ঢাকার কলাবাগানের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে গিয়ে নারী চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকাকে হত্যার দায়ে স্বামী রেজাউল করিম রেজার মৃত্যুদ- দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. সাব্বির ফয়েজ এ রায় দেন।
সাজার পাশাপাশি রেজাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদ- দিয়েছেন আদালত। তবে তিন বছর আগের এই মামলায় আসামি হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন জানিয়েছেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকার সঙ্গে পরিচয় হয় রেজার। এরপর প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তারা। ২০২০ সালের অক্টোবরে বিয়ে করেন তারা। পরিবারের অগোচরে বিয়ে হওয়ায় তারা স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অবস্থান করতেন।
২০২২ সালের ১২ অগাস্ট ঘটা করে জান্নাতুল নাঈমের জন্মদিন পালনের কথা বলে ১০ অগাস্ট পান্থপথের একটি আবাসিক হোটেলে তাকে নিয়ে যান রেজা। সেখানে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কথাকাটাকাটি, বাগবিত-া ও ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে জান্নাতুলের গলা কেটে হত্যা করেন রেজা। এরপর হোটেল রুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে চট্টগ্রামে যান রেজাউল।
এ ঘটনায় জান্নাতুলের বাবা শফিকুল আলম বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার ইন্সপেক্টর আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির রেজাকে অভিযুক্ত করে ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২৪ সালের ৭ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলার বিচার চলাকালে ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গত ৯ নভেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়। মগবাজারের কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে গাইনি বিষয়ে একটি কোর্স করছিলেন জান্নাত। আর রেজা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করছিলেন।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন