শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৬:০৬ এএম

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

নির্বাচনি ট্রেনের যাত্রা শুরু হচ্ছে

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৬:০৬ এএম

নির্বাচনি ট্রেনের যাত্রা শুরু হচ্ছে

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধিনে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে গণঅভ্যুত্থানে কোনো সরকারের পদত্যাগের নজির না থাকায় আসন্ন নির্বাচন ঐতিহাসিক মাত্রা পেতে যাচ্ছে। এ ছাড়া একই দিনে জাতীয় নির্বাচন এবং জুলাই সনদের গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ায় এই নির্বাচনকে বিশেষ বলে আখ্যায়িত করছেন বিশ্লেষকেরা। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তাই উৎসুক পুরো দেশের মানুষ। নির্বাচনের জন্য বহুল প্রত্যাশিত তপশিল আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের রেকর্ড করা তপশিল জাতির উদ্দেশে প্রচার করবে দেশের সব গণমাধ্যম। এর মাধ্যমে নির্বাচনি ট্রেনের যাত্রা শুরু হচ্ছে। তবে ইসি থেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে যে, ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ১০ ফেব্রুয়ারিও নির্বাচনের সম্ভাব্য দিন হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে নির্বাচন আয়োজনের জন্য দেশজুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র। দুটি ব্যালটে ভোটগ্রহণের সুবিধার্থে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা না বাড়লেও ভোটকক্ষ বা বুথের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজনে তা ২ লাখেরও বেশি হতে পারে। সব মিলিয়ে বিভিন্ন বাহিনীর ৮ লাখের বেশি সদস্য ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকতে পারেন। সার্বিকভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

গতকাল বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নির্বাচন কমিশনররা। রীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করে নির্বাচনের প্রস্তুতি জানিয়ে তপশিল ঘোষণা করে ইসি। সেই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর তাই আজ তপশিলের অপেক্ষায় পুরো দেশ।

গতকাল রাষ্ট্রপতির কার্যালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সিইসির নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, বেগম তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। সাক্ষাৎকালে নির্বাচন কমিশন আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনে কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনের সার্বিক প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব খান মো. নূরুল আমীন এবং রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

পরে ইসি সচিব আখতার আহমেদ নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট, ব্যালটের রং, ভোট গণনা পদ্ধতি এবং রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন সিইসি। এতে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ঘোষণা করা হবে তপশিল।’

এদিকে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ রূপালী বাংলাদেশকে জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টায় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হবে। এ লক্ষ্যে গতকাল (বুধবার) বিকাল ৪টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বেতারে তপশিল ঘোষণার রেকর্ড করেছেন সিইসি। ভাষণ রেকর্ডের পর সব কমিশনার সিইসির রুমে বৈঠক করেন।

বৈঠকের বিষয়ে আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘একসঙ্গেই সংসদ ও গণভোটের তপশিল ঘোষণা করা হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সিইসির রেকর্ড করা ভাষণ প্রচারের মাধ্যমে তপশিল ঘোষণা করা হবে।’ এ সময় আদালতের রায়ের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘আমরা এখনো আদালতের রায় হাতে পাইনি। আপাতত নির্বাচন কমিশনের গেজেটেড ৩০০ সংসদীয় আসনে তপশিল ঘোষণা করা হবে। আদালতের রায় পাওয়ার পর কমিশনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

এর আগে ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের তপশিল নিয়ে নির্দেশনা ও পরামর্শ নিতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে গতকাল দুপুরে নির্বাচন কমিশনকে সাক্ষাতের সময় দেওয়া হয়। 

ইসি সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে নির্বাচনি রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেছে কমিশন। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, কমিশনের ঘোষিত নির্বাচনি রোডম্যাপ অনুযায়ী প্রায় সব প্রস্তুতিমূলক কাজই সম্পন্ন করা হয়েছে। সংলাপ, আইনি সংস্কার, ভোটকেন্দ্র চূড়ান্তকরণ, ভোট কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধন শেষ হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। একই ভোটারের দুটি ব্যালটে ভোট দেওয়া নিশ্চিত করতে ইসির বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ভোটকক্ষের গোপন কক্ষ বৃদ্ধি এবং ভোটের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো নিয়েও চলছে আলোচনা।

সম্পন্ন হয়েছে মক ভোটিংও। ইসি বলছে, যেহেতু একই দিনে গণভোট আর জাতীয় সংসদের নির্বাচন, তাই সম্প্রতি দুই ভোট একসঙ্গে করার জন্য মক ভোটিংয়ের আয়োজন করেছিল ইসি। এতে ভোট পড়েছে ৭০ শতাংশের মতো। মক ভোটিংয়ে উঠে আসা পর্যবেক্ষণ বাস্তবায়নের দিকে যাচ্ছে সংস্থাটি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এ বিষয়ে বলেন, ‘দুই ভোট একসঙ্গে করার জন্য ভোটের সময় বাড়ানো হয়েছে। বাড়নো হয়েছে বুথও। অন্যান্য বছরের নির্বাচনি সময়ের পরিবর্তে চলতি বছর সকাল সাড়ে ৭টায় ভোট শুরু হবে এবং ৪টার পরিবর্তে সাড়ে ৪টায় শেষ হবে।’

চূড়ান্ত হয়েছে ভোটার তালিকাও। ইসির সর্বশেষ তথ্যমতে, এবার চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন যুক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১ হাজার ২৩৪ জন হিজড়া ভোটারও রয়েছেন। পুরুষ ভোটার দাঁড়িয়েছেন ৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭ জন। আর নারী ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪২ জন।

আলোচনায় রয়েছে পোস্টাল ব্যালটে ভোটও। এবারই প্রথম উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারকে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া তিন ক্যাটাগরির (আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তি, ভোটের দায়িত্বে থাকা ও সরকারি কর্মচারীরা) ব্যক্তিরা এই সুযোগ নিতে পারছেন। যার নিবন্ধন এরই মধ্যে ২ লাখের ওপরে ছাড়িয়েছে।

এদিকে, নির্বাচনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী, বিশেষ করে ব্যালট পেপার, নির্বাচনের আইন ও বিধিসংক্রান্ত নথিপত্র এবং অন্যান্য মুদ্রণসামগ্রীর চাহিদা নিরূপণ ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করেছে কমিশন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন নির্বাচনি সামগ্রী ছাপানো প্রায় শেষ। এখন কেবল ব্যালট পেপার ছাপানো বাকি রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গঠন করা হয়েছে একাধিক কমিটি। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইসি একাধিক কমিটি, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম তদারকি কমিটি, আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটি এবং নির্বাচনি আইন, বিধি ও ইনকোয়ারি কমিটির কার্যক্রম তদারকি কমিটি থাকছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!