৩ আগস্ট, রোববার, ভোরবেলা। গাজীপুর মহানগরের মিরের বাজার এলাকার একটি বাসা। তিন মাস বয়সি শিশুসন্তানের দুধ বানাতে পানি গরম করতে রান্নাঘরে যান হাফিজা আক্তার (২০)। চুলায় আগুন ধরানোর জন্য দিয়াশলাই জ্বালাতেই সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ; ঘরে আগুন ধরে যায়। এতে গুরুতর দগ্ধ হন হাফিজা, তার স্বামী রিপন (২৩) এবং শিশুসন্তান রায়হান। তাদের সবারই শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ দগ্ধ হয়। আহতদের উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ইউনিটে আনা হলে শিশু রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এর এক দিন পর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন হাফিজা ও রিপন।
এর ঠিক ৭ দিনের মাথায় গত ১০ আগস্ট সিলেটে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৫ জন দগ্ধ হন। সিলেটের শাহপরান এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ওই পরিবারের দুই শিশুসহ পাঁচজন মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন। দগ্ধ পারভেজ, তার স্ত্রী ফারহানা, বড় ছেলে মোহাম্মদ ও ছোট ছেলে মারওয়ান ও তাদের আত্মীয় হেনা এখনো কাতরাচ্ছেন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের বিছানায়।
এ তো গেল লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা।
নিম্নমানের এবং মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডারের কারণে গত লক্ষ্মীপুরের গ্রিন লিফ সিএনজি ফিলিং স্টেশনে দুই দফায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দুটি বাসে আগুন ধরে যায়। মৃত্যু হয় ৫ জনের। বিস্ফোরক পরিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের তদন্তে দুর্ঘটনার শিকার বাস দুটির সিলিন্ডারে জোড়া দেওয়ার আলামত পাওয়া যায়। গ্যাসের জন্য তৈরি সিলিন্ডারে এমন জোড়া থাকে না। এসব সিলিন্ডার যানবাহনে ব্যবহারের উপযুক্ত নয়। এর মধ্যে কোনো একটি সিলিন্ডারের ‘ম্যাটালিক বডি’ মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল বলেও প্রমাণ পাওয়া যায়।
শুধু গাজীপুর, সিলেট বা লক্ষ্মীপুর নয়, প্রায়ই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘটছে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা। এতে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুও হচ্ছে অনেকের। এক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও সিলিন্ডারের ব্যবহারসহ ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, একটি সিলিন্ডার ন্যূনতম ২০ বছর ব্যবহার করার কথা থাকলেও ১০ বছর অন্তর এটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া, এ সময়ের মধ্যে কয়েক দফায় রেগুলেটর ও ভাল্ব পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু দায়িত্বশীলদের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের উদাসীনতায় প্রতিদিনই বাড়ছে দুর্ঘটনা।
এসব দুর্ঘটনায় গ্যাস লিকেজের ঘটনাগুলো সামনে আনা হলেও সিলিন্ডার বিস্ফোরণের বিষয়টি চাপাই থাকছে। এর মূল কারণ বোতলজাত বা এলপি গ্যাস সিলিন্ডার উৎপাদনকারী কোম্পানির দৌরাত্ম্য। মেয়াদোত্তীর্ণ ও ত্রুটিযুক্ত সিলিন্ডার নিয়ে বছরের পর বছর কাজ চললেও এটি নিয়ে যেন কারো মাথাব্যথা নেই। সিলিন্ডারের নামে একেকটি বোমা নিয়ে বসতবাড়িসহ রাস্তার যানবাহনগুলো নিয়মিত চলাচল করছে। এতে করে দিনের পর দিন ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য মতে, ২০২৪ সালে শুধু গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ, বিস্ফোরণ, লাইন লিকেজের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ২১৩টি। এর মধ্যে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের দুর্ঘটনা ঘটেছে ৭০৪টি, বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে ৪৪টি আর সরবরাহ লাইনের লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটনা ঘটেছে ৪৬৫টি। আর এতে ক্ষতির হয়েছে ৯১ লাখ ৭৮ হাজার ৩২৪ টাকা। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে দেশজুড়ে ২৭ হাজার ৬২৪টি অগ্নিকাণ্ড র ঘটনা ঘটেছে।
