ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর অভিযোগে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ৫৭ শিক্ষকসহ ১৩৩ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। গতকাল সোমবার বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, গত বছরের ৪ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ নামে শান্তি মিছিলে যোগদান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর জুলুম ও নির্যাতনের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৩২৮তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে বিশ^বিদ্যালয়ের ৫৭ জন শিক্ষক, ২৪ জন কর্মকর্তা, ২১ জন কর্মচারী এবং ৩১ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, শিক্ষকদের মধ্যে ছয়জনকে বরখাস্ত, ১২ জনকে অপসারণ, ৮ জনকে নিম্ন পদে অবনমন এবং ৩১ জনকে তিরস্কার করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের মধ্যে ৮ জনকে বরখাস্ত, ৮ জনকে অপসারণ, ৭ জনকে তিরস্কার এবং ১ জনকে ৫ লাখ টাকা অর্থদ- প্রদান করা হয়েছে। কর্মচারীদের মধ্যে ২ জনকে বরখাস্ত এবং ১৯ জনকে তিরস্কার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭ জনকে আজীবন বহিষ্কার এবং ২৪ জনের সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এ ঘটনার পাশাপাশি ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর আশরাফুল হক হলে বিকেল ৫টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চারজন শিক্ষার্থীকে ছাত্রদল ও শিবির ট্যাগ দিয়ে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় আরও ২১ জনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। এর মধ্যে ১৮ জন শিক্ষার্থী (১৫ জনের সনদপত্র বাতিল এবং ৩ জনকে আজীবন বহিষ্কার), ২ জন শিক্ষক (একজনকে নি¤œপদে অবনমন এবং অন্যজনের পদোন্নতি, বেতন বৃদ্ধি স্থগিত) ও ১ জন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অপসারণের শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, তদন্ত কমিটি বিভিন্ন আলোচনা, সাক্ষাৎকার ও তথ্যের ভিত্তিতে শাস্তি সুপারিশ করেছে এবং সেগুলোকে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গত ১৮ মে সিন্ডিকেট সভায় এই শাস্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী সভায় পরিসমর্থন হয়েছে। ৩ জন শিক্ষক এরই মধ্যে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন যে তদন্ত কমিটি বৈধ নয়। সে রিট গতকাল (রোববার) খারিজ হয়েছে। আজকে (গতকাল) থেকে তাদের শাস্তিসংক্রান্ত কাগজ বিলি হচ্ছে।