রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসানাত লোকমান

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ১২:৩৪ এএম

গরিব যে কারণে সারা জীবন গরিব থাকে:

হাসানাত লোকমান

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ১২:৩৪ এএম

গরিব যে কারণে সারা জীবন গরিব থাকে:

মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী একটি দিক হলো তার অর্থনৈতিক অবস্থা। কেউ ধনী, কেউ গরিব এই ব্যবধান কখনো জন্মসূত্রে, কখনো ব্যবস্থাগত, আবার কখনো নিজস্ব চিন্তা ও আচরণের ফল। তবে একটি প্রশ্ন আমাদের বারবার ভাবায়: ‘গরিব কেন সারা জীবন গরিবই থেকে যায়?’
এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে হলে আমাদের আয়ের ধরন, অর্থ ব্যবস্থাপনা, বিনিয়োগের অভ্যাস এবং মানসিকতার গভীরে প্রবেশ করতে হবে।

সাধারণত আয়ের মূল তিনটি ধরন থাকে: 
১. অ্যাকটিভ ইনকাম (অপঃরাব ওহপড়সব): এটি হলো সরাসরি শ্রম ও সময়ের বিনিময়ে অর্জিত আয়। চাকরি, ব্যবসা, টিউশনি, ডেলিভারি, রিকশা চালানো কিংবা দোকান চালানো সবই অ্যাকটিভ ইনকামের উদাহরণ।
এই আয়ের কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, সময়ের সঙ্গে আপনার আয়। এটাকে যদি এভাবে ব্যাখা দেওয়া যায় তাহলে বুঝতে সুবিধা হবে-  
সময়=টাকা: আপনি যতক্ষণ কাজ করবেন, ততক্ষণই আয় হবে। আপনি অসুস্থ, ছুটিতে বা অবসরকালীন এই আয় বন্ধ। এই আয় জীবনধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও দীর্ঘমেয়াদে ধনী হওয়ার জন্য এটি একা যথেষ্ট নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, অধিকাংশ মানুষ জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধু এই অ্যাকটিভ ইনকামেই নির্ভর করে থাকে। এতে আয় সীমিত, ভবিষ্যৎ অনিরাপদ।

২. প্যাসিভ ইনকাম (চধংংরাব ওহপড়সব): প্যাসিভ ইনকাম মানে হলো আপনি সক্রিয়ভাবে সময় বা শ্রম না দিয়েও আয় পাচ্ছেন। এই আয়ের একাধিক ক্ষেত্র রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বাড়িভাড়া, ইউটিউব বা ব্লগিং থেকে বিজ্ঞাপন আয়, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, একবার বানানো কোর্স থেকে বারবার বিক্রি, মিউজিক বা বইয়ের রয়্যালটি
এই ইনকাম তৈরির জন্য প্রাথমিকভাবে পরিশ্রম ও সময় দিতে হয়, কিন্তু একবার সেটআপ হয়ে গেলে তা নিজের গতিতে চলতে থাকে। এই ইনকামই ধনী ও গরিবের মধ্যে অন্যতম পার্থক্য তৈরি করে।
৩. পোর্টফোলিও ইনকাম (চড়ৎঃভড়ষরড় ওহপড়সব): এই ইনকাম আসে বিনিয়োগ থেকে। আপনি যখন আপনার টাকাকে কাজ করতে শেখান, তখনই এটি তৈরি হয়। এই ইনকামের মধ্যে রয়েছে- শেয়ারবাজার, রিয়েল এস্টেট, মিউচুয়াল ফান্ড, স্টার্টআপে বিনিয়োগ, ক্রিপ্টোকারেন্সি (সতর্কতায়)। 
যারা অর্থ ব্যবস্থাপনায় সচেতন, তারা জানেন যে শুধু আয় করলেই চলে না, আয়ের একটি অংশ ইনভেস্ট করতে হয় ভবিষ্যতের নিরাপত্তার জন্য।

