ছোট পর্দার অভিনেত্রী সাফা কবির। এক সময়ের ব্যস্ত এই অভিনেত্রীকে আগের চেয়ে এখন কাজে কম পাওয়া যায়। গত বছরের শেষ দিকে মাদককা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজন অভিনেত্রীর সঙ্গে তারও নাম উঠে আসে। এরপর কাজ থেকে অনেকটাই নিজেকে গুটিয়ে নেন নিজেকে। এ নিয়ে তখন একদমই চুপ ছিলেন এই অভিনেত্রী। অবশেষে প্রায় এক বছর পর এ বিষয়ে মুখ খুললেন সাফা।
সে সময়ের দুর্বিষহ স্মৃতিচারণ করে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার খবরটি প্রকাশ করা হয়। রোববার একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি করার কথা ছিল। কিন্তু এমন খবরের কারণে তারা সেটা বাতিল করে দেয়। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম যে এটা শুধু একটা নিউজ। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু তাদের কাছে এটা কীভাবে প্রমাণ করব?’
কথার সূত্র ধরে অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমার কাছে প্রমাণ করার কিছু নেই, বোঝানো ছাড়া। আমার সিনিয়র শিল্পীরা আমার সঙ্গে কাজ বাতিল করে দিচ্ছিল। বিতর্ক এড়াতে আমার সঙ্গে কেউ কাজ করতে চাইছিল না। আমিও বুঝতে পারছিলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটা নিয়ে ঝড় চলছে।’
প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘সংবাদটি দেখার পর একদম শকড হয়েছিলাম। কী হচ্ছে, এমনটাই শুধু ভাবছিলাম। এটা কেমন নিউজ। তারপর কেউ আর কোনো আপডেট দিতে পারল না। এ খবর প্রকাশের পর আমার ক্ষতি হলো। তিন-চারটি মেয়েকে নিয়ে যে নিউজ হলো, একটিবার তাদের কথা চিন্তা করল না। তাদের জীবনের কী হবে?’
সেই কঠিন সময় পাশে পেয়েছিলেন শোবিজের কয়েকজন বন্ধুকে। সাফার কথায়, ‘সে সময় আমার শোবিজের বন্ধুরা পাশে দাঁড়িয়েছিল। তৌসিফ মাহবুব তখন বলেছিল, আমি সাফার সঙ্গে কাজ করব। এ ছাড়া জোভান অনেক সহযোগিতা করেছে, সিয়ামও সে সময় মানসিকভাবে পাশে ছিল। আমার এ বন্ধুরা অনেক সুন্দর। এখানে কাজ করে এত ভালো বন্ধু আমি পেয়েছি। অনেকেই বলেন মিডিয়ার মানুষেরা বন্ধু হয় না, আমি এর সঙ্গে কানেক্ট করতে পারি না।’
এ অভিনেত্রীর ভাষ্যমতে, না জেনে কারো সম্পর্কে কোনো কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া যেমন ঠিক নয়, তেমনি প্রমাণ ছাড়া কাউকে অপরাধী ধরে নেওয়াও অন্যায়। সাফা কবির বলেন, ‘আমরা হুজুগে অনেক কিছুই করে ফেলি। কিন্তু একবারও চিন্তা করি না, এ ধরনের কর্মকা- কী প্রভাব ফেলবে মানুষটির জীবনে। আমাদের একটি পরিবার আছে, ওয়ার্ক লাইফ আছে, কেউ কি এসব চিন্তা করে?’
তিনি বলেন, মানুষ এমনিতেই মিডিয়াকে ভালো চোখে দেখে না। এ ধরনের খবরের জন্য মা-বাবাদের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি হয়, তাদের সন্তানরা সুরক্ষিত না এখানে, তাদের কাজ করতে দেওয়া যাবে না এখানে। আমার কাছে মনে হয়, কোনো কিছু করার আগে অন্তত দুবার ভেবে নেওয়া প্রয়োজন।’
সে সময় তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, মাদক ব্যবসার বিষয়ে মৌখিক স্বীকারোক্তির একপর্যায়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র অরিন্দম রায় দীপের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং পরীক্ষা করা হয়। এতে জনপ্রিয় কয়েকজন অভিনেত্রীর মাদক সম্পৃক্ততার তথ্য মেলে। এমনকি তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া মাদকের অর্ডারসংক্রান্ত কয়েকটি সুনির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং রেকর্ডও পাওয়া যায়। এরপর এ নিয়ে আর তথ্য পাওয়া যায়নি।