শেখ হাসিনা ও দণ্ডিতদের বক্তব্য ও বিবৃতি প্রচার করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার। প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে এ-সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (এনসিএসএ) অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে যে, দেশের বেশ কিছু ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম পলাতক ও দ-প্রাপ্ত আসামিদের মিথ্যা বক্তব্য প্রচার করছে, যা বিগত সপ্তাহে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা ক্ষুণœ করার কারণ ঘটিয়েছে এবং ঘটাচ্ছে।
এতে বলা হয়, ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমগুলো ঘৃণামূলক বা জাতিগত বিদ্বেষমূলক এমন বক্তব্য প্রচার করছে, যা সহিংসতা তৈরি করছে, জনমনে সহিংসতার উদ্বেগ সৃষ্টি করছে এবং ব্যাপক পরিসরে বিশৃঙ্খলা বা অপরাধমূলক কর্মকা- ছড়িয়ে দিচ্ছে বলেই প্রতীয়মান।
উল্লেখ্য যে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ১৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে। ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত। দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে।
এমতাবস্থায় বাংলাদেশের আদালতে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ও বিবৃতি প্রচার দেশের সার্বিক সামাজিক স্থিতিশীলতা (সোশ্যাল হারমনি) নষ্ট করার কারণ ঘটাচ্ছে। পাশাপাশি এসব বক্তব্যে (কল ফর ভায়োলেন্স) সরাসরি সহিংসতা তৈরির উদ্বেগ সৃষ্টি করছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা, অগ্নিসন্ত্রাসসহ অপরাধমূলক কর্মকা-ের নির্দেশনা আছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আইনের অপরাধ ও দ-বিষয়ক ধারামতে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে বা ছদ্ম পরিচয়ে নিজের বা অন্যের আইডিতে অবৈধ প্রবেশ করে এমন কোনো কিছু সাইবার স্পেসে প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান, যা হেইট স্পিচ এবং যা সহিংসতা তৈরি বা উদ্বেগ সৃষ্টি করে বা বিশৃঙ্খলা বা অপরাধমূলক কর্মকা-ের নির্দেশনা করে, তাহলে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
আরও বলা হয়, এতদ্বারা জানানো যাচ্ছে যে, এর প্রেক্ষিতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উক্ত বক্তব্য, এসব বক্তব্য প্রচারকারী মিডিয়া আউটলেটের তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করার জন্য বা ক্ষেত্রমতো স্থানান্তরের জন্য জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সির মহাপরিচালকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিটিআরসিকে অনুরোধ করার উদ্যোগ নিতে পারবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলকে সতর্ক করা হচ্ছে।
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর সংশ্লিষ্ট ধারাসমূহÑ অধ্যাদেশের অতিরাষ্ট্রিক প্রয়োগ : ৪। (১) যদি বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বাংলাদেশের বাহিরে এই অধ্যাদেশের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, যাহা বাংলাদেশে সংঘটন করিলে এই অধ্যাদেশের অধীন দ-যোগ্য হইত, তাহা হইলে এই অধ্যাদেশের বিধানাবলি এই রূপে প্রযোজ্য হইবে, যেন উক্ত অপরাধ তিনি বাংলাদেশেই সংঘটন করিয়াছেন।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাদি : ৮(২) যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ সাপেক্ষে বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য দেশের অখ-তা, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জনশৃঙ্খলা ক্ষুণœ করে, ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক ঘৃণামূলক বা জাতিগত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, যাহা সহিংসতা তৈরির উদ্বেগ সৃষ্টি করে বা বিশৃঙ্খলা বা অপরাধমূলক কর্মকা-ের নির্দেশনা প্রদান করে, তাহা হইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উক্ত তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করিবার জন্য বা ক্ষেত্রমতো স্থানান্তরের জন্য মহাপরিচালকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিটিআরসিকে অনুরোধ করিতে পারিবে। অপরাধ ও দ- (সাইবার স্পেসে বিদ্বেষমূলক তথ্য প্রকাশ ইত্যাদির অপরাধ ও দ- রয়েছে) ২৬ (১) যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে বা ছদ্ম পরিচয়ে নিজের বা অন্যের আইডিতে অবৈধ প্রবেশ করিয়া এমন কোনো কিছু সাইবার স্পেসে প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান, যাহা ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক ঘৃণামূলক বা জাতিগত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এবং যাহা সহিংসতা তৈরি বা উদ্বেগ সৃষ্টি করে বা বিশৃঙ্খলা বা অপরাধমূলক কর্মকা-ের নির্দেশনা করে, তাহা হইলে অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ। (২) যদি কোনো ব্যক্তি উপধারা (১)-এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদ-ে বা অনধিক ১০ (দশ) লাখ টাকা অর্থদ-ে বা উভয় দ-ে দ-িত হইবেন।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন