বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ১১:২৪ পিএম

সেনা সদরের ব্রিফিং

নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীল অবস্থা আরও ভালো হবে

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ১১:২৪ পিএম

নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীল  অবস্থা আরও ভালো হবে

অন্তর্বর্তী সরকার যে রূপরেখা তৈরি করেছে, সে অনুযায়ী নির্বাচন হবে, তা সেনাবাহিনীও চাইছে। তারা মনে করছে, নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীল অবস্থা আরও ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, সদর দপ্তর আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। ওই সময়ে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, ‘দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও চায় সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সেই রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও দেওয়া আছে। আমরা আশা করি, নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি।’

মো. মাইনুর রহমান বলেন, ‘গত ১৫ মাস যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে সেনাবাহিনী; এটা সহজ পরিস্থিতি ছিল না। এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশ প্রতিদিন ফেস করেনি। এ জন্য আমরাও চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং আমরা সেনানিবাসে ফেরত আসতে পারি।’

নির্বাচনি কাজে সহায়তায় সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি তুলে ধরে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যেটুকু রূপরেখা প্রণয়ন করেছে, সেটার ওপর ভিত্তি করে সেনাবাহিনী যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আমাদের যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখন সীমিত আকারে চলছে, তার মধ্যে নির্বাচনের সময় আমাদের কী করণীয়, সেটাকে ফোকাসে রেখেই প্রশিক্ষণ করছি।’

১৫ মাস ধরে সেনাসদস্যদের একটি অংশ ব্যারাকের বাইরে থাকায় প্রশিক্ষণ বিঘিœত হচ্ছে জানিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর বলেন, ‘নির্বাচন পর্যন্ত বা তার কিছুটা পরেও যদি বাইরে থাকতে হয়, তাহলে আরও কিছুদিন বাইরে থাকতে হবে। এতে করে আমাদের প্রশিক্ষণ বিঘিœত হচ্ছে।’

বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে যাওয়া সেনাবাহিনীকে নিয়ে নানা অপপ্রচার চলছে দাবি করে মো. মাইনুর রহমান বলেন, ‘কিছু স্বার্থান্বেষী মহল মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে সেনাবাহিনী এখন আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ। যে দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে, সেটা সেনাবাহিনী পালন করবে।’

সেনা কর্মকর্তা মাইনুর রহমান বলেন, ‘৫ আগস্ট-পরবর্তী পরিস্থিতির দিকে একটু ফিরে তাকান। ১৫ বছর যে আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটানো যায়নি, সেনাবাহিনী এই সময়ের মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালীর বন্যা, বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে সড়ক অবরোধসহ...আমরা না থাকলে অবনতি কতটা হতো, সেটি কেউ ধারণাও করতে পারবেন না।’

অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তার চাকরিচ্যুতি নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা আসেনি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) অভিযুক্ত ১৫ জন সেনা কর্মকর্তার চাকরির অবস্থা সম্পর্কে সরকার এখনো স্পষ্ট করে নির্দেশনা জারি করেনি বলে জানিয়েছে সেনা সদর। সেনা সদরের এজি শাখার পারসোনাল সার্ভিসেস অধিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বিষয়টি আইনি ও প্রক্রিয়াগত কাঠামোর মধ্যে পড়ে।’

৬ অক্টোবর প্রকাশিত আইসিটি আইনের তৃতীয় সংশোধনীতে সরকারি চাকরিতে অযোগ্যতাসংক্রান্ত বিষয়টি এসেছে। এখানে কোনো আইনি জটিলতা নেই কিন্তু ব্যাখ্যার বিষয় আছে। কারণ, সংশোধনীটি নানা দিক থেকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং স্পষ্ট নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। যদি ‘ডিসকোয়ালিফিকেশন’ বা অযোগ্যতা, মানে চাকরিচ্যুতি হয়, তাহলে সেই চাকরিচ্যুতি কার্যকর করার প্রক্রিয়াটা সংশোধনীতে স্পষ্টভাবে বলা হয়নি। সেনা কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে পাবলিক অফিস বা সরকারি পদ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, সেটি আরও পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করা দরকার। আমরা আশা করি, বিষয়টি ন্যায়সংগতভাবে নিষ্পত্তি হবে এবং ইতিবাচক সমাধান পাওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে আইসিটি আইনে সেনা কর্মকর্তাদের বিচারসংক্রান্ত ব্যাখ্যা নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর বলেন, সেনা আইন, ১৯৫২ এবং আইসিটি আইন, ১৯৭৩ দুটোই বিশেষ আইন। এ দুটি বিশেষ আইন মুখোমুখি দাঁড়াবে না। মামলা আইসিটি আইনের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আছি। আমরা চাই বিচার প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন হোক।

এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, গুম ও হত্যার শিকার যারা হয়েছেন, তাদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে। একই সঙ্গে আমাদের কর্মকর্তাদের অধিকারের বিষয়েও আমরা সচেতন। আমরা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এগোব। যদি সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে, বিচার সেনা আইনের আওতায় হবে, আমরা তার জন্য প্রস্তুত।

৫০ শতাংশ সদস্য প্রত্যাহারের সরকারি নির্দেশনা পেয়েছে সেনাবাহিনী

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারা দেশে মোতায়েন থাকা সেনাবাহিনীর অর্ধেক সদস্যকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহারে সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দেওয়ান মোহাম্মদ মনজুর হোসেন বলেন, প্রত্যাহারের বিষয়ে আমরা চিঠি পেয়েছি এবং সে অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, বিশ্রাম ও নির্বাচনসংক্রান্ত প্রশিক্ষণের জন্য বুধবার থেকে এই সেনাসদস্যদের প্রত্যাহার করা হবে। প্রশিক্ষণ ও বিশ্রামের পর তারা ধাপে ধাপে পুনরায় মোতায়েন হবেন এবং বাকি সদস্যদের প্রতিস্থাপন করবেন।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৮১ শতাংশ খোয়া যাওয়া অস্ত্র ও ৭৩ শতাংশ গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। কিশোর গ্যাং, ডাকাত, চাঁদাবাজসহ ১৯ হাজারের বেশি সন্দেহভাজন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছি। সাম্প্রতিক অভিযানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বেশ কয়েকজন শীর্ষ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করি। গত দুই সপ্তাহে আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল টিম হাতে তৈরি শতাধিক বোমা নিষ্ক্রিয় করেছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!