বিএনপির পাল্টাপাল্টি হামলা-সংঘর্ষের জেরে থমথমে সিলেটের বিশ্বনাথ। দুই পক্ষ এখনো মুখোমুখি। গত বৃহস্পতিবার বিএনপির পাল্টাপাল্টি হামলা-সংঘর্ষের পর এখন বিশ্বনাথ পৌর শহরে উত্তাপ চলছে। নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী তাহসিনা রুশদির লুনা এবং তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবিরের সমর্থকেরা অবস্থান করছেন মারমুখি হয়ে। যেকোনো সময় আবারও দুই পক্ষ জড়িয়ে পড়তে পারে সংঘর্ষে।
স্থানীয় একাধিক নেতা বলছেন, দলের হাইকমান্ডকে জরুরি ভিত্তিতে বিশ্বনাথের দিকে নজর দেওয়া দরকার। দলের হস্তক্ষেপ না হলে আবারও সংঘাত হতে পারে বিশ্বনাথে।
গত বৃহস্পতিবার সিলেটের বিশ্বনাথে নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবিরের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে হুমায়ূন কবির পক্ষের লোকজন দৌলতপুর ইউনিয়নে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। অন্যদিকে, তাহসিনা রুশদীর লুনার সমর্থকেরা দুপুর থেকেই পৌর শহরে মিছিল ও স্লোগান নিয়ে অবস্থান নেন। বিকেল ৪টার দিকে হুমায়ূন কবিরের গাড়িবহর বাসিয়া সেতু অতিক্রম করার সময় লুনার সমর্থকদের স্লোগানকে কেন্দ্র করে বাগি¦ত-া সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে রাত ৮টার দিকে হুমায়ূন কবিরের গাড়িবহর থানার গেট এলাকা অতিক্রম করার সময় পুনরায় স্লোগান শুরু হলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়।
লুনা বলয়ের বিএনপি নেতা, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়া রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য নষ্ট করার উদ্দেশ্যে কিছু মহল পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। তারাই বৃহস্পতিবার রাতে সাধারণ জনতার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
অন্যদিকে হুমায়ুনপন্থি নেতা, বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সুহেল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই নেতা (হুমায়ুন-লুনা) দুজনই দলের পরীক্ষিত নেতা। তবে দলীয় ইঙ্গিত হুমায়ুন কবিরের দিকেই যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আমরা দৌলতপুর ইউনিয়নে হুমায়ুনকে নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নিই। কিন্তু লুনার অনুসারীরা সেই কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টির জন্য বিকল্প কর্মসূচি দিয়ে আমাদের নেতার গাড়িবহর বিভিন্ন স্থানে আটকে দেয়। আমরা তখনো কোনো প্রতিবাদ করিনি। পরে রাতে দৌলতপুরের সভা শেষে ফেরার পথে তাদের অনুসারীরা গুন্ডাপান্ডা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এটি কোনো সুস্থ রাজনীতি নয়। দলের ভেতরে এভাবে কারো বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া সুষ্ঠু রাজনীতির পরিপন্থি।
ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী সতর্ক রয়েছে। দুই পক্ষকেই শান্ত থাকতে বলা হয়েছে।