ঢাকা বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

ছাত্রজীবনে বিনাটিকিটে ট্রেন ভ্রমণ, ৫২৫ টাকায় দায়মুক্ত হলেন এক প্রকৌশলী

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৭:১২ এএম
টিটিই আবদুল আলীম মিঠুর কাছে ৫২৫ টাকা দিয়ে দায়মুক্তি নেন হোসাইন আলম। ছবি- সংগৃহীত

ছাত্রজীবনে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করেছিলেন হোসাইন আলম। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে, কখনো পিকনিকে কিংবা স্রেফ ঘোরাঘুরিতে। সে সময় ভাড়া দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না, চিন্তাও করতেন না। কিন্তু সময়ের পালাবদলে আজ তিনি সরকারি চাকুরে-নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)-এর ঈশ্বরদী কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী। সময়ের সঙ্গে বেড়েছে তার দায়িত্ববোধও।

চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে এক ধরনের অনুশোচনায় ভুগছিলেন হোসাইন। ছাত্রজীবনের বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণের ভাড়ার হিসাব মেলাতে চাইছিলেন, কিন্তু কিভাবে সেটি করবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না।

শেষ পর্যন্ত সোমবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাতে ঢাকা থেকে ঈশ্বরদীগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনার (টিটিই) আবদুল আলীম মিঠুর কাছে ৫২৫ টাকা দিয়ে দায়মুক্তি নেন তিনি।

টিটিই মিঠু জানান, হোসাইন আলম ট্রেনে উঠে তার সঙ্গে দেখা করেন এবং বিষয়টি খুলে বলেন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরামর্শে ট্রেনটির সর্বোচ্চ ভাড়া ৫২৫ টাকা ধার্য করে তিনি সেটি সরকারি কোষাগারে জমা করেন।

হোসাইন আলম বলেন, ছাত্রজীবনে পয়সার অভাবে টিকিট কাটা হতো না। অনেকবার এভাবে ট্রেনে যাতায়াত করেছি। কিন্তু চাকরিতে ঢোকার পর থেকে মনে হচ্ছিল-ঋণ রয়ে গেছে। আজ সেটা শোধ করে অন্তর থেকে তৃপ্তি পেয়েছি। আর কখনো বিনা টিকিটে ভ্রমণ করব না।

তিনি আরও বলেন, যারা আগে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করেছেন, তারাও চাইলে এভাবে পরিশোধ করতে পারেন। এতে নিজেকে অনেক হালকা মনে হয়।

টিটিই আবদুল আলীম মিঠু বলেন, চাকরিজীবনে এমন ঘটনা এই প্রথম। হোসাইন আলম নিজেই এসে টাকা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তার মতো অনেকে যদি এভাবে দায়িত্ববান হন, তবে রেলওয়ের রাজস্ব আয় বাড়বে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক লিয়াকত শরীফ উদ্দিন খান বিষয়টিকে ব্যতিক্রমী উদাহরণ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, এটি খুবই প্রশংসনীয়। এমন সততা সমাজে ইতিবাচক বার্তা দেবে। অনেকে এখনো বিনা টিকিটে যাতায়াত করেন। তবে এই ঘটনা তাদের ভাবতে বাধ্য করবে।