২০১৭ সালে বুদ্ধিদীপ্ত চেহারার স্মার্ট ও সুদর্শন এক সচিব আসেন বিদ্যুৎ খাতে। ড. আহমদ কায়কাউস নামের এই সচিব এর আগে অতিরিক্ত সচিব হিসেবেও কাজ করেন দুই বছর। আবুল কালাম আজাদের পর এমন চতুর সচিব আর পায়নি বিদ্যুৎ বিভাগ। গণঅভ্যুত্থানে পতিত শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব হওয়ার আগ পর্যন্ত চতুরতা আর কৌশল দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে নিজের আঙ্গুলে ঘুরিয়েছেন কুইক রেন্টালের মাফিয়াখ্যাত এই সচিব। শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হওয়ার সুযোগে নিজের স্বেচ্ছাচারিতা দিয়ে বিদ্যুৎ খাতকে বানিয়েছিলেন হরিলুটের কারখানা। তার দুর্নীতির প্রক্রিয়া ছিলো সম্পূর্ণ ভিন্ন।
পূর্ববর্তী আবুল কালাম আজাদের বিশেষ আইনের প্রেক্ষিতে অনুমোদন দেওয়া কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে নিজের মুঠোয় নিয়ে কায়কাউস শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই পাচার করেছেন ২০ হাজার কোটি টাকা। কনসালটেন্ট থেকে শুরু করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন সবকিছু ছিল তার নিয়ন্ত্রণে। দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটের জন্য আওয়ামী শাসনামলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে যেমন ‘রেলের কালোবিড়াল’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো, তেমনি আহমদ কায়কাউসও ছিলেন ‘বিদ্যুতের কালোবিড়াল’।
জানা গেছে, শুধু কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোই নয়, দেশের প্রায় সব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেই নিয়মিত মাসোহারা নিতেন কায়কাউস। যা সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় পৌঁছে যেতো দেশের বাইরে। কিন্তু শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হওয়ায় তাকে ধরার সুযোগ তখন পাওয়া যায়নি। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর কায়কাউসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পাশাপাশি আদানিকে করফাঁকির সুযোগ করে দেওয়ারও তদন্ত করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কিন্তু দুই সংস্থার তদন্তই এখনো অনুসন্ধানের পর্যায়েই রয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অদৃশ্য কোনো শক্তির জোরেই এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে বিদ্যুতের এই কালোবিড়াল।
২০০৯ সালে বিদ্যুৎ সংকট দ্রুত মোকাবিলার জন্য ‘কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র’ স্থাপনের কৌশল আবিষ্কার করেন তৎকালীন বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ। নিয়ম করা হয়, এসব কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র যারা স্থাপন করবেন, তাদের বিদ্যুৎ সরকার কিনুক না কিনুক ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ প্রদান করা হবে প্রত্যেককে। এ ক্যাপাসিটি চার্জ প্রদান করা হবে ডলারে। আবুল কালাম আজাদ শুধু এ রকম একটি বিধিবদ্ধ আইনব্যবস্থাই করেননি, বরং এসব দুর্নীতি এবং লুণ্ঠন যেন আইন এবং বিচারের ঊর্ধ্বে থাকে, সেজন্য দায়মুক্তি আইন বা ইনডেমনিটি অ্যাক্টও করেছিলেন। এরই সুযোগ নিয়ে ২০১৭ সালে সচিবের দায়িত্ব পেয়ে দেশের সব কুইকরেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে নিজের অধীনে নিয়ে নেন কায়কাউস।
