যখন দল ব্যাটিং বিপর্যয়ে, তখন স্রোতের ঠিক বিপরীতে দাঁড়িয়ে যে ব্যাটার বুক চিতিয়ে লড়াই করতে পারেন, তার নাম জাকের আলী অনিক। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এমনই এক সাহসী ইনিংস উপহার দিলেন তিনি। টি-টোয়েন্টির দ্রুতগতির খেলায় তিনি রান তুলেছেন কৌশলে, শারীরিক দৃঢ়তায়, এবং ছক্কায় ছক্কায়!
৫৫ রানের ইনিংসটিকে হয়তো অনেকে সংখ্যায় ছোট বলবেন। তবে ৪৮ বলে ১টি চার ও ৫টি ছক্কায় সাজানো এই ইনিংসটাই ছিল ম্যাচজয়ের চাবিকাঠি।
ম্যাচসেরা জাকের নিজেই বললেন, আমি যতই ভালো খেলি না কেন, দল না জিতলে সেটা আমি নিজের ইনিংস হিসেবে গোনাই না। যেহেতু দল জিতেছে, ইনিংসটাকে হিসেব রাখলাম।
গত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটার ছিলেন এই ডানহাতি উইকেটকিপার-ব্যাটার। দুই টেস্টে ১৭৬ রান, তিন টি-টোয়েন্টিতে ৬০ গড়ে ১২০ রান এবং তিন ওয়ানডেতে ৫৬.৫০ গড়ে ১১৩ রান করে নজর কাড়েন তিনি। সেই ধারাবাহিকতাই যেন টেনে আনলেন মিরপুরেও।
জাকেরের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এর চেয়ে বড় ইনিংস আছে দুটি-৭২ (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) এবং ৬৮ (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে)। তবে সে দুটি ম্যাচে জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। আর মিরপুরে গতকাল দলকে জিতিয়েই ফিরলেন তিনি, তাই নিজের সেরা ইনিংসগুলোর একটি বলেই বিবেচনা করছেন এটিকে।
চলতি সিরিজে কখনও পাঁচ নম্বরে, কখনও সাত নম্বরে খেলেছেন জাকের। তবে ব্যাটিং পজিশন নিয়ে তার তেমন মাথাব্যথা নেই।
তিনি বলেন, বিপিএলসহ বয়সভিত্তিক ক্রিকেটেও সাত নম্বরে খেলেছি, এমনকি একবার শেষ ব্যাটারের সঙ্গে ৭১ রানের জুটি গড়েছিলাম। আমি আজকে এই পজিশনে নামব, সেটা জানতাম, মানসিকভাবে তৈরি ছিলাম।
মাত্র ১টি চার, কিন্তু ৫টি ছক্কা-এটাই জাকেরের ইনিংসের বিশেষত্ব। নিজের ব্যাটিং কৌশল নিয়ে জাকের বলেন, অনুশীলনে যেমন করি, আজ মাঠে সেটাই কাজে লাগিয়েছি। দুই বছর আগে বিপিএলে ব্যাটিং কোচের সঙ্গে কাজ করেছিলাম। কিছু স্ট্যান্স আছে, যেগুলো আমি প্রকাশ করতে চাই না।
মিরপুরের উইকেট সাধারণত রানপ্রসবা নয়। জাকের জানান, উইকেট দেখে অধিনায়ক বলেছিলেন ১৪০ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে। আমরা সেটাই করেছি। শেষ বলে ছক্কাটা হলে লক্ষ্য পূরণ হতো, ছয় রান কম ছিলাম।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ম্যাচে জয় এসেছে শেষ মুহূর্তে। জাকের বলেন, এই ধরনের ক্লোজ ম্যাচ জেতা দলের জন্য ভালো লক্ষণ। আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। শেষ ম্যাচটাও জেতার লক্ষ্য থাকবে আমাদের।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে। তবে মিরপুরেই শেষ ম্যাচ জিতে ‘তিনে তিন’ করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে টাইগাররা।