জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে দুইজন সিআইডি কর্মকর্তা, একজন বিচারক ও একজন চিকিৎসকসহ পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এদের মধ্যে দুজন সাক্ষী আদালতকে নিশ্চিত করেছেন, জুলাই আন্দোলনে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ফোনালাপের ফরেনসিক পরীক্ষায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের সত্যতা পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে গতকাল মঙ্গলবার জবানবন্দি দেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন, ডা. মোহাম্মদ সিরাজুস সালেহীন, সিআইডির শেখ নজরুল ইসলাম, শাহেদ জোবায়ের লরেন্স ও মো. রুকুনুজ্জামান। এ পর্যন্ত আদালতে মোট ৪৫ সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।
সাক্ষীর জবানবন্দিতে সিআইডির শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে আমি সিআইডি ঢাকা, ব্যালিস্টিক শাখায় বিশারদ হিসেবে কর্মরত আছি। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট থেকে গত ১০ মার্চ দুটি বুলেট ও তিনটি ধাতব পিলেট পরীক্ষার জন্য পাই। গত ১৯ মার্চ আমার মতামত সংবলিত প্রতিবেদন তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করি। আমি মতামত প্রস্তুত করেছিলাম গত ১৬ মার্চ। এই সেই মতামতের সত্যায়িত কপি, যা আমি তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করেছিলাম। মূল প্রতিবেদন আমার নিকট আছে।’
সাক্ষীর জবানবন্দিতে সিআইডির মো. রুকুনুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমানে আমি পুলিশ পরিদর্শক পদে সিআইডি ঢাকায় ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবে কর্মরত আছি। গত ১৫ জানুয়ারি এই মামলার বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট থেকে একটি ডিভিডি-আর ও একটি হার্ড ড্রাইভ আলামত হিসেবে গ্রহণ করি। ডিভিডি আর-এ একটি তর্কিত অডিও ফাইল রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ওই ডিভিডি আর-এ রক্ষিত একটি পুরুষ কণ্ঠস্বরের সঙ্গে হার্ড ড্রাইভে রক্ষিত শেখ ফজলে নূর তাপসের প্রামাণ্য কণ্ঠস্বরের মিল পাওয়া যায়। এই সেই মতামতের সত্যায়িত কপি, যা আমি তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করেছিলাম। মূল মতামত দাখিল করি নাই, কারণ তার প্রতিপাদ্য বিভিন্ন মামলায় দাখিল করা হবে। মূল প্রতিবেদন আমার নিকট আছে। গত ১৯ মার্চ একটি পেনড্রাইভ আলামত হিসেবে গ্রহণ করি। পেনড্রাইভটিতে দুটি ভিডিও রয়েছে। একটি তর্কিত কথোপকথন সংবলিত ভিডিও ফাইল। আরেকটি তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বক্তব্য সংবলিত একটি প্রামাণ্য ভিডিও ফাইল। ২৩ মার্চ পরীক্ষা করে ঐ দিনই রিপোর্ট প্রদান করি। রিপোর্টে তর্কিত কণ্ঠস্বরের সঙ্গে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের কণ্ঠস্বরের মিল আছে।’