কায়কাউস নিজের দুর্নীতির কার্যক্রমে তৎকালীন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুকে পর্যন্ত তোয়াক্কা করেননি। তার দুর্নীতির প্রক্রিয়া ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। যেমন, যত কুইক রেন্টাল দেওয়া হয়েছিল, প্রতিটি কুইক রেন্টাল কোম্পানি জানত মাসের নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত টাকা যুক্তরাষ্ট্রের নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিতে হবে। এ টাকা না পৌঁছালে সেই কুইক রেন্টালের বিল আটকে দেওয়া হতো। আর এর মাধ্যমে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই পাচার করা হয় ২০ হাজার কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, ২০২৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি কায়কাউস যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে একটি সেলফ ডিক্লারেশন এফিডেভিট প্রদান করেন। এ ডিক্লারেশনের মাধ্যমে তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১২ মিলিয়ন ডলার বৈধ করে নেন।
কূটনীতি বিশেষজ্ঞ ড. ইমতিয়াজ আহমদ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘এই সেলফ ডিসক্লোজাল এফিডেভিট হলো এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে একজন ব্যক্তি তার অঘোষিত উপার্জনের অর্থ ‘অস্ত্র বা মাদক খাত থেকে উৎসারিত নয়’ মর্মে হলফনামা দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ জরিমানা দিয়ে অর্থ বৈধ করা। এর ফলে কায়কাউসের যুক্তরাষ্ট্রে যে সম্পদ এবং অর্থ রয়েছে সবই আইনের দৃষ্টিতে এখন বৈধ। যা তিনি করেছেন অত্যন্ত কৌশলে’।
নিজেকে দুর্নীতিবিরোধী ও সৎ ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন বাকপটু এই আমলা। কায়কাউসের সঙ্গে অন্য দুর্নীতিবাজদের একটা মৌলিক পার্থক্য যেটা, তা হলো অন্য দুর্নীতিবাজরা দেশে টাকা গ্রহণ করলেও তিনি তেমনটি করতেন না। তিনি সব টাকা নিতেন বিদেশে। বিদ্যুৎ সচিব থাকাকালেই তার স্ত্রী এবং কন্যা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। ঢাকায় তিনি এক ধরনের ব্যাচেলর জীবনযাপন করতেন। তবে তিনি তার পরিবারকে দেখার জন্য কদিন পরপরই যুক্তরাষ্ট্রে যেতেন। ৫ আগস্টের পর থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সময়ে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে রূপালী বাংলাদেশের অনুসন্ধানে।
সরকারি নথি এবং প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬ থেকে ২০২২-এ ৬ বছর আহমদ কায়কাউস যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন মোট ৫২ বার। অর্থাৎ প্রতি দুই মাসে তিনি অন্তত একবার যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। সবাইকে তিনি দেখাতে সক্ষম হন যে, তার পুত্র সেখানে থাকে, কন্যা সেখানে লেখাপড়া করে এজন্য তার যাওয়াটা প্রয়োজন। কিন্তু মূল বিষয় ছিল তার অর্থ পাচার করা। কায়কাউস যে সময় যুক্তরাষ্ট্রে যেতেন, সে সময় কোনো না কোনো কুইক রেন্টাল কোম্পানি অথবা বিদেশি কোনো এজেন্ট তার যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছানোর আগে বা পরে যুক্তরাষ্ট্রে যেতেন। সেখানে তাদের আর্থিক লেনদেন হতো বলে জানিয়েছেন বিদুৎ বিভাগের সাবেক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘এটা ছিল তখন ‘ওপেন সিক্রেট’। তার যাতায়াতের টিকিট সব আমার মাধ্যমেই বুকিং হতো। সঙ্গে কোনো কোম্পানির প্রতিনিধি যাবে তাও নির্ধারণ করে দেওয়ার নির্দেশনা ছিল আমার ওপর। যেহেতু চাকরি করি তাই তাদের আদেশ মানতে আমরা তখন বাধ্য ছিলাম। সেখানে ঠিক কোনো কোম্পানির কাছ থেকে কত পরিমাণ অর্থ আদায় করবেন তাও কোম্পানির সঙ্গে আমার মাধ্যমেই নেগোসিয়েশন করতে হতো। এখন সে ঠিকই বহাল তবিয়তে যুক্তরাষ্ট্রে আয়েশী জীবন কাটাচ্ছে। আর আমরা যারা তাদের নির্দেশ পালন করেছি শুধু তাদের পোহাতে হচ্ছে মানবেতর জীবন-যাপন’।
