রাজধানীর গুলশানে দুই শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার গুলশান থানায় ব্যারিস্টার মো. ওমর শোয়েব চৌধুরীকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেছেন নির্যাতিত এক শিশুর বাবা জুয়েল মিয়া। নির্যাতনের শিকার এক শিশুর বয়স ১২ বছর ও অপরজনের ১১ বছর। তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে।
গত বুধবার মামলার এজাহার আদালতে আসার পর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব এজাহার গ্রহণ করে আগামী ১৪ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন দুই শিশুকে আদালতে হাজির করা হলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালত তাদের নির্যাতনের বর্ণনার জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। শিশু দুটিকে তাদের পরিবারের জিম্মায় দিয়েছেন আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, এক বছর আগে ১২ বছর বয়সি শিশুটিকে ৬ হাজার টাকা বেতনে নিকেতনের ওই বাসায় কাজ দেওয়া হয়। তখন বলা হয়েছিল, ওমর শোয়েব চৌধুরীর শিশুসন্তানকে দেখাশোনা করতে হবে। ৬ মাস আগে ১১ বছর বয়সি শিশুকেও ওই বাসায় কাজে পাঠায় তার পরিবার। ভিডিও কলে দুই শিশুকে তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হতো। তখন তাদের গা-মাথা ওড়নায় ঢেকে কথা বলাত। বড় বোনের বিয়ে উপলক্ষে ১২ বছর বয়সি মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যেতে তার বাবা জুয়েল মিয়া বাসার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন দুই শিশুকে একসঙ্গে নিয়ে যেতে বলা হয়। পরে গত ১৭ আগস্ট বাসার মালিক দুই শিশুকে এক ড্রাইভারকে দিয়ে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে পাঠান।
তখন তাদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যান জুয়েল। বাড়ি গিয়ে দেখেন ২ শিশুর হাত, পা, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য পোড়া, সেঁকা এবং আঘাতের চিহ্ন। দুই শিশু তখন জানায়, বাসায় কাজে সামান্য ভুলত্রুটি হলেই গৃহকর্তা ওমর শোয়েব চৌধুরী তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. সালাউদ্দিন কাদের সাউন বলেন, ‘দরিদ্র পরিবার, অভাব-অনটনের কারণে মেয়ে দুটিকে গৃহকর্মীর কাজে দিয়েছিল। কিন্তু তাদের পা টেপানোর মতো অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হতো। রাজি না হওয়ায় নির্যাতন করা হতো।’
অভিযোগের বিষয়ে ওমর শোয়েব চৌধুরী ও স্ত্রী সাথীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।