আয়কর রিটার্ন দাখিলের শর্তে গ্রামীণ ব্যাংককে ২০২৯ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষেত্রে আলাদা করে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব রোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
তিনি বলেন, ‘সমজাতীয় অন্যরা যে সুবিধা পায়, সেটাই দিয়েছি। এটা নিয়ে আর আপাতত কথা না বলি। আর এখানে কোনো আলাদা ট্রিটমেন্ট দেওয়ার ইচ্ছা আমাদের ছিল না বা করিও নাই।’
ঢাকার আগারগাঁওয়ে গতকাল সোমবার সেমিনারে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এমন দাবি করেন তিনি। এর আগে সকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ইউনিটির (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আক্তার মালা, এনবিআর সদস্য (কাস্টমস নীতি ও আইসিটি) মুবিনুল কবীর, সদস্য (কর নীতি) বদিউল আলম চৌধুরী, সদস্য (মূসক নীতি) মো. আজিজুর রহমানসহ অনেকে।
সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের সব ধরনের আয়ের ওপর কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ইন্টারেস্ট আয়ের ওপরও এ অব্যাহতি রয়েছে। সরকার ক্ষমতায় আসার পর আয়কর রিটার্ন দাখিলের শর্তে গ্রামীণ ব্যাংককে ২০২৯ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি দেওয়া হয় গত বছরের অক্টোবরে।’
একই শর্তে ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত দানকৃত আয় থেকে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে অলাভজনক ধর্মীয় দাতব্য সংস্থা আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনকে। সেই সময়ে এ বিষয়ে আলাদা গেজেট প্রকাশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। সেখানে বলা হয়েছে, করদিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিলসহ সব নিয়ম পরিপালন করে তবেই এ সুবিধা পাওয়া যাবে। তার আগে ১৯৮৩ সালে সামরিক অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবসময়ই কর অব্যাহতি সুবিধা পেয়ে আসছে গ্রামীণ ব্যাংক। এ সুযোগ প্রতিষ্ঠানটি পেয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশের ৩৩ ধারার আওতায়। ২০১৩ সালে অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করা হলেও ওই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
সকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি সরকারের যেসব ভালো বিষয় রয়েছে, সেগুলোকে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সরকারের শুধু ভুল আর নেতিবাচক বিষয়গুলো না দেখে, ভালো বিষয়গুলো দেখতে হবে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আয়কর, মূসক ও কাস্টমস বিষয়ে গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে আয়োজিত সেমিনারে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার জুনিয়র অর্থনীতিবিদ আছেন, যারা শুধু সরকারের নেতিবাচক আর ভুল বিষয়গুলোই দেখেন। শুধু দেখেন, এ নাই, সে নাই কিন্তু ভালো বিষয়গুলোর দিকেও নজর দেওয়া দরকার।’
সরকারের ভুল থাকতে পারে স্বীকার করে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সরকারের ভুল যে নাই তা নয়, সমালোচনা করার ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি নেই। এতে সংশোধন করা যাবে।’ পাশাপশি এনবিআরের সুনাম যে আছে, তা ধরে রাখার পরামর্শও দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ২০২৫-২৬ কর বছরের ই-রিটার্নের উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ডিজিটালাইজেশনের ফলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এখন থেকে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে’ বলেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :