সিলেটের জাফলং হানিফা খাতুন মেমোরিয়াল কলেজে এইচএসসিতে ভর্তির জন্য আসন সংখ্যা ৩০০। অথচ কলেজটিতে কোনো শিক্ষার্থীই ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়নি। একই অবস্থা রাজশাহীর আর এম জে কলেজেও। কলেজটিতে ১৫০টি আসন থাকলেও একজন শিক্ষার্থীও নির্বাচিত হয়নি। একই অবস্থা আরও ৩৭৮টি কলেজ-মাদ্রাসায়। এসব প্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থীই ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়নি। এ ছাড়া সারা দেশে ১০টি কলেজে ভর্তির জন্য কেউ আবেদনই করেনি। আবার আবেদন করলেও ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়নি ২৫ হাজার ৩৪৮ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে রয়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া ৫ হাজার ৭৬৫ শিক্ষার্থী। এ ছাড়াও এসএসসি ও দাখিলে উত্তীর্ণ ১ লাখ ৩০ হাজার ৪৭১ জন শিক্ষার্থী কলেজ ও মাদ্রাসায় ভর্তির জন্য আবেদনই করেননি।
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম পর্যায়ের ভর্তির ফলের তথ্য পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় এই ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
দেশের সব কলেজ ও মাদ্রাসায় (নটর ডেম কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া) কেন্দ্রীয়ভাবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির বাছাইয়ের কাজটি করা হচ্ছে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কারিগরি সহায়তায় কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তির কাজটি হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হয় না। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ভর্তির কাজটি আলাদাভাবে হয়ে থাকে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার ভর্তিযোগ্য মোট কলেজ-মাদ্রাসা ৮ হাজার ১৫টি। এগুলোতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন আছে ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৬৩টি। এসব আসনের বিপরীতে আবেদন করেছিল ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৩১০ জন ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে ১০ লাখ ৪৭ হাজার ৯৬২ জন। বাকি ২৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেও ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়নি।
প্রথম ধাপের ফলে যে ৩৭৮টি কলেজ-মাদ্রাসায় কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়নি। তার মধ্যে রাজশাহী বোর্ডে ৫৬টি, দিনাজপুরে ৪২টি, ঢাকায় ৩৯টি, ময়মনসিংহে ৩৫টি, যশোরে ১৬টি, বরিশালে ১৩টি, কুমিল্লায় ১২টি, সিলেটে ৩টি ও চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীন একটি এবং ১৬১টি মাদ্রাসা।
সূত্র আরও জানায়, এবারে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সবমিলিয়ে পাস করা পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ লাখ ৮ হাজার ২১৮ জন। এর মধ্যে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৪ হাজার ৪১১ জন। কারিগরি থেকে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থী ছাড়াই এবার স্কুল-মাদরাসা থেকে এসএসসি ও দাখিল পাস করেছেন ১২ লাখ ৩ হাজার ৮০৭ জন। এর মধ্যে এইচএসসি ও দাখিলে ভর্তিতে আবেদন করেছেন ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৩৩৬ জন শিক্ষার্থী। সে হিসাবে একাদশে ভর্তিতে প্রথম ধাপে আবেদন করেননি ১ লাখ ৩০ হাজার ৪৭১ জন। উল্লেখ্য, কারগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি প্রক্রিয়া ভিন্নভাবে নেওয়া হয়। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়েও ভর্তির আবেদনের সুযোগ রাখা হয়েছে। যারা প্রথম দফায় আবেদন করেনি, তারা এই দুই ধাপেও আবেদন করতে পারবে।
এ প্রসঙ্গে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, অতীতে দেখা গেছে, দ্বিতীয় ধাপেও অনেকে আবেদন করে। এবারও তাই হবে বলে তাঁরা মনে করছেন। তবে প্রকৃত কারণটি পুরো ধাপ শেষ হওয়ার পরই বোঝা যাবে।