এসব অগ্নিকা-ে ৭৯২ কোটি ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ১৪ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। নিহত হয়েছেন ১০২ জন, আহত হয়েছেন ২৮১ জন। যার মধ্যে গ্যাসের লাইন লিকেজ থেকে ৭৭০টি, গ্যাস সিলিন্ডার ও বয়লার বিস্ফোরণ থেকে ১২৫টি এবং বাজি পোড়ানো থেকে ৮৭টি আগুনের ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিসংখ্যান মতে, গত দুই বছরে দেশে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ১৬৯টি। যদিও সিলিন্ডার বিস্ফোরণের এ পরিসংখ্যানকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করছে বিস্ফোরক পরিদপ্তর। বিস্ফোরক পরিদর্শক ড. মো. আসাদুলের মতে, ‘দেশে গ্যাস লিকেজ থেকে দুর্ঘটনা ঘটলেও সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা খুবই বিরল।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমার চাকরিজীবনে ২০১২ সালে বগুড়ায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ দেখেছি। বাকি যেসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সেসব লিকেজ বা অন্য কোনো কারণ থেকে।’ তাহলে ফায়ার সার্ভিসের তথ্য কি ভিত্তিহীন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসই ভালো বলতে পারবে। তারা কয়টা ঘটনাস্থলে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের তথ্য পেয়েছে অর্থাৎ পুরো সিলিন্ডারে মেটালিক বডির স্ক্র্যাপ লন্ডভন্ড অবস্থায় পেয়েছে তারা বিষয়টি বলতে পারবে। তবে আমরা নিয়মিত বাজার তদারকি করছি। যেসব সিলিন্ডার মেয়াদোত্তীর্ণ সেগুলোকে স্ক্র্যাপ আকারে ধ্বংস করা হচ্ছে।
এই যেমন গতকাল (রোববার) বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে ৮ হাজার সিলিন্ডারের মেয়াদোত্তীর্ণের কথা আমাদের জানানো হয়েছে। আমরা তাদের প্ল্যান্ট পরিদর্শনে যাব দুই একদিনের মধ্যে। যাচাই-বাছাই করে এগুলোকে ধ্বংস করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের লোকবল কম থাকার পরও আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতনতার সঙ্গে কাজ করছি। আমাদের হিসাব মতে, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ১ থেকে ২ শতাংশের বেশি হওয়ার কথা না।’
তবে ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের ওয়েবসাইটে বিস্ফোরণের যে তথ্য দেওয়া তা সঠিক। দেশে গত দুই বছরে ১৬৯টি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ঘটনাস্থলের নমুনার ভিত্তিতেই আমাদের পরিসংখ্যানগুলো করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ওয়েবসাইটে যা বলা হয়েছে তাই। ঘটনাস্থল পর্যালোচনা করেই করা।’
তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরক পরিদপ্তর যে দাবি করছে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে না তাহলে আমাদের কর্মীরা আসলে কী কাজ করে? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের কর্মীরা এসব তথ্য জোগাড় করেন। তারপরেই হিসাব করা হয়। কেন পাড়া মহল্লায় সিলিন্ডারের দোকান থাকবে, কেন বাসাবাড়িতে সিলিন্ডারের ওপর বার্নার থাকবে, কেন সিলিন্ডার পরিবহনে এমন উদাসীনতা থাকবে? যদি তারা নিয়মিত তদারকিই করে তাহলে এত দুর্ঘটনা ঘটারই কথা না।’
তিনি আরও বলেন, বিস্ফোরক পরিদপ্তর বলছে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয় নাÑ চলতি বছরই খিলগাঁয়ে আমার চোখের সামনে একটি গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে। যা আমার নিজের চোখে দেখা। এসব পরিসংখ্যান তাদের হাতে নেই কেন? বাজার তদারকি করলে ভালো করেই করতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার বা সিলিন্ডারের মেইনটেন্যান্সে নজর না দিলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। এর দায় কেউই এড়াতে পারে না।’
সরকারি দুই সংস্থার যখন এমন বিপরীতমুখী অবস্থান সিলিন্ডার বিস্ফোরণের বিষয়ে তখন সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি এলাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়, এলপিজির সিলিন্ডারগুলোয় মেয়াদ লেখা থাকলেও কবে থেকে এগুলোর ব্যবহার হচ্ছে তার উল্লেখ নেই। দেশের বাজারে ২০০৬ সাল থেকে এলপিজির ব্যবহার হচ্ছে। সেই হিসাবে এক ‘লট’ সিলিন্ডারের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৬ সালেই। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে আবার বাজারে ছাড়া হলেও এদের মধ্যে কিছু সিলিন্ডার কার্যকারিতা হারিয়েছে।
রাজধানীর মগবাজার এলাকার গাবতলার নুরুল এন্টারপ্রাইজের বিক্রেতা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘কোম্পানি থেকে নিয়ম করে আমাদের সিলিন্ডার দিয়ে যায়। এটির মেয়াদ আছে কি না তা তো আমাদের দেখার বিষয় না। তবে যতটুকু জানি সব সিলিন্ডারই রিফিলের সময় যাচাই-বাছাই করা হয়। ত্রুটিপূর্ণ কোনো সিলিন্ডার গ্রাহকের কাছে দেওয়া হয় না।’ একই রকম কথা বলেন গাড়িচালক আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, সিলিন্ডারে গ্যাস ফুরিয়ে গেলে কোম্পানির কাছ থেকে সিলিন্ডার নিয়ে আসি। মেয়াদ আছে কি না সেটা আমরা কীভাবে বুঝব?’
