শিশুদের মধ্যে হার্নিয়া একটি সাধারণ সমস্যা। এটি তখনই ঘটে যখন পেটের ভেতরের কোনে অংশ শরীরের অন্য কোনো অংশে একটি দুর্বল স্থান দিয়ে ঠেলে বের হয়ে আসে। সাধারণত, এটি একটি ফুলে ওঠা বা গোলাকার উঁচু হিসাবে দেখা যায়। জানাচ্ছেন এভারকেয়ার হাসপাতাল (চট্টগ্রাম) ডা. মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম।
হার্নিয়ার ধরন
শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের হার্নিয়া দেখা যায়, যার মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ হল: নাভির হার্নিয়া: এটি শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ধরনের হার্নিয়া। নাভির কাছে একটি ছোট ফুলে ওঠা হিসাবে দেখা যায়। ইনগুইনাল হার্নিয়া: এটি ছেলেদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। কুঁচকিতে ইনগুইনাল ক্যানাল নামক একটি নালী দিয়ে অন্ত্র বা অন্য কোনো অংশ বের হয়ে আসে। ফেমোরাল হার্নিয়া: এটি মেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। ফেমোরাল ক্যানাল নামক একটি নালী দিয়ে অন্ত্র বা অন্য কোনো অংশ বের হয়ে আসে।
হার্নিয়ার কারণ
হার্নিয়ার সঠিক কারণ সবসময় জানা যায় না। তবে, কিছু কারণ হিসেবে ধরা হয়:
জন্মগত দুর্বলতা: শিশুর জন্মের সময় পেশি বা টিস্যুতে কোনো দুর্বলতা থাকলে হার্নিয়া হতে পারে।
দীর্ঘদিন কাশি: দীর্ঘদিন কাশি হলে পেটের চাপ বাড়ে এবং হার্নিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
ভারী ওজন তোলা: বড় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ভারী ওজন তোলা হার্নিয়া হওয়ার কারণ হতে পারে।
হার্নিয়ার লক্ষণ
ফুলে ওঠা: নাভি বা নাভির আশপাশে, কুঁচকিতে জন্ম থেকে ফুলা অথবা হঠাৎ ফুলে ওঠা।
ব্যথা: শারীরিক কাজকর্ম বা কাশির সময় ব্যথা, বাচ্চা বেশি কান্না কাটি করা।
অস্বস্তি: ফুলে ওঠা অঞ্চলে অস্বস্তি বোধ হতে পারে।
হার্নিয়ার চিকিৎসা
হার্নিয়ার একমাত্র চিকিৎসা হলো অস্ত্রোপচার। অস্ত্রোপচারে ফুলে ওঠা অংশকে পেটের ভেতরে ফিরিয়ে নিয়ে দুর্বল স্থানকে শক্ত করে দেওয়া হয়।
কখন অস্ত্রোপচার করা উচিত?
- যদি হার্নিয়া বড় হয় এবং বাড়তে থাকে।
- যদি হার্নিয়া ব্যথা করে।
- যদি ফুলে ওঠা অংশ আটকে যায়।
অস্ত্রোপচারের ধরন
ওপেন সার্জারি: একটি ছোট চির কেটে অস্ত্রোপচার করা হয়।
ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি: কয়েকটি ছোট ছোট ছিদ্র করে এবং বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে অস্ত্রোপচার করা হয়।
অস্ত্রোপচারের পরের যত্ন
অস্ত্রোপচারের পর শিশুকে কিছুদিন বিশ্রাম নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন