রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ঢাকা কলেজের তিন শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাজপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। গত মঙ্গলবার উদ্ভাস কোচিং সেন্টারে ক্লাস করা দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আইডি কার্ড নিয়ে ঝামেলা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার এই সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এদিন বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। রাস্তায় অবস্থান নেওয়া দুই পক্ষই থেমে থেমে পরস্পরের দিকে ঢিল ছুড়তে থাকে। দুপুরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা সরে যায়। পরে সিটি কলেজ শিক্ষার্থীরা ফের জড়ো হয়ে ঢাকা কলেজের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়ায় তারা। এ ঘটনায় ওই সড়কে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হলে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। বিকেল প্রায় ৩টার দিকে ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দুই পক্ষের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের পর দুপুরে ঘটনাস্থলে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম বলেন, সংঘর্ষের পর পুলিশ দুপক্ষের মাঝখানে অবস্থান নেয়। এতে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ কলেজের সামনে চলে যায়। এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ছোটখাটো বিষয় থেকেও দুই কলেজের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। আমরা দুই কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলব। এবার আমরা মূল কারণ খুঁজে বের করতে চাই। শিক্ষার্থীদের কারণে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে।
ডিসি মাসুদ বলেন, তিন দিন আগে উদ্ভাস কোচিং সেন্টারে আইডি কার্ডকে কেন্দ্র করে দুই কলেজের শিক্ষার্থীর মধ্যে হাতাহাতি হয়, চড়-থাপ্পরের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে পরদিনও উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, যদিও তা পরে মীমাংসা হয়। আমরা ভেবেছিলাম বিষয়টি সেখানেই শেষ, কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) আবার নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে। সংঘর্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন এবং তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, সাঈদ হাসান জামিল (২১), তৌসিফ মাহিম (২১) ও মোহাম্মদ সাব্বির (২২)। তারা ঢাকা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। বিকেল ৩টায় ঢাকা মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান। ঢাকা মেডিকেলের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক বলেন, আহতরা ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাদের অবস্থা গুরুতর নয়।
হাসপাতালে নিয়ে আসা আহত জামিলের বন্ধু নাফিস হাসান বলেন, ঢাকা কলেজের পাশে নেইমার গলিতে চা খাচ্ছিলেন জামিল। সেখানে সিটি কলেজের কিছু শিক্ষার্থী তার উপরে অতর্কিত হামলা চালালে জামিল আহত হয়। এ ছাড়াও আমাদের ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের উপরে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের হামলায় আরও অনেকেই আহত হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনকে চিকিৎসার জন্য ঢামেকে আনা হয়। আহত তৌসিফ মাহিম বলেন, আমি সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় পুলিশ ধাওয়া করায় আমি আহত হই।
এর আগে গত ১৮ মার্চ দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তখন অন্তত ৫০ জন আহত হন। তার আগে ২০ ফেব্রুয়ারি এবং ১৯ জানুয়ারিও সংঘর্ষ হয় দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে।