ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) পরিসংখ্যান, পদার্থবিজ্ঞান ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে আবাসিক হল ও বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেনÑ ১৬তম ব্যাচের মার্কেটিং বিভাগের সাফায়েত শুভ, শাহরিয়ার অপু, সজীব, সৌরভ, নাজমুজ সাকিব, রোহান সরকার, জিহাদ ও ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. ইলিয়াছ প্রামাণিককে আহ্বায়ক ও প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমানকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থী ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘জেন-জি ফুটবল টুর্নামেন্ট’-এর সেমিফাইনাল খেলায় মার্কেটিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার অপুর সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরই জেরে গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চকবাজার এলাকায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করে পরিসংখ্যান বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাকে বাঁচাতে গেলে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইউসুফও হামলার শিকার হন। পরে তিন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। এ সময় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একটি শ্রেণিকক্ষ ভাঙচুর ও একটি হলে কক্ষ ভাঙচুর করা হয়।
ঘটনা সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা ড. ইলিয়াছ প্রামাণিক ও রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৮ জনকে বহিষ্কার করে।
এদিকে মারধরের সঙ্গে তিন বিভাগের শিক্ষার্থী জড়িত থাকলেও শুধু মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক শিক্ষার্থী। তারা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘মারধর ও ভাঙচুরের বিষয়ে আরও অধিকতর আইডেন্টিফাই করার জন্য ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা এসবে জড়িত তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্ক মুক্ত করার জন্য তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করতে হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন