শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৫, ১২:৩৪ এএম

ব্যবহার নিষেধ থাকলেও রাজশাহীর রেললাইনের  পাথরে ইটের খোয়া!

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৫, ১২:৩৪ এএম

ব্যবহার নিষেধ থাকলেও রাজশাহীর রেললাইনের  পাথরে ইটের খোয়া!

রেললাইনে শুধু পরিষ্কার ও মানসম্মত পাথর ব্যবহার হয়। ইটের খোয়া ব্যবহার নিষেধ। কিন্তু রাজশাহী থেকে আব্দুলপুর পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার লাইনে ফলা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯০ ঘনমিটার বা ৪০ হাজার সিএফটি পাথর। এসব পাথরের মাঝে ভেসে উঠছে লাল খোয়া। যা রেললাইনের নিরাপত্তাঝুঁকিতে জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। অসাধু চক্রের কারসাজিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রেললাইনে ইট ব্যবহার সম্পূর্ণ অনিয়ম। কারণ ইট ক্ষয়যোগ্য। কিন্তু পাথর ক্ষয়যোগ্য নয়। এতে ঝাঁকুনির মাত্রা বেড়ে যায় এবং অনেকে আতঙ্কিত হন। এই দুর্নীতি ঠেকাতে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। 

তবে পশ্চিমাঞ্চলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, সিরাজগঞ্জের যমুনা সেতুর ওপর নতুন রেললাইন স্থাপন করায় সেখানে কিছু স্থাপনা ভাঙা হয়েছে। এই পাথরগুলো সেখান থেকে এই লাইনে শিফট করা হয়েছে। যার কারণে স্থাপনার ভাঙা ইট, অপরিষ্কার আর্বজনা ও পাথরের সাথে কাদামাটি মিশ্রিত হয়েছে। ফলে সেখানকার কিছু ইটের খোয়া পাথরের সাথে মিশ্রিত হতে পারে। কোনো টেন্ডারের মাধ্যমে এই পাথর ক্রয় করা হয়নি।  

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগ টেন্ডার ও ঠিকাদার নিয়োগ ছাড়াই রাজশাহীর রেললাইনে পাথর ফেলেছেÑ এমন অভিযোগ উঠেছে। অসাধু চক্রের কারসাজিতে পাথরের সঙ্গে ইটের খোয়া০ মেশানো হয়েছে। ফলে রেললাইনে খোয়া দেখা যাচ্ছে। এতে রেল চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

রেলওয়ে সদর দপ্তর দাবি করেছে, তারা এ বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানত না। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, রেললাইনে শুধু পাথর দেওয়া হয়। ইটের খোয়া দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে রেলপথের বিভিন্ন স্থানে এসব পাথর ফেলা হয়। স্থানীয়রা জানান, নতুন পাথরগুলোর সঙ্গে ছিল মাটি ও ধুলো। বৃষ্টির পর পাথরের মাঝে ইটের লাল খোয়া স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রাজশাহীর নতুন বুধপাড়া থেকে হাজরাপুকুর পর্যন্ত রেললাইনের বিভিন্ন স্থান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে পুরো পথজুড়ে নয়, যেসব জায়গায় পাথরের ঘাটতি ছিল, শুধু সেসব স্থানে নতুন পাথর দেওয়া হয়েছে।

রেললাইনসংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে আমরা রেললাইনের পাশে বসবাস করে আসছি। অনেক আগে রেললাইনে ইটের খোয়া দেওয়া ছিল। কমপক্ষে ২০ বছর আগে সেগুলো তুলে নতুন করে পাথর দেওয়া হয়েছে। সেইবার কাঠের স্লিপার পরিবর্তন করা হয়। এরপর দেওয়া হয় লোহার স্লিপার। সেই থেকে ইটের খোয়া তুলে দেওয়া হয়। আর কখনো ইটের খোয়া দেওয়া হয়নি রেললাইনে। কিছুদিন আগে পাথর ফেলে গেছে। সেই পাথরের সঙ্গে ইটের খোয়া রয়েছে। এ ছাড়া মাটিযুক্ত পাথর দেওয়া হয়েছে। পাথর ফেলার পরের দিন বৃষ্টির পানিতে ধুলা-মাটি ধুয়ে গেছে। এর পর থেকে ইটের খোয়াগুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। অসাধু চক্রের কারসাজিতে এমনটি ঘটেছে বলে জানান স্থানীয়রা। বর্তমানে রাজশাহী লাইনে ট্রেনের সংখ্যা ও গতি দুটোই বেড়েছে। রেলপথ মেরামতে আরও মনোযোগ দেওয়া উচিত। এ ধরনের কর্মকা-ে রেললাইনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। 

রেলওয়ের একাধিক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রেললাইনে শুধু পরিষ্কার ও মানসম্মত পাথর ব্যবহার হয়। ইটের খোয়া ব্যবহার নিষেধ। আমরা ছোট কর্মচারী, তাই ঊর্ধ্বতনদের কিছু বলতে পারি না। তবে তারা রেললাইন পরিদর্শনে গেলে নিশ্চয়ই বিষয়টি দেখেছেন। রেলপথে ব্যবহৃত পাথরকে ব্যালাস্ট বলা হয়। স্লিপার ও রেললাইন স্থির রাখতে এবং ট্রেনের ভার সহনীয় করার জন্য এসব পাথর ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি, ব্যালাস্ট পাথর গাছ-গাছালি গজাতে বাধা দেয় এবং বৃষ্টির পানি রোধ করে নিচের মাটি নরম হওয়া থেকে রক্ষা করে।

রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর হরিয়ান স্টেশন থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন পর্যন্ত পাথর ফেলা হয়। সেই সময় ওয়েম্যানরাও উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের নির্দেশনায় পাথর দেওয়া হয়। পাথরের মধ্যে ছিল লাল রঙের ইটের খোয়া, যা দূর থেকে স্পষ্ট দেখা যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) ফরিদ আহমেদ দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, রেললাইনের পাথরের সাথে খোয়া মিশ্রিত করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, সম্প্রতি যমুনা সেতুর ওপর ডাবল রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে নির্মাণকাজের জন্য কিছু স্থাপনা ভাঙা হয়েছে। এই পাথরগুলো সেখান থেকে এনে রাজশাহী-আব্দুলপুর পর্যন্ত লাইনে ফেলা হয়েছে। ভাঙা বিল্ডিংয়ের খোয়া ও কাদামাটি এই পাথরগুলোর সাথে মিশ্রিত হতে পারে। তবে কোনো ট্রেন্ডারের মাধ্যমে পাথর ক্রয় করা হয়নি। সুতরাং এখানে কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই। তারপরও যদি কোথাও দায়িত্বে অবহেলা হয়ে থাকে আমরা বিষয়টি তদন্ত করব। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!