বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের শেষাংশ অনেকটা রোমাঞ্চকর এবং রহস্যে ভরা। তিনি ১৯৫১ সালে রবীন্দ্র পুরস্কার (মরণোত্তর) লাভ করেন। ১৯১৯ সালে হুগলি জেলার জাঙ্গীপাড়ায় দ্বারকানাথ হাইস্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ানোর সময় বসিরহাটের মোক্তার কালীভূষণ মুখোপাধ্যায়ের কন্যা গৌরী দেবীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের এক বছর পরই গৌরী দেবী মারা যান। স্ত্রীর শোকে তিনি কিছুদিন প্রায় সন্ন্যাসীর মতো জীবনযাপন করেন।
তারপর ১৯৪০ সালে ফরিদপুর জেলার ছয়গাঁও নিবাসী ষোড়শীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে রমা দেবীকে বিয়ে করেন। বিয়ের সাত বছর পর একমাত্র সন্তান তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় (ডাক নাম বাবলু) জন্মগ্রহণ করেন। দ্বিতীয় বিয়ের পরই তার রোমাঞ্চকর জীবনের শুরু হয়। তার শ^শুর ষোড়শীকান্ত তন্ত্রসাধনা করতেন। বিভূতিভূষণও সে সময় তন্ত্রসাধনায় আগ্রহী হয়। সেই সময়ই তার অসাধারণ ছোটগল্প সমগ্র ‘তারানাথ তান্ত্রিক’ লেখা শুরু করেন।
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ তার একটি বইতে বলেছেন, তারানাথ তান্ত্রিকের গল্পগুলো অনেকটাই সম্ভবত বিভূতিভূষণ নিজের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন। কিন্তু শুধু প্রথম দুটি গল্প তিনি লিখে যেতে পেরেছেন। পরের গল্পগুলো তার সন্তান তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন। পিতা ও পুত্রের লেখনিতে খুব একটা পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না।
বিভূতিভূষণের মৃত্যুও হয়েছিল খুব রহস্যজনকভাবে। তিনি একদিন রাতে জঙ্গলের পথে গ্রামে ফিরছিলেন। বেশ নির্জন পথ, কিছুদূর যাবার পর একটি লাশের বহর দেখতে পান। কিছু মানুষ একটি লাশ বহন করে নিচ্ছে তার শেষকৃত্যের কাজে। গ্রামের মানুষ একে অপরকে চিনে থাকে তাই সাধারণত কারো মৃত্যু হলে গ্রামের সবাই জেনে থাকে। তাই বিভূতিভূষণ সেই যাত্রীদের জিজ্ঞেস করল কার লাশ নিচ্ছে! কে মারা গেল!
যাত্রীরা লাশ নামিয়ে তাকে দেখার জন্য বলল। এরপর তিনি যা দেখলেন, যা একজন মানুষের জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর দৃশ্য হতে পারে। যা একজন সুস্থ মানুষের হৃৎপি- হিম করে দিতে যথেষ্ট। বিভূতিভূষণ তার নিজের লাশ দেখতে পেলেন
। এরপর তিনি জ্ঞান হারান এবং পরে নিজেকে বাড়িতে প্রবল জ্বরের ঘোরে আবিষ্কার করেন। এই জ্বর তিন দিন স্থায়ী ছিল, তিন দিন পর তার সমস্ত শরীর হিমশীতল হয়ে আসে। অর্থাৎ এই ব্যাখ্যাতীত ঘটনার তিন দিন পর তিনি সেই ঘটনারই অংশ হয়ে যান।
 
                             
                                     সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন