মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মো. আরাফাত, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০৮:৫১ এএম

সৌন্দর্য-সম্ভাবনার পরও পিছিয়ে পারকি সৈকত

মো. আরাফাত, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০৮:৫১ এএম

পারকি সৈকত। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

পারকি সৈকত। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত পারকি। কর্ণফুলী টানেলের উদ্বোধনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহর থেকে এ সৈকতের দূরত্ব কমে এসেছে, যা পর্যটকদের জন্য এটি আরও সহজগম্য হয়েছে। তবে, পর্যটন সুবিধার অভাব, নিরাপত্তাহীনতা এবং অপরাধমূলক কর্মকা-ের কারণে পারকি এখন পর্যটকদের কাছে আকর্ষণ হারাচ্ছে।

পারকি সৈকতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যার পর পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। ট্যুরিস্ট পুলিশের কোনো স্থায়ী চৌকি নেই। ফলে চুরি, ছিনতাই, মাদক সেবন এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকা- বেড়ে গেছে। এখানে হাতের নাগালে পাওয়া যায় মাদক। সন্ধ্যা হলেই ভিড় জমে পতিতাদের, চলে রমরমা দেহব্যবসা। অভিযোগ আছে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ওসি মো. শরীফ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা সবসময় আমাদের টহল কার্যক্রম জোরদার রয়েছে। ওখানে একটি পুলিশ ফাঁড়িও রয়েছে যারা নিয়মিত পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করা যাচ্ছে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকা-ের সংবাদ পেলে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। আবাসন সুবিধা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবে পর্যটকরা সূর্যাস্তের আগেই সৈকত ত্যাগ করেন।

সৈকতে ঘুরতে আসা শারমিন আক্তার নামের এক পর্যটক বলেন, ‘সৈকতটা খুব সুন্দর। কিন্তু সন্ধ্যার আগেই চলে যেতে হয়। নিরাপত্তা নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। পরিবার নিয়ে আসা খুব ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়।’

এদিকে, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন পারকি সৈকতের উন্নয়নে ২০১৯ সালের শেষে সৈকতের তীরঘেঁষা ১৩ দশমিক ৩৩ একর জায়গায় ৭৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। এই প্রকল্পের আওতায় আবাসন সুবিধা, রেস্টহাউস, ওয়াচ টাওয়ার, সুইমিং জোন এবং অন্যান্য পর্যটন সুবিধা গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল। তবে, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও বাস্তবে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।

এ বিষয়ে পারকি সৈকত পর্যটন কমপ্লেক্সর প্রকল্প পরিচালক গোলাম মাহমুদ কবির বলেন, প্রকল্পের কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চাইলে ছয় মাসও লাগার কথা নয় কাজ হতে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করার মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নির্দেশনা দিয়ে গেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পর্যটন উপদেষ্টা।

অন্যদিকে সৈকত লাগোয়া ‘টানেল সার্ভিস এরিয়া’ বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। তবে, পারকি সৈকতের উন্নয়নে সরকারি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারি নজরদারি ছাড়া বেসরকারি উন্নয়ন দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিবেশবিদ ড. মাহবুব হাসান বলেন, ‘পর্যটন উন্নয়ন হওয়া জরুরি, তবে তা হতে হবে পরিবেশবান্ধব ও সুপরিকল্পিত। পারকির মতো প্রাকৃতিক অঞ্চল অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠলে পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে।’

স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করছেন, পারকিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন, অপরাধ দমন এবং পর্যটন সুবিধা উন্নয়নের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। পর্যটকরাও নিরাপত্তাহীনতা এবং অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে পারকিতে ভ্রমণে আগ্রহ হারাচ্ছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. কাউসার বলেন, ‘রাতের বেলা পর্যটক থাকেই না। কারেন্ট থাকে না অনেক সময়, পর্যাপ্ত আলো নেই, অপরাধীদের দৌরাত্ম্য আছে। নিরাপত্তা না থাকলে কেউ থাকবে না, ব্যবসাও হবে না।’

পারকি সমুদ্রসৈকতের নিরাপত্তা সংকট ও স্থবির উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পারকি সমুদ্রসৈকত কমিটির সভাপতি তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘পারকি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্পট। এখানে অপরাধ রোধে প্রশাসন নিয়মিত তদারকি করছে এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কর্ণফুলী থানা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কাজ করছি।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!