শনিবার, ০৯ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ১১:৩৭ পিএম

শর্তের চাপে ঘোষিত সময়ে অনুষ্ঠিত না হওয়ার শঙ্কা!

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ১১:৩৭ পিএম

শর্তের চাপে ঘোষিত সময়ে অনুষ্ঠিত না হওয়ার শঙ্কা!

গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী সরকার পতনের পর সৃষ্ট নতুন প্রেক্ষাপটে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন সবচেয়ে আলোচিত ও কাক্সিক্ষত। এরই মধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজা শুরুর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

সেটি ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন আবারও চাঙা হলেও জামায়াত, এনসিপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল ভোটের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পিআর পদ্ধতি, সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমানসহ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে, যা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো অনড় থাকলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এমনকি জাতীয় নির্বাচন বিলম্বের চেষ্টা সফল হলে অন্য শক্তির হাতে যেতে পারে দেশ বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম ।  

নির্বাচন বিলম্বিত করার অপচেষ্টা করছে একটি রাজনৈতিক দল এমন অভিযোগ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল ভাবছে নির্বাচনে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে পারে। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী অবাস্তব কথার মাধ্যমে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। তারা নতুন নতুন থিউরি দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো সংগ্রামের পর কৃতিত্ব দাবির জন্য লোকের অভাব হয় না। একটি রাজনৈতিক দল অনেক দিন আমাদের মিত্র ছিল কিন্তু নির্বাচনের আগে তাদের কিছু কথা শুনে আমরা অবাক হয়েছি।’ তারা বলেছে, একাত্তরে জাতি নাকি পথভ্রষ্ট ছিল। একাত্তরে পুরো জাতি অংশ নিয়েছিল। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের ছিল না।

জামায়াতে ইসলামী ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও তাদের দাবি নির্বাচন হবে জুলাই সনদের ভিত্তিতে। জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রকে সংবিধানে আইনের ভিত্তি দিতে হবে এবং সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত কারার মাধ্যমে মাইলফলক করতে হবে। আগের ট্র্যাডিশনাল নির্বাচন দেশের জন্য উপযোগী নয়। রাতে ভোটকেন্দ্র দখল এগুলো আগের ঐতিহ্য। এ বিষয়ে দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস জুলাই ডিক্লারেশন ঘোষণা করেছেন। জাতি এই জুলাই ঘোষণাপত্রের অপেক্ষায় ছিল। তবে ঘোষণা এলেও জুলাই সনদ বাকি। এ ছাড়া যেসব ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্য তৈরি হবে, সেগুলোকে জুলাই চার্টার নামে আরেকটা দলিল তৈরি করা হোক। যাতে এর ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

রোজার আগের নির্বাচন ইস্যুতে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কার, বিচার ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা চাই। নির্বাচনের আগেই সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান করতে হবে, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে, নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। গণহত্যাকারীদের বিচার ও রাষ্ট্র কাঠামোর গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার নিয়ে এ সরকার যাত্রা শুরু হয়েছে। তাই নির্বাচনের আগে সংস্কারকে দৃশ্যমান করা ও সংস্কার বাস্তবায়ন করা এ সরকারের অবশ্য কর্তব্য। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, জুলাই বিপ্লবের এক বছরে কিছু অর্জনের সঙ্গে আছে ব্যর্থতাও। গণঅভ্যুত্থান শুধু ৩৬ দিনের নয়। এটি গত ১৭ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা থেকে মুক্তির আন্দোলনও। তবে বিভিন্ন সময় রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে নানা বিষয়ে অনিশ্চয়তা, সন্দেহ আর পুরোনো দোষারোপের খেলা। নির্বাচন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে রোজার আগে নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণের ফলে দেশের রাজনীতি এখন ভোটমুখী। নির্বাচনের সময় নির্ধারিত করে প্রাথমিক প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে কমিশন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ কমিশনের অধীনেই নির্বাচন হবে! অন্তর্বর্তী সরকারই থাকবে, নাকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে! এমন নানা প্রশ্ন আছে, তবে সেগুলোর উত্তর এখনো স্পষ্ট নয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আসন্ন নির্বাচন গণঅভ্যুত্থানের পর জন-আকাক্সিক্ষত বিষয়। নির্বাচনকে কেন্দ্রে করে অভ্যুত্থানে পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে পরিবেশ নিশ্চিত করা সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। দেশে নানা ইস্যুতে অনেক গ-গোল সৃষ্টির চেষ্টা হবে। পরাজিত শক্তি এবং একটি মহল দেশের শান্তিশৃঙ্খলা নষ্টের মাধ্যমে নির্বাচনকে বানচালের চেষ্টাও চালাবে।

এ ক্ষেত্রে সরকারকে শক্ত অবস্থানে থেকে মোকাবিলা করতে হবে একই সঙ্গে সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, এটা সত্য, দেশের মানুষ নির্বাচন চায় সুতরাং যদি কোনো দল বা গোষ্ঠী নির্বাচন না চায় বা পেছানোর চেষ্টা করে তবে জনগণ থেকে তারা বিচ্যুত হয়ে যাবে। যে দলগুলো সংস্কারের কথা বলছে, জুলাই সনদে তা স্পষ্ট হয়েছে যারা ক্ষমতায় আসবে তারা সেটি অব্যাহত রাখবে। আশা করা যায়, সব দল সেখানে মতামত জানিয়ে স্বাক্ষর করবে। 

তিনি বলেন, মতপার্থক্যের পরও দেশের স্বার্থে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে এবং তা থাকবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা কাক্সিক্ষত অবস্থানে নিতে, অর্থনীতি চাঙ্গা করতে একটি নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। সুতরাং দেশের স্বার্থে সব দল মতপার্থক্য থাকার পরও নির্বাচনি যে যাত্রা শুরু হয়েছে তাতে তারা অংশগ্রহণ করবে। জুলাই চেতনাকে ধারণ করেই দেশ এগিয়ে যাবে, জাতি সেটাই আশা করে।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তৎপর হওয়ার পরপরই আমরা দেখলাম গাজীপুরে এক সাংবাদিককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে, একই সঙ্গে আরও একটি কাটা লাশ পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক দল এবং সরকার যদি তৎপর না থাকে বিভিন্নভাবে এসব ঘটনা ঘটবে এবং তা ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর দোষ আসবে। যদি রাজনৈতিক দলগুলো সচেতন না হয় এবং জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হয় দেশ আবারও অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবে, এমনকি অন্য শক্তির হাতেও দেশ চলে যেতে পারে। সুতরাং যারা বিভিন্ন ইস্যুতে ভিন্নমত পোষণ করছে তাদের জনগণ ও দেশের কথা বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’ 

উল্লেখ্য, জাতীয় নির্বাচন ঘিরে কমিশনের অনেক কাজই এগিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। ভোটার তালিকা হয়েছে, সীমানা নির্ধারণের কাজ হয়েছে। এখন তাদের আরপিও ও আইনি সংস্কারের কাজ, যা রয়েছে সেগুলো দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন, যা শেষ করতে তাদের যথেষ্ট সময় আছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!