ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫

সংখ্যানুপাতিক ভোটের  ব্যবস্থা অযৌক্তিক - বললেন নজরুল ইসলাম খান 

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৫, ০২:২১ এএম

 

সংখ্যানুপাতিক ভোটব্যবস্থা ‘কিছু রাজনৈতিক দলের অযৌক্তিক দাবি’ বলে মন্তব্য করেছেন নজরুল ইসলাম খান। গতকাল বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পিআর পদ্ধতির দাবি করা দলগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে এ কথা বলেন বিএনপির এ স্থায়ী কমিটির সদস্য। 

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘পিআর কী? ব্যাপারটা তো আপনারা পরিষ্কারই করছেন না, আপনি কী ধরনের পদ্ধতি চান, যে পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা কি কেউ কখনো জনগণকে জিজ্ঞাসা করেছি? এই ঢাকার পাশে কেরানীগঞ্জে যান না! সেখানে একজন লোককে বলেন, এত দিন আপনি যেভাবে প্রতিনিধি নির্বাচন করেছেন, আমরা নতুন একটা নতুন পদ্ধতি চাচ্ছি, যাতে ভোটের মূল্য থাকবে, যাতে অংশগ্রহণ আনুপাতিক হারে হবে, সেখানে আপনি কোনো ব্যক্তিকে না, দলকে ভোট দেবেন এবং দল এমপি মনোনীত করবে। আপনার এ এলাকায় নির্দিষ্ট কোনো এমপি থাকবে না। আপনি কোনো প্রার্থীকে ভোট দেবেন না।’

তিনি বলেন, ‘এ কথাগুলো কি বলছেন এলাকার মানুষজনকে। তাদের মতামত চাইছেন কি, তারা রাজি কি রাজি না। যখন এ নিয়ে (পিআর) ইনসিস্ট করা হয়, তখন তো সন্দেহ করাই যায় যে এটা একটা অযৌক্তিক চেষ্টা, যেটার অনিবার্য পরিণতি হতে পারে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেহেতু যে বিষয়টা নিয়ে জুলুম করা হচ্ছে বা জবরদস্তি করা হচ্ছে বা চেষ্টা করা হচ্ছে, যেহেতু এটার ভিত্তিটা দুর্বল, সাধারণ মানুষকে এটার মধ্যে প্রাসঙ্গিক করা হয়নি। সেহেতু এটা নিয়ে খুব বেশি ঝামেলা হবে বলে আমরা মনে করি না। একটা সময় দেখা যাবে, এটা বন্ধ হয়ে গেছে।’

একই সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘যদি আপনি এটাতে (পিআর) রাজিও হন, তাহলেও তো এ নির্বাচনে তা বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। কারণ, সংবিধান সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যবস্থা কার্যকর করতে পারবেন না। আর সংবিধান সংশোধন করার ক্ষমতা তো সংসদের। কাজেই করতে হলেও তো আপনার এরপরের নির্বাচনের প্রশ্ন আসবে, তাই না।’

নজরুল বলেন, ‘যেকোনো রাজনৈতিক দলের যেকোনো নেতার কোনো চিন্তাভাবনা থাকতে পারে। হতে পারে সেটা খুবই ভালো, হতে পারে সেটা যুগান্তকারী, কোনো সন্দেহ নাই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, যেকোনো প্রস্তাব ভালো হোক আর মন্দ হোক, বিজ্ঞ মানুষ বলুক আর আমাদের মতো মূর্খ মানুষ বলুক, যে পর্যন্ত এটা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না, সে পর্যন্ত সেটা জনগণের জন্য কার্যকর হতে পারে না, হওয়া উচিত না।’

ইভিএমে ভোট প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দেখুন, আমাদের দেশে শুধু ভোটটা কীভাবে দেবেন, ব্যালট পেপারে দেবেন, ব্যালট পেপারে সিল মারবেন, নাকি মেশিনে টিপ দেবেন, ইভিএম মেশিন, এ নিয়ে কত বছর ধরে আলোচনা করতেছি বলেন? এখন পর্যন্ত কি তার ফয়সালা হয়েছে? আর আপনি গোটা নির্বাচনব্যবস্থা বদলে দিতে চাচ্ছেন, পিআরের মাধ্যমে। কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিকে কেউ ভোট দিচ্ছে না, কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি তার প্রতিনিধি হচ্ছে না, যারা প্রতিনিধি হবেন, তাদের নির্ধারণ করবে দল, জনগণ না এবং তারা কেউ নির্দিষ্ট এলাকার এমপি হবেন না। তারা হবেন দেশের এমপি, জনগণ তার সমস্যা নিয়ে কার কাছে যাবে, এটা নির্ধারিত থাকবে না। এরকম একটা বড় পরিবর্তন, যারা দেশের মালিক জনগণ, তাদের কাছে আপনি পরিষ্কার করছেন না।’

সংবাদ সম্মেলন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে জাতীয় কমিটির সদস্য দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, মাহবুবে রহমান শামীম, জিকে গউস, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, শামা ওবায়েদ ও শাহিন শওকত উপস্থিত ছিলেন।