ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫

৪৭তম বিসিএস 

লিখিত পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা পরীক্ষার্থীদের

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২৫, ১২:০১ এএম

টানা আন্দোলনের পরও ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার তারিখ না পেছানোয় পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণদের প্রার্থীদের একাংশ। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সুযোগ না দেওয়া, পুরোনো ও নতুন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি এবং আন্দোলনকারীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর কারণে তাদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত হয়েছে। ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার্থী ব্যানারে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাইফ মুরাদ।

সাইফ মুরাদ বলেন, ‘আমরা সরকারের ওপর আস্থা রেখেছিলাম। কিন্তু একাধিক পক্ষ একত্র হয়ে আমাদের সঙ্গে জুলুম করল। আমরা এই লিখিত পরীক্ষা বর্জন করছি। আমাদের সঙ্গে আরও অনেকেই বর্জন করবে। এই বিসিএস হবে সর্বকালের সব থেকে কম পরীক্ষার্থীর বিসিএস।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জুলুমের শিকার হয়েছি। জুলুম থেকে বাঁচার জন্য সবার সাহায্য চেয়েছি। কিন্তু আমরা হেরে গেছি।’

পরীক্ষার্থীদের দাবি, লিখিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি না বদলানোয় বহু শিক্ষার্থী বাস্তবিকভাবে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। তাই ‘মানবিক বিবেচনা’ থেকে পরীক্ষাটি পিছিয়ে নেওয়ার আহ্বান আর গুরুত্ব পায়নি বলেই তারা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

পরীক্ষার্থীদের মুখপাত্র সাইফ মুরাদ বলেন, ‘দেশে এমন একটি সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে যেখানে পেশিশক্তির ওপর ভিত্তি করে বহু অযৌক্তিক দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়া হয়। অথচ তাদের দাবি ছিল শুধু সময়। যাতে নতুন পরীক্ষার্থীরা প্রস্তুতির সুযোগ পায় এবং পুরোনো পরীক্ষার্থীদের তুলনায় প্রতিযোগিতায় বৈষম্যে না পড়েন।’

লিখিত পরীক্ষার রুটিন নিয়ে তিনি বলেন, ‘পুরোনো পরীক্ষার্থীরা মাত্র তিন মাস আগে আরেকটি লিখিত পরীক্ষা দিয়ে এসেছেন। ফলে তারা প্রস্তুত থাকতে পারেন। কিন্তু নতুন পরীক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।’ এটিকে ‘বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।

সাইফ মুরাদ অভিযোগ করেন, তাদের আন্দোলনের সময় ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। কারো মাথায় ১০টিরও বেশি সেলাই লেগেছে। আহত অবস্থায় পরীক্ষায় বসা অসম্ভব হলেও পিএসসি বা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধিই খোঁজ নেননি।

পরীক্ষার তারিখ পেছানোর দাবিতে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছিল পরীক্ষার্থীরা। গত মঙ্গলবার আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায়ে যমুনা অভিমুখী পদযাত্রা শুরু করলে শাহবাগে আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে দুই দফা সংঘর্ষ হয় আন্দোলনকারীদের। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন। শাহবাগ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানেও একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন পরীক্ষার্থীরা।

এদিকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) ঘোষণা অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে। ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে একযোগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডারের পদসংশ্লিষ্ট বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা চলবে আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।