গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের মরদেহ গতকাল সোমবার আদালতের নির্দেশে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। দুপুরে গোপালগঞ্জ পৌর এলাকার কবরস্থান থেকে দুজন এবং টুঙ্গিপাড়া থেকে একজনের লাশ উত্তোলন করা হয়।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর মো. সাজেদুর রহমান জানান, নিহতদের স্বজনরা গত রোববার আদালতে সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলনের আবেদন করেন। এরপর বিজ্ঞ আদালত ম্যাজিস্ট্রেটদের উপস্থিতিতে রমজান কাজী, ইমন তালুকদার ও সোহেল রানার লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন।
দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মুন্সি ও রন্টি পোদ্দারের উপস্থিতিতে রমজান কাজী ও ইমন তালুকদারের লাশ উত্তোলন করা হয়। একইভাবে ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ দস্তগীরের উপস্থিতিতে সোহেল রানার মরদেহ উত্তোলন করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
অপর দুই নিহতের মধ্যে দীপ্ত সাহার মরদেহ হিন্দু ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সৎকার করা হয়েছে এবং রমজান মুন্সীর ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে।
অন্যদিকে, গোপালগঞ্জে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। কারফিউ ও ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার হওয়ায় জনসমাগম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা শুরু হলেও গ্রেপ্তার আতঙ্কের কারণে অনেকেই বের হতে সাহস পাচ্ছেন না। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস ও আদালতও খোলা রয়েছে, যদিও জনগণের উপস্থিতি কম।
এদিকে, জেলা বিএনপি এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানায় যেন শান্তিপ্রিয় নিরীহ নাগরিকদের হয়রানির শিকার হতে না হয়। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব অ্যাড. কাজী আবুল খায়ের ও অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জে গত বুধবার এনসিপির পদযাত্রা ও পথসভায় আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে ৫ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারটি হত্যা মামলাসহ মোট আটটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় আট হাজার চার শতাধিক আসামি এবং তিন শতাধিক গ্রেপ্তার রয়েছে। তাদের মধ্যে দুই শতাধিককে অন্যান্য জেলার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :