মালয়েশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি অর্থনৈতিকভাবে দ্রুতবর্ধনশীল দেশ। উন্নত অবকাঠামো, শিল্পকারখানা, পর্যটন, ও কৃষি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের কারণে এখানে বিদেশি শ্রমিকের চাহিদা সবসময়ই বেশি। বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই একটি বড় শ্রমবাজার, যেখানে প্রতি বছর হাজার হাজার বাংলাদেশি জীবিকা অর্জনের জন্য যান।
গত মালয়েশিয়া ১০ জুলাই ২০২৫ তারিখে একটি অফিসিয়াল সার্কুলার জারি করে, যেখানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য আগে যেসব একক-প্রবেশ দেওয়া হতো, সেগুলো মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসায় এমইভি রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যারা ইতোমধ্যেই ঝঊঠ এবং ঞবসঢ়ড়ৎধৎু ঊসঢ়ষড়ুসবহঃ ঠরংরঃ চধংং (চখকঝ) পেয়ে থাকেন, তাদের ভিসার জন্য নতুনভাবে আবেদন করতে নাগাদ প্রয়োজন হবে না। পরবর্তী চখকঝ নবায়নের সময় এমইভি স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রদান করা হবে। এই নির্দেশনা অনুযায়ী, সকল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের কাছে এমইভি-ফ্যাসিলিটি কার্যকর করা হয়েছে। গত ৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে মালয়েশিয়ার হোম মিনিস্ট্রি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে যে, এমইভি কার্যক্রম আজ থেকেই কার্যকর হয়েছে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় বৈধ টেম্পোরারি ওয়ার্ক ভিজিট পাস (পিএলকেএস) এবং সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসাধারী বাংলাদেশি শ্রমিকদের আলাদাভাবে এমইভির জন্য আবেদন করতে হবে না। পিএলকেএস নবায়নের সময় ইমিগ্রেশন বিভাগ আন্তর্জাতিক প্রবেশপথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এমইভি ইস্যু করবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই উদ্যোগ অভিবাসী শ্রমিকদের যাতায়াত প্রক্রিয়া সহজ করবে, ইমিগ্রেশন পাসের অপব্যবহার রোধ করবে এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করবে। পাশাপাশি, বিদেশে অবস্থিত মালয়েশিয়ান মিশনে নতুন ভিসা আবেদনের চাপ কমবে।
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মরত শ্রমিকদের জন্য এমইভি সুবিধা চালুর দাবি জানানো হচ্ছিল। ধারাবাহিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলেই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে বলে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে।
গত মে মাসে মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। আলোচনার পর ১০ জুলাই এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করা হয়।
বর্তমানে মালয়েশিয়া ১৫ দেশ থেকে শ্রমিক নেয়, তবে এতদিন শুধু বাংলাদেশি কর্মীদের সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা দেওয়া হতো, যা তাদের জন্য নানা ভোগান্তির কারণ ছিল। এমইভি চালুর ফলে এখন বাংলাদেশি
শ্রমিকরা একাধিকবার যাতায়াতের সুযোগ পাবেন এবং ভ্রমণ সুবিধা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।
আপনার মতামত লিখুন :