এমনই আরেক কর্মকর্তার সঙ্গে সম্প্রতি দেখা হয় রাজধানীর হাতিরঝিলের মধুবাগ ব্রিজে। তিনি ছিলেন কায়কাউসের ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের একজন। সরকারি কর্মচারী না হলেও কায়কাউস তাকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তার কাজ ছিল কোন কোম্পানির কাছ থেকে কত টাকা আদায় হয়েছে তার হিসাব রাখা। এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনাকে দেখে আমি প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম। এই বুঝি পুলিশ ডেকে আনবেন। কি করব বলেন? পেটের দায়ে তাদের নির্দেশনা শুধু পালন করেছিলাম। এখন দিনের বেলায় ঘর থেকে বের হতে ভয় করে।’
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে কায়কাউস তার স্ত্রী এবং কন্যার নামে অন্তত আটটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এগুলো সবই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। ‘কে কে কনসালট্যান্ট’ বা ‘গ্রিন এনার্জি লিমিটেড’, ‘ক্লাইমেট অ্যান্ড পাওয়ার’ ইত্যাদি নামে নানা রকম কনসালট্যান্সি ও গবেষণা ফার্ম স্থাপন করা হয়েছে। সবকটির পেছনেই আছেন কায়কাউস এবং তার পরিবার। মূলত এ ধরনের কনসালট্যান্সি ফার্মের মাধ্যমেই বাংলাদেশ থেকে পাচারের টাকা যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপদে সরিয়েছেন এবং সেখানে বিনিয়োগ করেছেন তিনি। কথা শেষ করে নিজের নাম না প্রকাশের অনুরোধও করেন তিনি।
অত্যন্ত চতুর এই সাবেক সচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তৎকালীন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বিভিন্ন দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করে তার আস্থা অর্জন করে। এর মাধ্যমে তিনি নিজের দুর্নীতির অলিখিত অনুমোদন নিয়ে নেন। এর ফলে কায়কাউস দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই অন্তত ৬৮টি বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা কুইক রেন্টালের লাইসেন্স কৌশলে আটকে দেন। এর বাইরেও যেসব কুইক রেন্টালের নতুন অনুমোদন দেওয়া হয় কায়কাউস সেগুলোর বিষয়েও তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। এদের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং কার্যকারিতা নিরীক্ষা করার জন্য পৃথক আরেকটি কমিটি গঠন করেন। এটি ছিল মূলত এসব কুইক রেন্টাল কোম্পানিকে বাগে আনা এবং তাদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ আদায়ের কৌশল। কুইক রেন্টাল কোম্পানিগুলো বাধ্য হয়ে কায়কাউসের দ্বারস্থ হতে শুরু করে। অনেকটা ব্যবসায়ীদের জিম্মি করেই কায়কাউস তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়মিতভাবে আদায় করতে থাকেন।
এখানেই দমে যাননি ধুরন্ধর এই কর্মকর্তা। বিদ্যুৎ খাতে নিজের প্রভাব যখন আকাশছোঁয়া তখন তিনি নেন আরেকটি কৌশল। কায়কাউস বুঝতে পেরেছিলেন আবুল কালাম আজাদের কর্তৃত্ব যদি খর্ব না করা যায়, তাহলে বিদ্যুৎ খাতের পুরোপুরি দখলদারিত্ব সম্ভব হবে না। আর এ কারণেই তিনি আবুল কালাম আজাদকে শেখ হাসিনার প্রভাববলয় থেকে দূরে ঠেলে দেন। আবুল কালাম আজাদের বিভিন্ন দুর্নীতি-অনিয়ম সম্পর্কে একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেন। এর ফলে শেখ হাসিনার সঙ্গে আবুল কালাম আজাদের দূরত্ব তৈরি হয়।
আহমদ কায়কাউস ছিলেন ধুরন্ধর প্রকৃতির দুর্নীতিবাজ মাফিয়া। তিনি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে মিলেমিশে দুর্নীতি করার নীতিতেও বিশ্বাসী ছিলেন না। বিদ্যুৎ বিভাগে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য একের পর এক কৌশল আঁটেন এই কায়কাউস। এভাবে কায়কাউস ২০১৭ সালের শেষ সময় থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন পর্যন্ত বিদ্যুতের কালোবিড়ালে পরিণত হন। বিদ্যুৎ খাতে কী হবে, না হবে, কোথায় কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে, কী কেনাকাটা হবে সব নির্ধারিত হতো তার মাধ্যমেই।
বর্তমানে বন্ধ থাকা একটি কুইক রেন্টালের কর্ণধার নাম প্রকাশ না করার শর্তে রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘তিনি যখন যুক্তরাষ্ট্রে কায়কাউসের জন্য টাকা দিয়েছেন, তখন সঙ্গে সঙ্গে তাকে মার্কিন আইন অনুযায়ী ট্যাক্সের টাকা আলাদাভাবে দিতে হয়েছে। ট্যাক্সের টাকা না দেওয়া হলে সে টাকা নিতেন না কায়কাউস। ঘুষ লেনদেনে তার শর্তই ছিল ট্যাক্সসহ টাকা দিতে হবে। ট্যাক্সের টাকা পরিশোধ করতে হবে। এখন যদি প্রতিটি কুইক রেন্টালের অডিট হিসাব নিরীক্ষা করা যায়, তাহলে দেখা যাবে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে তারা টাকা পাঠিয়েছেন। কোন কনসালট্যান্সি ফার্মে তারা দিয়েছেন। প্রতিটি কনসালট্যান্সি ফার্ম আহমদ কায়কাউসের নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান’।
অন্তর্বর্তী সরকারকে এই বিদ্যুৎ মাফিয়ার বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন জ¦ালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম। রূপালী বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ এমন একটি খাত যেখানে বৃহৎ প্রকল্পগুলো নেয়া হতো। এখানে প্রচুর অর্থ। ফলে অনেক কিছু বিবেচনায় নিলে এ মন্ত্রণালয় হাতছাড়া করতে চান নি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখানে বিভিন্ন চুক্তি পাস করানোর জন্য বিগত সরকার তাদের পছন্দের সচিবদের নিয়োগ দিয়েছিল। এমনকি তারা বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন কোম্পানিতে চেয়ারম্যান হিসেবে বোর্ড পরিচালনা করত। তারা তাদের পছন্দমতো প্রকল্প পাস করাত, যেখানে ছিল বিপুল পরিমাণ কমিশন বাণিজ্য। এসব কারণেই এ মন্ত্রণালয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর এই খাতের দুর্নীতবাজদের মধ্যে অন্যতম কায়কাউসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেশের টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা হোক’।
সাবেক এই আমলার দুর্নীতি ও অর্থপাচারের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কি না জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মুঠোফোনে বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরে সবচেয়ে বেশি লুটপাট হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে। এই খাতের লুটেরাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আহমদ কায়কাউস বিদেশে পলাতক। আমরা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে নিশ্চয়ই কথা বলব। আশা করি, তিনি তার কৃতকর্মের শাস্তি পাবেন’।
এদিকে কায়কাউসের বিরুদ্ধে এনবিআরকে পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির অভিযোগের প্রেক্ষিতের তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। যা চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই শুরু করা হয়। এখনো এটি অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিমের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। আহমেদ কায়কাউসের দুর্নীতির বিষয়ে যাবতীয় রেকর্ডপত্র দিতে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন