ওয়াসা যেভাবে পারছে, সেভাবে রাস্তা কাটাকাটি করছে মন্তব্য করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, এভাবে চলতে থাকলে ওয়াসার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।
গতকাল রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন। সম্প্রতি কানাডা সফর করে আসার পর নগরের টাইগারপাস সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ওয়াসার রাস্তা কাটার বিরুদ্ধে চসিক মেয়র বলেন, হালিশহর এলাকায় রাস্তা কাটার ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম মানছে না। সেখানে ইচ্ছেমতো টিনের ঘেরাও দিয়ে রাস্তা কাটছে। আবার সে কাটা সড়ক ঠিকভাবে সংস্কার করছে না। ওয়াসা হালিশহরকে নষ্ট করে দিয়েছে। এভাবে চলতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘এমন একটি এলাকায় কীভাবে পোশাক কারখানার জন্য ভবন নির্মাণে অনুমোদন পেল? কীভাবে বাণিজ্যিক ভবন করেছে? এগুলো সিডিএর দেখার দায়িত্ব। সিডিএর কাছে তা জানতে চাই।’
গত ৯ জুলাই নগরের হালিশহরের আনন্দিপুর এলাকার একটি নালায় পড়ে তিন বছরের শিশু হুমায়রা নিহত হয়। এ ঘটনার তদন্তে সিটি করপোরেশন নিজেদের কোনো দায় খুঁজে পায়নি। তদন্ত কমিটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের উদাসীনতা ও মায়ের কর্মস্থলের অবহেলাকে দায়ী করেছে।
এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হলে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নালাটিতে সøাব দেওয়ার সুযোগ নেই। এখানে শিশুটির পরিবার ও তার মায়ের কর্মস্থলের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। তাদের শিশুটিকে দেখে রাখার দরকার ছিল। সিটি করপোরেশনের পক্ষে তো প্রত্যেক শিশুর পেছনে গার্ড রাখা সম্ভব নয়। প্রাপ্তবয়স্ক কেউ যদি এভাবে মারা যেতেন, তাহলে সিটি করপোরেশন দায়িত্ব নিত।’
চট্টগ্রাম ওয়াসা ‘চট্টগ্রাম মহানগরের পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের আওতায় নগরের হালিশহর এলাকার সড়ক কাটছে ওয়াসা। ২০২২ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তবে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে রাস্তা কাটছে বলে দাবি করেন ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আরিফুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সিটি করপোরেশন বর্ষার সময় চার মাস সড়ক কাটা বন্ধ রাখতে বলেছিল। কিন্তু এ প্রকল্পের ঠিকাদার বিদেশি। এভাবে কাজ বন্ধ রাখলে সময় বাড়ানোসহ নানা জটিলতা রয়েছে।
তাই সীমিতভাবে ৫০ কিলোমিটারের পরিবর্তে ১৮ কিলোমিটার রাস্তা কাটার সিদ্ধান্ত হয়। তা করা হচ্ছে সিটি করপোরেশনের জ্ঞাতসারে। অস্থায়ীভাবে সড়ক মেরামত করে দেওয়া হলেও বৃষ্টির জন্য তা টেকসই হচ্ছে না। তবে বর্ষার পর তা ঠিক করা হবে।