- রাকসু নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটারই অনাবাসিক শিক্ষার্থী
- আবাসন সুবিধা আছে মাত্র ৯ হাজার ৬৭৩ জনের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে মোট ভোটারসংখ্যা প্রায় ২৯ হাজার। এর দুই-তৃতীয়াংশ ভোটারই অনাবাসিক শিক্ষার্থী। এতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বিপাকে পড়ছেন হল সংসদের প্রার্থীরা। এ ক্ষেত্রে দলীয় ছাত্রসংগঠনগুলো নেতাকর্মী বেশি থাকায় কিছুটা সুবিধা পেলেও জটিলতায় পড়ছেন সেখানকার স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
হল সংসদের প্রার্থীরা বলছেন, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে জটিলতা পোহাতে হচ্ছে তাদের। তবে দলীয়দের প্রতিটি বিভাগে নেতাকর্মী আছে, যাদের মাধ্যমে ওই বিভাগের অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন। এ সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য প্রয়োজন শতভাগ আবাসিকতা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেদের জন্য ১১টি, মেয়েদের জন্য ৬টি হল। আন্তর্জাতিক ডরমিটরিতে থাকেন বিদেশি শিক্ষার্থী ও এমফিল-পিএইচডি পর্যায়ের গবেষকেরা। সব মিলিয়ে আবাসন সুবিধা আছে মাত্র ৯ হাজার ৬৭৩ জনের জন্য। অর্থাৎ শিক্ষার্থীর ৩২ শতাংশ হলে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন।
এ দিকে রাকসু নির্বাচনে ভোটার হতে পেরেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতোকত্তরের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা। রাকসুর ভোটার হয়েছেন মোট ২৮ হাজার ৯০১ জন শিক্ষার্থী। ফলে মোট ভোটারের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ আবাসিক সুবিধার আওতায় আছেন। এতে অনাবসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগে বিপাকে পড়েছেন হল সংসদের প্রার্থীরা।
সাবেক সমন্বয়ক ও নবাব আব্দুল লতিফ হল সংসদের শিবির সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী নুরুল ইসলাম শহীদ বলেন, ‘অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আমাদের কানেক্ট করতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য ভোটার তালিকা দেখে আমাদের আগে বিভাগ নিশ্চিত হতে হচ্ছে। পরে আমরা তাদের বিভাগে থাকা আমাদের বন্ধু ও বড় ভাইদের সহযোগিতায় যোগাযোগ করছি।’
শহীদ শামসুজ্জোহা হলে মোট ভোটার প্রায় ১ হাজার ৩০০। তবে হলের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটারই অনাবাসিক। জানতে চাইলে হল সংসদের স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী শিখর রায় বলেন, ‘আমার হলে মোট ভোটার প্রায় ১৩০০ জন। মাত্র এক-তৃতীয়াংশ হলে থাকে, বাকি সবাই মেসে। অনাবাসিকদের রিচ করা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি বা স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজন শতভাগ আবাসিকতা। এটা শুধু প্রার্থীদের সুবিধার্থে নয়, সব শিক্ষার্থীর সুবিধার্থে। কেননা আমি মনে করি, হলে সিট পাওয়া প্রতিটা শিক্ষার্থীর অধিকার।’
শাহ মখদুম হল সংসদের বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক প্রার্থী রাকিবুল ইসলাম স্বাধীন বলেন, ‘অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের রিচ করতে কষ্ট হচ্ছে। দলীয়রা প্রতিটি বিভাগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে ওই বিভাগের অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন। কিন্তু আমাদের বিষয়টি হচ্ছে, আমাদের প্রথমে একটি বিভাগের একজনকে রিচ করতে হচ্ছেÑ আমাদের জন্য এটা কষ্টকর।’
এ বিষয়ে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের দুইটি হলের কাজ চলছে। কামারুজ্জামান হলে এ বছরের ডিসেম্বরেই শিক্ষার্থীরা উঠতে পারবেন। ছাত্রীদের একটি হলের নির্মাণকাজ আগামী জুনে শেষ হওয়ার কথা। এ ছাড়া পাঁচটি নতুন হল নির্মাণের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে সরকারকে। শেরেবাংলা ফজলুল হক হল ভেঙে ১০ তলা ভবন করার প্রস্তাবও একনেকে পাঠানো হয়েছে। আমাদের এই সীমাবদ্ধতাগুলো কেটে গেলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’