পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আমন ধান চাষে নতুন করে দেখা দিয়েছে শামুকের আক্রমণ। বৃষ্টির কারণে পানিতে তলিয়ে যাওয়া বীজতলায় এখন শামুক চারা গাছের কচিপাতা ও মূল খেয়ে ফেলছে। এতে বীজতলার ধানগাছ নিস্তেজ হয়ে পড়ে মারা যাচ্ছে। ফলে আমন ধান রোপণে সংকটে পড়েছেন উপজেলার হাজারো কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩৪ হাজার ৭১৮ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বীজতলা তৈরি হয়েছে ১ হাজার ২০২ হেক্টর জমিতে। অতিবৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৫৬১ হেক্টর বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন সেই জমিগুলো শামুকের দখলে।
শৌলা গ্রামের কৃষক নয়ন খান বলেন, ‘প্রথমবার বীজতলা করেছিলাম, বৃষ্টির পানিতে তা ভেসে যায়। দ্বিতীয়বারও পানির নিচে চারা তলিয়ে গেছে। এখন যা আছে, তা শামুক খেয়ে ফেলছে। চারা না পেলে জমি ফাঁকা থাকবে।’
একই গ্রামের বাবুল হাওলাদার জানান, ‘আগে শামুক তেমন ক্ষতি করত না। এবার পানির কারণে শামুক বেড়েছে। শত শত শামুক চারা গাছের গোড়া খেয়ে ফেলছে। বাধ্য হয়ে এখন চারা কিনে রোপণ করতে হবে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিলন বলেন, ‘এটা প্রাকৃতিক সমস্যা। বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে থাকায় শামুকের বিস্তার বেড়েছে। কৃষকদের আমরা হাতে কুড়িয়ে শামুক সরানোর পরামর্শ দিচ্ছি। পানি কমে গেলে কার্বোফুরান জাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে তা মাছের পুকুরে না যায়।’
তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। আশা করা যাচ্ছে, সংকট সত্ত্বেও আমন চাষ ব্যাহত হবে না।
কৃষকরা বলছেন, সময়মতো সরকারি সহায়তা না পেলে আমন ধান উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে। তারা দ্রুত বীজ সরবরাহ ও শামুক দমন কর্মসূচির দাবি জানিয়েছেন।