ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫

জলোচ্ছ্বাস ও ভারি বৃষ্টিতে উপকূল প্লাবিত

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ০১:১৯ এএম

উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নি¤œচাপ ঘনীভূত হয়ে ভারতের স্থলভাগে উঠে এলেও এর প্রভাবে উত্তাল রয়েছে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল। সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি ঢুকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নি¤œচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি দুই থেকে তিন ফুট বেড়েছে।

এদিকে দেশের চার বিভাগে মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বৃষ্টির আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে সারা দেশেই বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল রোববার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানার দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

সাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এতে দ্রুত বাড়ছে নদ-নদীর পানি। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী তিন দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশ কয়েকটি নদীর পানি সতর্কসীমা অতিক্রম করতে পারে, ফলে নিম্নাঞ্চলগুলোতে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি ঢুকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি দুই থেকে তিন ফুট বেড়েছে।

গত দুই দিনে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের ১০টি পয়েন্টে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, কলাতলীসহ বেশ কয়েকটি পর্যটন স্পটে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ঢেউয়ের তোড়ে ভেঙে গেছে ট্যুরিস্ট পুলিশের অস্থায়ী স্থাপনা। ঢেউয়ের তোড়ে উপড়ে গেছে সৈকতের দৃষ্টিনন্দন প্রচুর ঝাউগাছ।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার উদয় রায়হান গণমাধ্যমে জানান, উপকূলীয় অঞ্চলে টানা বৃষ্টি ও সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে নদ-নদীগুলোর পানি ক্রমাগত বাড়ছে। এতে করে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলোতে নতুন করে বন্যা দেখা দিতে পারে।

তিনি বলেন, ‘টানা বৃষ্টি, নদীর পানি বৃদ্ধি এবং নিম্ন চাপজনিত জলোচ্ছ্বাসের কারণে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় সাময়িক বন্যা পরিস্থিতির শঙ্কা রয়েছে।’

নিম্নচাপটি বর্তমানে ভারতের ছত্তিশগড় ও তৎসংলগ্ন ঝাড়খ- অঞ্চলে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্য তৈরি হয়েছে এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। নি¤œচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় উপকূলীয় ও দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিও হতে পারে। তবে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কিছুটা কমে আসতে পারে।

বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি থাকবে। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা প্রায় ৯০ শতাংশ হওয়ায় অনুভূত তাপমাত্রা প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়ে ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি অনুভূত হতে পারে।

আবহাওয়ার পূর্বভাসে জানানো হয়েছে, আজ সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।