বরিশালের গৌরনদী উপজেলার তিনটি এলাকা থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে দুজন হত্যাকা-ের শিকার, অপরজন আত্মহত্যা করেছেই বলে জানিয়েছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।
নিহতরা হলেন উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম জাহাঙ্গীর হোসেন মাস্টারের ছেলে ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য আমিনুল ইসলাম (৪২), নলচিড়া ইউনিয়নের চর রমজানপুর গ্রামের মৃত সুধাংশ মন্ডলের স্ত্রী সবিতা মন্ডল (৫৫) ও নলচিড়া ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের আক্কাস হাওলাদারের স্ত্রী ইভা বেগম (২১)।
নিহত যুবলীগ নেতা আমিনুলের বোনজামাই মিন্টু সরদার বলেন, শনিবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে হাত-মুখ ধোয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন আমিনুল। এরপর আর তিনি বাসায় ফেরেননি। গতকাল রোববার সকালে নিহতের বাড়ির সামনের পুকুর থেকে আমিনুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমিনুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তার স্বজনেরা অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নিহত সবিতা মন্ডলের স্বজনেরা অভিযোগ করে বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে বাসায় একা ঘুমিয়ে ছিলেন সবিতা। রোববার বেলা সাড়ে ১০টার দিকেও তিনি ঘুম থেকে না ওঠায় বাড়ির লোকজন তাকে ডাকতে গিয়ে দেখেন ঘরের দরজা খোলা এবং আসবাবপত্র এলোমেলো। পরে বিছানায় সবিতা মন্ডলের লাশ দেখে থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। নিহতের স্বজনদের ধারণা, আগে থেকে সংঘবদ্ধ চোরচক্রের সদস্যরা ঘরের মধ্যে লুকিয়ে ছিল। রাতে সুযোগ বুঝে ঘরের মালামাল লুট করার সময় সবিতা বাধা দেওয়ায় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। সবিতা মন্ডলের একমাত্র ছেলে সুকুমার মন্ডল ১০ দিন আগে গ্রিস থেকে ছুটিতে বাড়িতে এসেছেন। তিন দিন আগে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি (সুকুমার) বোনের বাড়ি স্বরূপকাঠির কুড়িয়ানায় বেড়াতে গিয়েছিলেন।
অপরদিকে নলচিড়া ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের আক্কাস হাওলাদারের চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ইভা বেগম শনিবার বিকেলে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে ফিরেই সবার অজান্তে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন নিহতের স্বামী আক্কাস। নিহত ইভা মুলাদী উপজেলার কাঁচির চর গ্রামের আনোয়ার আকনের মেয়ে। পাঁচ মাস আগে আক্কাসের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। রাতে গৌরনদী উপজেলা হাসপাতাল থেকে ইভা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতের স্বামী নলচিড়া বাজারের মুদি ব্যবসায়ী আক্কাস হাওলাদার বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, ইভা বেগমের সঙ্গে অন্য এক ছেলের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমিকের সঙ্গে অভিমান করেই ইভা আত্মহত্যা করেছে।’
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনটি মরদেহই উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল দুপুরে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ঘটনার গভীর তদন্ত চলছে।
