বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলামের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তার নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শাহীনুল ইসলামের সঙ্গে সরকারের সম্পাদিত চুক্তিপত্রের অনুচ্ছেদ-৭ অনুযায়ী বিএফআইইউ প্রধানের পদে তার নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করা হলো। জনস্বার্থে এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারি করা এ প্রজ্ঞাপনে সই করেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব আফছানা বিলকিস। প্রজ্ঞাপনের অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিবসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়োগ বাতিলের মধ্য দিয়ে সম্প্রতি আলোচিত বিএফআইইউ প্রধানকে ঘিরে চলমান জটিলতার ইতি ঘটল।
এর আগে গত আগস্টে যোগাযোগমাধ্যমে শাহীনুল ইসলামের কয়েকটি আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে সমালোচনার পরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ গভর্নরের কাছে স্মারকলিপি দেন। এতে শাহীনুল রাষ্ট্রীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করেছেন বলে দাবি করা হয়। এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাইয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ কুতুবকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। কমিটির অন্য তিন সদস্য হলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের আইসিটি বিভাগের পরিচালক মতিউর রহমান এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। শাহীনুল ইসলামের ভিডিও কেলেঙ্কারির তদন্তে সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এতে বহিষ্কারের সুপারিশও করে তদন্ত কমিটি। গত রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন কমিটির সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের আন্দোলনের মুখে গত বছরের আগস্টে পদত্যাগে বাধ্য হন বিএফআইইউর তৎকালীন প্রধান মাসুদ বিশ্বাস। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিয়োগ পান শাহীনুল ইসলাম। গভর্নরের নেতৃত্বে গঠিত সার্চ কমিটি যে তিনজনের নাম সুপারিশ করেছিল, সেই তালিকায় শাহীনুলের নাম ছিল না। তারপরও এ পদে নিয়োগ পান তিনি।