এসব সিলিন্ডারের মেয়াদ আছে কি না তা নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন বাসাবাড়িতে ব্যবহারকারী ভোক্তারাও। মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মিতু আক্তার বলেন, সিলিন্ডারের গ্যাস শেষ হলে একটি বদলে আরেকটি নিয়ে আসা হয়। কিন্তু কোনটার যে মেয়াদ আছে আর কোনটার যে নেই তা তো বোঝার উপায় নেই। কোনো কোনোটির গায়ে লেখা থাকলেও বেশির ভাগেরই থাকে না। এমন পরিস্থিতিতে এই সিলিন্ডার ব্যবহারে সব সময়ই আতঙ্ক কাজ করে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, মেয়াদ ও অসচেতনতার কারণে ঘটছে অধিকাংশ বিস্ফোরণের ঘটনা। সিলিন্ডার নামক বোমাগুলোর নিয়মিত তদারকি না হলে দিন দিন এসব দুর্ঘটনা বাড়বে বলেও দাবি তাদের। এ বিষয়ে এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (লোয়াব) সাবেক সভাপতি ও ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের পরিচালক আজম জে চৌধুরী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) নতুন একটি সিলিন্ডারের মেয়াদ থাকে ১০ বছর। সিলিন্ডারের গায়ে খোদাই করে উৎপাদনের তারিখ লেখা থাকে। এরপর ১০ বছর সেটি নিরাপদ। এরপর এসব সিলিন্ডার পরীক্ষা করার নিয়ম আছে। পরীক্ষায় যেসব সিলিন্ডার নিরাপদ বলে গণ্য হয়, সেগুলো আবার ১০ বছরের জন্য বাজারে ছাড়া হয়। ফলে মেয়াদ আছে কি না, তা দেখা যায় সিলিন্ডারের গায়েই। যেহেতু বাংলাদেশে এলপিজির ব্যবহারের সময়কাল খুব একটা বেশি না তাই সিলিন্ডারগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণ খুব একটা হয়নি।
যেগুলো প্রয়োজন সেগুলো কারখানায় নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। ব্যবহার উপযুক্ত হলেই পুনরায় বাজারে ছাড়া হয়। নতুবা স্ক্র্যাপ করা হয়। আমাদের অনেক সিলিন্ডারই স্ক্র্যাপ করা হয়েছে। যেগুলো ব্যবহারের উপযুক্ত নয়।’ অগ্নিকা- বা বিস্ফোরণের জন সিলিন্ডার কোনোভাবেই দায়ী নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেখবেন আগুন বা বিস্ফোরণেও সিলিন্ডারের বোতলগুলো অক্ষতই থাকে। কারণ এগুলো দাহ্য নয়। সিলিন্ডার নয় বরং অগ্নিকাণ্ড জন্য রাইজার, ভালভ, রেগুলেটর, পুরাতন পাইপ দায়ী। এগুলো নিয়মিত তদারকি করলে এসব দুর্ঘটনা ঘটবে না।
জানা যায়, তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস বিধিমালা-২০০৪ (২০১৬ পর্যন্ত সংশোধিত) অনুযায়ী সিলিন্ডার নির্ধারিত মেয়াদের পরপর পরীক্ষা করার বিধান রয়েছে। আর তরলায়িত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) সিলিন্ডার পাঁচ বছর পরপর পরীক্ষার নিয়ম।
বিধিমালার আওতায় গ্যাস সিলিন্ডারের আমদানি ও উৎপাদনের মান নির্ধারণ করা হয়েছে কি না তা বিস্ফোরক অধিদপ্তরকে নিয়মিত পরিদর্শন করার পরামর্শ দিয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘উৎপাদনকারীদের লাইসেন্সও দেয় বিস্ফোরক অধিদপ্তর। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তদন্ত করে তারা। বাজারজাত করা প্রতিটি সিলিন্ডার পরীক্ষার জন্য তাদের টিম রাখতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার বিস্ফোরণের জন্য একটি প্রাণহানিও কাম্য নয়। এর জন্য সরকারকে প্রয়োজনে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।’
এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (লোয়াব) তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে ৬০ লাখের বেশি গ্রাহক এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার করেন। এসব গ্রাহকের বড় অংশই গ্রামাঞ্চলের। এ মুহূর্তে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৩০টি কোম্পানির অন্তত দুই কোটি সিলিন্ডার বাজারে রয়েছে। বিস্ফোরক পরিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত এক বছরে এলপিজি সিলিন্ডার আমদানি করা হয়েছে ৬ লাখের বেশি। এলপিজি ছাড়া অন্যান্য সিলিন্ডার আমদানি করা হয়েছে ৩ লাখের বেশি। পাশাপাশি দেশেও সিলিন্ডার নির্মাণের জন্য অনুমতি রয়েছে কয়েকটি কোম্পানির। অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান বাজারজাত করেছে দেশে নির্মিত সিলিন্ডার। কিন্তু এসব সিলিন্ডারের মান পরীক্ষার জন্য অনুমোদিত কোনো পরীক্ষণ কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। ফলে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে।
গ্যাস সংকটসহ নতুন করে গ্যাসের সংযোগ বন্ধ থাকার কারণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রান্নার কাজের জনয় এলপিজি সিলিন্ডার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সরকারের পক্ষ থেকে এলপিজির সিলিন্ডার ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই সিলিন্ডার গ্যাস যথাযথ ব্যবহার না জানায় ঘটছে ভয়াবহ অগ্নিকা- ও প্রাণহানির ঘটনা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন