রাজধানীর বনানীর ৩৬০ ডিগ্রি সিসা লাউঞ্জে ইন্টারনেট ব্যবসায়ী রাহাত হোসেন রাব্বী হত্যার পেছনে রয়েছে আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্ব। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য জানিয়েছে র্যাব। গ্রেপ্তাররা হলেন- মাকসুদুর রহমান হামজা (২৬) ও মো. মুন্না (২৭)। গত শুক্রবার কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার গামরুয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, ইন্টারনেট ব্যবসায়ী রাব্বীর সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃতদের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। তারা এই সিসা লাউঞ্জে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই রাব্বীকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। গতকাল শনিবার দুপুরে উত্তরার র্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাহাত হোসেন রাব্বী ও তার বন্ধু নুরুল ইসলাম খোকন সিসা লাউঞ্জে যান। চতুর্থ তলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে দ্বিতীয় তলায় নামার সময় রাব্বীর পথ রোধ করে দাঁড়ান মুন্না ও হামজা। রাব্বী চিনতে পেরে বলেন, ‘মুন্না, তুই এ সময় এখানে কেন?’ এর পরই রাব্বীর সঙ্গে বাগবিত-ায় জড়ান মুন্না ও হামজা। একপর্যায়ে মুন্না পাঞ্জাবির পকেট থেকে চাকু বের করে রাব্বীকে উপর্যুপরি আঘাত করে পালিয়ে যান। আশপাশের লোকজন রাব্বীকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয় এবং আসামিদের ওপর নজরদারি অব্যাহত রাখা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মুন্না ও হামজাকে কুমিল্লা থেকে র্যাব-১১-এর সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের রাজিয়া সুলতানা রোড এলাকা থেকে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত একটি সুইচ গিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে।
এই হত্যার পেছনের কারণ প্রসঙ্গে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মুন্না ও হামজাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাব্বীর সঙ্গে তারা দীর্ঘদিন যাবৎ বনানী সিসা লাউঞ্জে আসা-যাওয়া করেন। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। গত ১৪ আগস্ট রাত আনুমানিক ১টার দিকে রাব্বী মুন্নাকে সিসা লাউঞ্জ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এ নিয়ে বাগবিত-ার সূত্রপাত। এরপর তারা রাব্বীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন। গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে বনানী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর বনানীর ১১ নম্বর সড়কের ১০০ নম্বর বাসার থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি সিসা লাউঞ্জে গত ১৪ আগস্ট ইন্টারনেট ব্যবসায়ী রাব্বীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন তার বাবা রবিউল আওয়াল বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন। এই হত্যাকা-ের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন