মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামটি এখন ‘টমেটো গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত। সারা বছর উন্নত জাতের টমেটো চাষ ও চারার নার্সারির মাধ্যমে কৃষিতে বিপ্লব ঘটালেও গ্রামবাসীর সবচেয়ে বড় সমস্যা, দুই কিলোমিটার দীর্ঘ একটি কাঁচা রাস্তা। এই রাস্তার দুরবস্থার কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন কৃষক থেকে শিক্ষার্থী, সবাই। সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই টমেটো চাষ বা নার্সারির কার্যক্রম চলছে। অনাবাদি নেই এক চিলতে জমিও। কিন্তু কাঁচা রাস্তাটি বছরের পর বছর সংস্কারের অভাবে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এতে করে কৃষকদের উৎপাদন খরচ যেমন বেড়েছে, তেমনি সময়মতো বাজারজাত না করতে পারায় পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, রুমেল মিয়া, সাইদুর রহমান, জুবেল আহমেদ, সাদ্দাম আলী, মনির মিয়াসহ অনেকে জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নজর নেই এ রাস্তায়। প্রতিবছর গ্রামবাসীরা স্বউদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তায় মাটি ভরাট ও সংস্কারকাজ করে থাকেন। রাস্তার কারণে গাড়ি নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা আসতে পারছে না। তাই স্থানীয় পাইকারদের কাছে কম দামে চারা বিক্রি করতে হয়। রাস্তা পাকাকরণ করলে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থায় বছরে কোটি টাকার চারা বিক্রি করা যেত বলে মনে করেন কৃষি উদ্যোক্তা আব্দুল মতিন।
স্থানীয় উসমান আলী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা আব্দুস সাত্তার বলেন, শুধু নার্সারি নয়, সারা বছর টমেটো ও অন্যান্য সবজি চাষ করে বনগাঁও এর শতভাগ মানুষ সফল ও স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকলে গ্রামটিতে নীরব অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটে যেত।
কমলগঞ্জের লেখক ও গবেষক আহমদ সিরাজ জানান, বনগাঁও গ্রামের সব নারী-পুরুষই একেকজন কৃষি উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছে। একটাই প্রতিকূলতা, ভাঙাচোরা কাঁচা রাস্তা। অবশ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুতই রাস্তার সংস্কার করা হবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, যদি আমাদের উপজেলা পরিষদের কোনো প্রকল্প থেকে করা সম্ভব হয় তাহলে প্রকল্প দিয়ে করে কাজ করে ফেলব। রাস্তাটি জনগুরুতপূূর্ণ রাস্তা হিসেবে বিবেচনা করে এটা আমরা দ্রুততার সহিত সম্পাদন করার চেষ্টা করব। কাঁচা রাস্তা সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন, এমন প্রত্যাশা সবার।
