বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০১:৫৯ এএম

ছাত্রদল সভাপতির নেতৃত্বে অটোরিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০১:৫৯ এএম

ছাত্রদল সভাপতির নেতৃত্বে অটোরিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যা

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতির নেতৃত্বে অটোরিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর গতকাল বুধবার দুপুরে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মুক্তাগাছা উপজেলার অধীন ৬ নম্বর মানকোন ইউনিয়নের অভিযুক্ত ছাত্রদল সভাপতি মো. সজীব হাসান, ইউনিয়ন ছাত্রদলকর্মী আবির ও মারুফকে সংগঠনের প্রথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল সভাপতি মো. আজিজুল হাকিম আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিব হোসেনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মুক্তাগাছা উপজেলা ছাত্রদল আহ্বায়ক মো. মঞ্জুরুল হক আরিফ ও সদস্যসচিব আসাদ ফরাজী এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন এবং ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বহিষ্কৃত ব্যক্তিদের সাথে কোনো ধরনের সাংগঠনিক কর্মকা-ে জড়িত না থাকার নির্দেশ প্রদান করেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে নিহত ফাহিমের মা রুবি আক্তার বাীদ হয়ে মুক্তাগাছা থানায় ছাত্রদল নেতা সজিব মিয়াকে এক নম্বর আসামি করে ১২ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের বোর্ড ঘর মোড় এলাকার বাসিন্দা মজনু মিয়ার ছেলে রাসেলের কাছে পার্শ্ববর্তী আলগীর চর গ্রামের মুদি দোকানদার রাসেল ৩৫০ টাকা পেতেন। এ নিয়ে মজনু মিয়া ও তার ছেলে ইয়াছিনের সাথে দোকানদার রাসেলের কথা-কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার সূত্র ধরে গত সোমবার দুপুরে মানকোন বোর্ডঘর মোড়ে দোকানদার রাসেলের পক্ষ হয়ে মানকোন ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি সজিব মিয়ার নেতৃত্বে একটি দল সেখানে মজনু মিয়া, তার ছেলে ইয়াছিন, ভাতিজা ফাহিমকে বাড়ি থেকে ডেকে আনে। 

পরে ছাত্রদল নেতা সজিব ও তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে পাশের স-মিলের কাঠ দিয়ে মজনু মিয়া, ইয়াছিন ও ফাহিমকে এলোপাতাড়ি পিটায়। তাকে ফেরাতে গেলে ফাহিমের দাদি ফিরোজা খাতুন, বোন ফারজানা খাতুন গুরুতর আহত হন। গুরুতর আহত ফাহিমসহ অন্যদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানেই গত মঙ্গলবার দুপুরে ফাহিমের মৃত্যু হয়।

গতকাল বুধবার দুপুরে নিহত ফাহিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। ফাহিমের নয় মাসের কন্যাশিশু ফাওজিয়াকে নিয়ে তার স্ত্রী খাদিজা বুক চাপড়ে কান্না করছেন। পাশেই তার দাদা আব্দুল হাকিম ও তার দাদি ফিরোজা খাতুন মাটিতে লুটিয়ে কান্না করছেন। পুরো বাড়িজুড়ে শোকের মাতম চলছে।

নিহতের স্ত্রী খাদিজা বেগম বলেন, আমার এই শিশুসন্তান তার বাবার জন্য পাগল। বাবাকে না দেখলে সে কান্না করে। এখন কে তার কান্না থামাবে। কে তাকে দুধ কিনে দেবে। আমার এই সন্তানের ভবিষ্যৎ কী। আমার স্বামীকে বিনা দোষে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি তার খুনিদের ফাঁসি চাই।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোবারক হোসেন বলেন, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সজিব ও তার লোকজন অটোরিকশাচালক ফাহিমকে স-মিলের কাঠ দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। আমরা এগিয়ে গেলে আমাদেরকে সরিয়ে দেয়। পরে ফাহিম হাসপাতালে মারা যায়। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।

মুক্তাগাছা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল হক আরিফের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিপন চন্দ্র গোপ বলেন, দোকানের বকেয়া টাকা নিয়ে ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অটোরিকশাচালক ফাহিমের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়। থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।  

এদিকে ন্যক্কারজনক এই ঘটনার নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন মুক্তাগাছা উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক শামছুল হক। নিহত ফাহিমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি এ ধরনের ঘৃণিত কর্মকা-ের সাথে যে বা যারা জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

উপজেলার মানকোন ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাওলানা জয়নাল আবেদীনসহ জামায়াতের নেতাকর্মীরাও ফাহিমের পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!