলের নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরপরই সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া প্রণয়ন করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব রূপালী বাংলাদেশকে জানান, অধ্যাদেশটি জারি করার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ। পৃথক আরেকটি সূত্রমতে, উপদেষ্টা পরিষদের পরবর্তী সভায় অধ্যাদেশটি অনুমোদন পেতে পারে। অধ্যাদেশটির খসড়া পর্যায় থেকেই জুয়ার বিষয়টি বেশ আলোচনায় ছিল।

বিশেষ করে দেশে জুয়ার প্রচারে অভিনেতা, অভিনেত্রী, মডেল, খেলোয়াড়, গায়ক-গায়িকা এবং সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মতো সেলিব্রেটিদের যুক্ত থাকা দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। তাই জুয়ার সাথে জড়িতদের পাশাপাশি বিভিন্ন মহল থেকে জুয়ার প্রচারকারীদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি ছিল।

এমন প্রেক্ষাপটেই খসড়া অধ্যাদেশের ২০ ধারায় অনলাইন জুয়া খেলাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে শাস্তির বিধান উল্লেখ করা হয়েছে। এই ধারার ১ উপধারায় জুয়া খেলা, খেলার জন্য অ্যাপস বা ডিভাইস তৈরি এবং খেলায় সহায়তা বা উৎসাহ প্রদান বা উৎসাহ প্রদানের জন্য বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ করাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

২ উপধারায় এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।

আইনটি প্রণয়নের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর মাধ্যমে যারা জুয়া খেলবেন তাদের পাশাপাশি জুয়ার প্ল্যাটফর্ম তৈরিকারী এবং এর প্রচারকারীরাও শাস্তির আওতায় আসবেন।

জুয়ার বিভিন্ন সাইট এবং সেগুলোর প্রচারের ধরন পর্যালোচনায় দেখা যায়, খেলা সম্পর্কিত তথ্য বা সংবাদ মাধ্যমের আড়ালে সেগুলোর বিজ্ঞাপন করা হয়। এমনকি নামের মধ্যে ‘বেট’-এর পরিবর্তে ‘(ক্রিকেট) ব্যাট’ শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে চতুরতার আশ্রয় নিয়ে জুয়ার সাইটের প্রমোশন করা হয়। জুয়ার সাইটের প্রচার করা ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে এই বিষয়টিকেও অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন।

তবে বাস্তবে দেখা যায়, ‘ব্যাট’ উল্লিখিত সাইটে গেলেও ব্যবহারকারীকে মূল জুয়ার সাইটেই নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টিকে ‘রি-ডিরেক্ট’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। প্রচারের এমন কৌশল নিয়ে জানতে চাইলে ফয়েজ তৈয়্যব রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘যারা এ রকম জুয়ার সাইট রি-ডিরেক্ট করে, সেই সোর্স সাইট থেকেই প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করা হবে।

পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি নির্দেশনা দেওয়া থাকবে যে, সাইবার স্পেসে জুয়া বা ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো কিছু তাদের নজরে আসলে বিধিবদ্ধভাবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিটিআরসির মাধ্যমে সেসব প্ল্যাটফর্ম বন্ধের অনুরোধ করবেন। অধ্যাদেশটা কার্যকর হলে যেহেতু তখন আমাদের কাছে একটি আইন থাকবে, সেই আইনের ৮ ধারায় তারা এটি করতে পারবেন। বিটিআরসি তখন সেই অনুরোধের ‘মেরিট’ যাচাই করে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। পুরোনো আইনটি আর ব্যবহার করতে চাই না। আগামীতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে নতুন এই আইনে।’

ফয়েজ তৈয়্যব আরও বলেন, সরকারের কাছে ইতোমধ্যে নাগরিক সমাজ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রচুর আবেদন এসেছে জুয়ার সাইট বন্ধ করার জন্য। যেহেতু নতুন মামলার ক্ষেত্রে পুরোনো আইন ব্যবহার করতে চাই না, তাই কিছুদিন অপেক্ষা করেছি। এই মুহূর্তে জুয়ার সাইটের তালিকা করছি। আইনটা পাস হওয়ার সাথে সাথেই জুয়ার সাইট বন্ধে উদ্যোগ নেব।

এদিকে জুয়া এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো অপরাধমূলক কার্যক্রমে আর্থিক লেনদেন এমএফএস’র মাধ্যমে হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের অপরাধের মামলা তদন্তসংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন সময় এর সত্যতা পেয়েছেন।

একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, অপরাধীরা জুয়ার অর্থ লেনদেনে সহজতম মাধ্যম হিসেবে এমএফএসকে বেছে নেয়। জুয়া প্রতিরোধে আইন প্রণয়নের পাশাপাশি তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সচেতন ও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকারের একটি পক্ষ। এমএফএসদের সতর্ক করে সম্প্রতি ফেসবুকে এক পোস্ট করেন ফয়েজ তৈয়্যব।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, এমএফএসসহ যেসব প্রতিষ্ঠান জুয়ার সাইটের সাথে একমুখী লেনদেনের প্যাটার্ন বের করার পরেও তৎপরতা দেখাচ্ছে না বা একমুখী লেনদেনের প্যাটার্ন বের করার চেষ্টা করছে না; তাদেরও কড়া বার্তা দিতে চাই। বার্তা হচ্ছে, শুধু একটা সাইট ব্যবহার করে অনলাইন জুয়া খেলা যায় না বরং ইকো-সিস্টেম ডেভেলপ করতে হয়। এই ইকো-সিস্টেমে যেসব ‘প্লেয়ার’ আছে, তাদেরও সতর্কতা জানিয়েছি।’

ফয়েজ তৈয়্যবের বক্তব্যের সূত্র ধরে দেশের সর্ববৃহৎ এমএফএস প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ’-এর কাছে জুয়ার সাইট এবং লেনদেনের সাথে এমএফএস প্ল্যাটফর্মের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিকাশের করপোরেট কমিউনিকেশনস এবং জনসংযোগ বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘যেসব অ্যাকাউন্টের লেনদেন সন্দেহজনক মনে হয়, তার প্রতিবেদন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) সরবরাহ করি। অনলাইন জুয়া, হুন্ডি, অর্থ পাচার, জঙ্গি অর্থায়ন সংশ্লিষ্ট সব অবৈধ লেনদেন প্রতিরোধে নিয়মিত তদারকি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ‘বিকাশ’-এর যথাযথ প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষিত কর্মী বাহিনী নিয়োজিত আছে।

পাশাপাশি অবৈধ লেনদেন প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগের অংশ হিসেবে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেকোনো তদন্তে প্রয়োজনীয় সব সহায়তাও দিয়ে থাকি। এমন সন্দেহজনক হিসাবের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিয়মিত ব্যবস্থা নিয়ে থাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!