সিলেটের পাথর লুট নিয়ে সমালোচনার মুখে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হওয়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ সিলেট ছেড়েছেন।
গতকাল বুধবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে অনাড়ম্বর বিদায়ি সংবর্ধনা দেন। পরে দুপুর ১২টার কিছু পর তিনি সরকারি গাড়িতে করে কার্যালয় ত্যাগ করে বিমানবন্দরে যান। এ সময় তার গানম্যানও সঙ্গে ছিলেন।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলম আজ বৃহস্পতিবার যোগ দেবেন। তার আগ পর্যন্ত স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক সুবর্ণা সরকার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করবেন।
গত সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে শের মাহবুব মুরাদকে ওএসডি করা হয়। তিনি গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর সিলেটের ডিসি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তার দায়িত্বকালেই জাফলং, ভোলাগঞ্জ, সাদাপাথরসহ বিভিন্ন কোয়ারি থেকে ব্যাপক বালু-পাথর লুটের অভিযোগ ওঠে।
বিশেষ করে সাদাপাথরে নজিরবিহীন লুটপাট নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরপর থেকেই প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে সমালোচনা বাড়তে থাকে।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সম্প্রতি বলেন, ‘পাথর লুটে স্থানীয় প্রশাসনের দায় রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তার এমন বক্তব্যের পরদিনই ডিসি মুরাদকে ওএসডি করা হয়। একই দিন দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারাও জানান, পাথর লুটে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা স্পষ্ট।
১৮ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে মো. সারোয়ার আলমকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রসঙ্গত, সারা দেশে ৫১টি কোয়ারি থাকলেও সিলেটেই রয়েছে আটটি বড় পাথর কোয়ারি। এ ছাড়া সাদাপাথর, জাফলং, বিছনাকান্দি, উৎমাছড়াসহ আরও অন্তত ১০টি জায়গা পাথরের জন্য পরিচিত, যেগুলো জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রও। তবে ২০২০ সালের পর পরিবেশগত ক্ষতির কারণে কোয়ারি ইজারা বন্ধ থাকলেও রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী মহলের চাপে বারবার ইজারা চালুর চেষ্টা হয়েছে।
সরকার অনুমতি না দেওয়ায় গত এক বছর ধরে প্রকাশ্যেই অবৈধভাবে পাথর লুট চলে আসছিল, যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।