রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের পানির ট্যাংক থেকে তিন শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতরা হলেনÑ লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার আলাউদ্দিননগর গ্রামের রফিকুলের ছেলে ফরিদুল (৪০), একই উপজেলার ইসলামনগর গ্রামের মো. তবারক হোসেনের ছেলে রাব্বি (১৭) ও জমগ্রামের তৈয়বুর রহমানের ছেলে মো. লিটন (৩৫)।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ই-ব্লকের ১৪ নম্বর রোডের একটি নির্মাণাধীন ভবনে গতকাল শনিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের ধারণা, ট্যাংকের ভেতরে জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাস বা ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিটের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। তাদের কারো শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসানুজ্জামান বলেন, নির্মাণাধীন ওই ভবনে কয়েক দিন যাবৎ শ্রমিকেরা কাজ করছেন। বেলা ১১টার দিকে সেফটি ট্যাংকটির ভেতরে নেমেছিলেন একে একে তিন শ্রমিক, তারা আর উঠে আসতে পারেননি। পরে অন্য শ্রমিকেরা তাদের উদ্ধার করেন, সংবাদ পেয়ে ফায়ারসার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা দুটি বিষয়ে ধারণা করছিÑ এক. সেফটি ট্যাংকের বিষাক্ত গ্যাসে বা বৈদ্যুতিক তারে বিদ্যুৎস্পর্শে তাদের মৃত্যু হতে পারে।’ এ ছাড়া অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানান তিনি।
ভাটারা থানার ওসি মো. রাকিবুল হাসান বলেন, ‘আমরা ৯৯৯-এ কলের মাধ্যমে খবর পাই, নির্মাণাধীন ওই ভবনের নিচতলায় পানির রিজার্ভ ট্যাংকে কাজ করছিলেন চার শ্রমিক। এ সময় ট্যাংকের ভেতরে তিনজন মারা যান। এ ছাড়া অসুস্থ হন একজন। আমরা তিন শ্রমিকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়েছি। বিদ্যুৎস্পর্শে তাদের মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
নিহত রাব্বির খালাতো ভাই অলিভ বলেন, চার শ্রমিক বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বৈদ্যুতিক বাল্ব লাগিয়ে ট্যাংকের ভেতরে কাজ করছিলেন। হঠাৎ তারা চারজন অসুস্থ হয় পড়েন। একজন উঠে আসতে পারলেও তিনজন অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকেন। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই আত্মীয়। নিহতদের মধ্যে রাব্বি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানার তবারক হোসেনের ছেলে, ফরিদুল রফিকুল ইসলামের ছেলে এবং লিটনের বাবার নাম তৈয়বুর আলী।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন