উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের পর ‘গণভোট অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি। গত মঙ্গলবার রাতে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করা হয়। এর আগে, সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, গণভোটে নাগরিকদের সামনে একটি নির্দিষ্ট প্রশ্ন উপস্থাপন করা হবে এবং ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’ ভোটের মাধ্যমে মতামত নেওয়া হবে। প্রশ্নটি হলোÑ ‘আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত প্রস্তাবসমূহের প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?’
প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোর মধ্যে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যবিশিষ্ট একটি ‘উচ্চকক্ষ’ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে এই উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
পাশাপাশি সংসদে নারী প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাসহ তপশিলে বর্ণিত ৩০টি বিষয়ে জুলাই জাতীয় সনদে ঐকমত্য হয়েছে।
আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী রাজনৈতিক দলগুলো এসব বিষয় বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে। জুলাই জাতীয় সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কারও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।
অধ্যাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হবে, সেসব কেন্দ্রেই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সংসদ নির্বাচনের জন্য কমিশন যেসব রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ ও অধিক্ষেত্র নির্ধারণ করবে, তারাই গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত বলে গণ্য হবেন।

