বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০১:৫১ এএম

স্ট্রবেরি চাষ পদ্ধতি

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০১:৫১ এএম

স্ট্রবেরি চাষ পদ্ধতি

বর্তমান সময়ে একটি লাভজনক কৃষির নতুন সম্ভাবনা হলো স্ট্রবেরি চাষ। বাংলাদেশের কৃষি খাতে বৈচিত্র্য আনতে স্ট্রবেরি একটি যুগান্তকারী সংযোজন। একসময় মনে করা হতো এটি শুধু পাহাড়ি বা শীতপ্রধান দেশের ফল, কিন্তু বর্তমানে দেশের সমতল ভূমিতেও সফলভাবে চাষ হচ্ছে। বিশেষ করে রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেটে স্ট্রবেরি চাষের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্ট্রবেরি চাষে কম সময়ে ফলন, উচ্চ বাজারমূল্য ও স্বল্প জমিতে উৎপাদনের সুবিধা কৃষক ও উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বাড়াচ্ছে। কৃষিবিদের তথ্যানুসারে  স্ট্রবেরির চাষ পদ্ধতি তুলে ধরেছেন আরফান হোসাইন রাফি

উপযুক্ত জাত নির্বাচন :

সঠিক জাত নির্বাচন স্ট্রবেরি চাষে সাফল্যের চাবিকাঠি। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত জাতগুলোর মধ্যে বারি স্ট্রবেরি ১, ২, ৩ ও ৪ উল্লেখযোগ্য। এগুলোর উৎপাদনশীলতা ভালো এবং দেশীয় পরিবেশের সঙ্গে মানানসই। এ ছাড়া বিদেশি জাত যেমন ক্যামারোসা, সুইট চার্লি, উইন্টার ডন ও ফেস্টিভেলও চাষ করা হচ্ছে। বাজারের চাহিদা, মিষ্টতা, রং ও সংরক্ষণ সময় বিবেচনা করে জাত নির্বাচন করা জরুরি।

জলবায়ু অনুযায়ী চারা তৈরি :

স্ট্রবেরির চারা তৈরি করা কিছুটা কঠিন, কারণ এখনো এটি সহজে পাওয়া যায় না। তবে কিছু কিছু নার্সারিতে ভালো জাতের চারা পাওয়া যায়। সেখান থেকে খুঁজে আপনার কাক্সিক্ষত জাতের চারা খুঁজে নিতে হবে। স্ট্রবেরি গাছগুলো গুল্ম ও লতা জাতীয় গাছ বলে গাছের গোড়া থেকে বেশকিছু লম্বা লম্বা লতা মাটির ওপর দিয়ে লেতিয়ে যায়। মাটির সংস্পর্শে  লতার গিট থেকে শিকড় গজায়। শিকড়যুক্ত গিট কেটে নিয়ে মাটিতে পুঁতে দিলে নতুন চারা তৈরি হবে। অর্ধেক মাটি অর্ধেক গোবর সার মিশিয়ে পলিব্যাগে ভরে একটি করে শিকড়যুক্ত গিটসহ লতা পুঁতে দিতে হয়। এক্ষেত্রে একটি গাছ থেকে ১৮-২০টি চারা তৈরি করা সম্ভব। স্ট্রবেরি যেহেতু শীতপ্রধান ফসল এবং ১০Ñ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এর জন্য আদর্শ। বাংলাদেশের শীতকাল (অক্টোবরÑফেব্রুয়ারি) এ জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বেলে-দোআঁশ বা দোআঁশ মাটি এবং পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা থাকলে স্ট্রবেরি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ৫.৫–৬.৫ ঢ়ঐ যুক্ত মাটি স্ট্রবেরি চাষের জন্য বেশি উপযোগী। যেখানে পানি জমে থাকে না, এমন উচ্চভূমি বা বেড তৈরি করে চাষ করাই উত্তম।

জমি তৈরি :

চাষের আগে জমি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে ভেঙে সমান করতে হবে। সাধারণত ২০-২৫ সেমি উঁচু, ৩০-৬০ সেমি চওড়া বেড তৈরি করা হয়। প্রতিটি বেডের মাঝখানে সেচ খাল রাখতে হবে যাতে পানি জমে না থাকে। বর্তমানে মালচিং পেপার ব্যবহার করা হয়, যা আগাছা দমন করে এবং ফল মাটিতে লেগে নষ্ট হতে দেয় না। মাটিতে পর্যাপ্ত জৈব পদার্থ থাকলে গাছ সুস্থ থাকে এবং ফলনও বৃদ্ধি পায়।

চারা রোপণ :

অক্টোবর থেকে নভেম্বর হলো চারা রোপণের উত্তম সময়। প্রতিটি গাছের মধ্যে ২৫-৩০ সেমি দূরত্ব রাখা প্রয়োজন। চারা লাগানোর পর হালকা সেচ দিতে হবে, তবে কখনোই জমিতে পানি জমতে দেওয়া যাবে না। রোপণের সময় মাথায় রাখতে হবে, গাছ যেন খুব গভীর বা উপরের দিকে না থাকে, মাটির সমান গভীরতায় লাগানোই সর্বোত্তম।

সার ব্যবস্থাপনা :

স্ট্রবেরি গাছে পুষ্টির ঘাটতি হলে ফলন কমে যায় ও ফল ছোট হয়। জৈব সার যেমন গোবর বা কম্পোস্ট প্রয়োগ সবচেয়ে উপকারী। সাধারণভাবে প্রতি শতকে ৪০-৫০ কেজি গোবর, ৩০০ গ্রাম টিএসপি, ৩০০ গ্রাম এমওপি ও ৪০০ গ্রাম ইউরিয়া ব্যবহার করা হয়। সার তিন ধাপে দেওয়া উচিতÑ রোপণের সময়, ফুল আসার আগে ও ফল ধরার সময়।

সেচ :

স্ট্রবেরি গাছে নিয়মিত সেচ প্রয়োজন, বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে। তবে অতিরিক্ত পানি দিলে রুট রট বা শিকড় পচা দেখা দিতে পারে। ড্রিপ সেচ প্রযুক্তি স্ট্রবেরি চাষে সবচেয়ে কার্যকর। অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে পানি সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থাও থাকতে হবে। ফুল আসার সময় সেচ কম দিলে ফলের গুণগত মান ও মিষ্টতা বাড়ে।

রোগবালাই ও প্রতিকার :

স্ট্রবেরির প্রধান সমস্যা ছত্রাকজনিত রোগ যেমনÑ পাউডারি মিলডিউ, ফল পচা, লিফ স্পট ইত্যাদি। গাছের নিচে পানি জমলে এসব রোগ বাড়ে। জমি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার ও আক্রান্ত পাতা তুলে ফেলা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। প্রয়োজন হলে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।

সংগ্রহ :

ফুল আসার ৩০-৪০ দিন পর ফল ধরা শুরু হয়। ফল পুরোপুরি লাল হলে সংগ্রহ করতে হবে। সকালে বা বিকেলে ফল সংগ্রহ করলে তাজা থাকে। স্ট্রবেরি অত্যন্ত নরম ও সংবেদনশীল ফল, তাই প্লাস্টিক ট্রে বা বিশেষ প্যাকেজিং ব্যবহার করা জরুরি। ঠান্ডা স্থানে সংরক্ষণ করলে ৪-৫ দিন পর্যন্ত রাখা যায়।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!