এবার জেনে নেওয়া যাক গরিব মানুষ গরিব থাকে কেন?
১. অজ্ঞতা ও অর্থনৈতিক শিক্ষা না থাকা
অধিকাংশ মানুষ জানেন না প্যাসিভ ইনকাম বা পোর্টফোলিও ইনকাম কীভাবে তৈরি করতে হয়।
তারা শুধু ‘চাকরি করো’, ‘বেতন নাও’, ‘টাকা জমাও’ এই ধারণাতেই সীমাবদ্ধ থাকেন। অথচ ধনী হতে হলে জানতে হয় টাকা কীভাবে কাজ করে, ঝুঁকি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, সময়ের সঙ্গে সম্পদ কীভাবে বৃদ্ধি পায় এর মতো একাধিক বিষয়। 
২. মানসিকতা ও ভয়
গরিব মানুষ অনেক সময় ভয় পান নতুন কিছু শেখা বা চেষ্টা করতে। ‘ইনভেস্ট করলে টাকা ডুবে যাবে না তো?’, ‘ইউটিউবে কি সত্যিই আয় হয়?’, ‘ফেসবুকে কাজ করে আয় করা যায়?’ এ ভয় ও সন্দেহ তাদের আগের অবস্থাতেই আটকে রাখে।

৩. দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব
ধনী মানুষ বছরের পরিকল্পনা করেন, গরিব মানুষ দিনের চিন্তায় ডুবে থাকেন। যেখানে এক পক্ষ ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিনিয়োগ করে, অন্য পক্ষ খরচ করে মোবাইল, জামাকাপড়, বাইক ইত্যাদিতে।
৪. ২০-৮০ নিয়মে আটকে থাকা
বিশ্বজুড়ে ২০ শতাংশ মানুষ পৃথিবীর ৮০ শতাংশ সম্পদের মালিক। এই ২০ শতাংশ মানুষ জানেন কীভাবে সম্পদ গড়া যায়। তারা কাজ করেন একবার, উপার্জন করেন বারবার।
অন্যদিকে ৮০ শতাংশ মানুষ সারা জীবন কাজ করেন, কিন্তু তাদের টাকা তাদের জন্য কাজ করে না। ফলে সারা জীবন তারা গরিব থেকে যান।
যারা শুধু অ্যাকটিভ ইনকামে নির্ভর করেন, তাদের জন্য ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। চাকরি চলে গেলে আয় বন্ধ, অসুস্থ হলে আয় বন্ধ, বয়স বাড়লে কাজ করা সম্ভব নয়।
এ অবস্থায় যদি কেউ আগে থেকে প্যাসিভ বা পোর্টফোলিও ইনকাম তৈরি না করেন, তাহলে তাকে বাকি জীবন অর্থকষ্টে কাটাতে হয়।
 সম্ভাবনার দরজা খুলে দিন: অ্যাকটিভ ইনকাম থেকে প্যাসিভ ইনকামে রূপান্তর করুন

ধাপে ধাপে পরিকল্পনা করুন
✅ ঝঃবঢ় ১: অ্যাকটিভ ইনকাম থেকে কিছু অংশ সঞ্চয় করুন
✅ ঝঃবঢ় ২: নিজের দক্ষতা বাড়ান (ডিজিটাল মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং, ব্লগিং, কোডিং)
✅ ঝঃবঢ় ৩: একটি প্যাসিভ ইনকামের উৎস শুরু করুন (ইউটিউব চ্যানেল, অনলাইন কোর্স, ব্লগ)
✅ ঝঃবঢ় ৪: ধীরে ধীরে ইনভেস্টমেন্ট শুরু করুন (রিসার্চ করে শেয়ার, ফান্ড, রিয়েল এস্টেট)
✅ ঝঃবঢ় ৫: আয় পুনরায় বিনিয়োগ করুন পড়সঢ়ড়ঁহফ মৎড়ঃিয তৈরি করুন

একটি ছোট উদাহরণ
মাসে আপনি যদি ৫ হাজার টাকা বাঁচিয়ে বছরে ৬০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করেন এবং প্রতিবছর গড়ে ১০ শতাংশ রিটার্ন পান, তাহলে ১০ বছরে তা দাঁড়াবে প্রায় ১০ লাখ টাকার বেশি।
আপনি ধনী হবেন সময় ও ধৈর্য দিয়ে হড়: লটারি বা ভাগ্যের মাধ্যমে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!