বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ১১:৩৫ পিএম

মাসের শুরুতেই আগ্রাসী ডেঙ্গু

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ১১:৩৫ পিএম

মাসের শুরুতেই আগ্রাসী ডেঙ্গু

শীত আসার সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমবে, এমন আশায় বুক বেঁধেছিল সাধারণ মানুষ। কিন্তু ঘটেছে ঠিক উল্টো। বরং শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। শুধু চলতি নভেম্বর মাসের গত পাঁচ দিনে ডেঙ্গুরোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ১৩০ জন। সর্বশেষ গতকাল বুধবার ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে আর নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৯ জন। যা চলতি বছরের মধ্যে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। আবহাওয়া ও কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অক্টোবরের শেষদিকে ও নভেম্বরের শুরুতে কয়েক দিন ভারি বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গুর বিস্তার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে এবার শীতেও ডেঙ্গুর প্রভাব থাকবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের তথ্য মতে, গত এক দিনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় পাঁচজন, উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় তিনজন এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগে একজন করে মারা গেছেন। আর গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক হাজার ৬৯ জনের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১২৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৫১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৫২ জন, খুলনা বিভাগে ৬৮ জন (সিটি করপোরেশনের বাইরে), ময়মনসিংহ বিভাগে ৭০ জন (সিটি করপোরেশনের বাইরে), রাজশাহী বিভাগে ৩৪ জন (সিটি করপোরেশনের বাইরে), রংপুর বিভাগে ৪৩ জন (সিটি করপোরেশনের বাইরে) এবং সিলেট বিভাগে ৫ জন (সিটি করপোরেশনের বাইরে) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদিকে গত এক দিনে সারা দেশে ৯৫৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭১ হাজার ৪৮৭ জন।

তথ্য বলছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৭৫ হাজার ৯৯২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩০২ জনের।

এ বছর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় অক্টোবরে, ৮০ জন। এর আগে ৭৬ জনের মৃত্যু হয় সেপ্টেম্বর মাসে। এ ছাড়া আগস্টে ৩৯ জন, জুলাইয়ে ৪১ জন, জুনে ১৯ জন, মে মাসে তিনজন, এপ্রিলে সাতজন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন ও জানুয়ারিতে ১০ জনের মৃত্যু হয়। মার্চ মাসে কোনো মৃত্যুর তথ্য দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃষ্টি এডিস মশার প্রজননের প্রধান সহায়ক। কারণ পরিষ্কার পানিতে এরা ডিম পাড়ে এবং মাত্র ৫৭ দিনের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ মশায় রূপ নেয়। চলতি বছর এপ্রিল থেকে প্রতি মাসেই মোটামুটি বৃষ্টি হচ্ছে। জুনে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হলেও পরের মাসগুলোয় স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়। সর্বশেষ অক্টোবর ও চলতি নভেম্বর মাসেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়। এই বৃষ্টিপাতের কারণে ডেঙ্গুর প্রভাব সহসাই কমছে না বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন জানান, অক্টোবরের শেষ সময়ে এসে এই বৃষ্টি আমাদের ভোগাবে। নভেম্বরে ডেঙ্গুর বিস্তার কমার সম্ভাবনা কম। এখন শুধু শহর নয়, গ্রামে-গঞ্জে এডিস ছড়িয়ে পড়েছে। নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দৃশ্যমান কাজ দেখা যাচ্ছে না। ভীতির কারণ এটাও।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো প্রশাসনিক অদক্ষতা, অভিজ্ঞ ও দক্ষ কীটতত্ত্ববিদ নিয়োগ না করা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ধীরগতি। স্থানীয় সরকার, বিশেষ করে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোর মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ওয়ার্ড পর্যায়ে মশানিধন কর্মসূচি শুধু দেখানোর জন্য চলে। ফগার মেশিনের কার্যকারিতা সীমিত এবং অনেক সময় এটি ভুল জায়গায় বা ভুল সময়ে ব্যবহার করা হয়।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু দমন শুধু সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়, এটিকে একটি জনসম্পৃক্ত সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে। প্রতিটি পরিবারকে বুঝতে হবে যে, তাদের বাসাবাড়ির এক কোনায় জমে থাকা সামান্য পানি থেকেও ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটতে পারে। এ জন্য সিটি করপোরেশন, এনজিও, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণে নিয়মিত সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!