ঢাকা রবিবার, ০৫ অক্টোবর, ২০২৫

বিক্ষোভে উত্তাল জর্জিয়া, তিবলিসির প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখলের চেষ্টা জনতার

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২৫, ০৯:৪৩ এএম
বিক্ষোভের সময় জলকামান ব্যবহার পুলিশের। ছবি- সংগৃহীত

জর্জিয়ার রাজধানী তিবলিসিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দেশটির পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের আলোচনায় স্থবিরতা ও নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে বিক্ষোভকারীরা দেশটির প্রেসিডেন্টের বাসভবন দখলের চেষ্টা করে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের দমনে জলকামান ও মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত বছরের পার্লামেন্ট নির্বাচনে জর্জিয়ায় ক্ষমতাসীন ‘ড্রিম পার্টি’ জয় দাবি করার পর থেকেই দেশটি রাজনৈতিক অচলাবস্থার তৈরি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থি বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করছে, নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে শাসকদল জয় পেয়েছে। এরপর থেকে সরকার ইইউতে যোগদানের আলোচনা স্থগিত রেখেছে।

এমন অবস্থায় শনিবার স্থানীয় নির্বাচনের দিনই রাজধানীতে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। সরকারবিরোধী অভিযানের প্রতিবাদে অধিকাংশ বিরোধী দল এ নির্বাচন বর্জন করে। বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক অপেরা গায়ক পাতা বুরচুলাদজে আগেই শাসক দলের নেতাদের গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এদিন তিবলিসির রাস্তাগুলোতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী জর্জিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা হাতে মিছিল করেন। বুরচুলাদজে এক ঘোষণায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখিয়ে তারা যেন অবিলম্বে জর্জিয়ান ড্রিম দলের ছয়জন শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার করেন। পরে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে গিয়ে সেখানে ঢোকার চেষ্টা করলে দাঙ্গা পুলিশ পিপার স্প্রে নিক্ষেপ করে।

মূলত গত কয়েক মাস ধরে সরকারবিরোধী কর্মী, স্বাধীন গণমাধ্যম ও পশ্চিমাপন্থি রাজনৈতিক নেতাদের ওপর দমননীতি জোরদার করেছে জর্জিয়ার সরকার। অধিকাংশ বিরোধী নেতা এখন কারাগারে।

২১ বছর বয়সি ইয়া নামের এক তরুণী কালো পোশাক, হেলমেট ও গ্যাসমাস্ক পরে বিক্ষোভে যোগ দেন। ইয়া বলেন, ‘আমি চাই জর্জিয়ান ড্রিম সরে যাক। আমরা দেশটাকে ফিরে পেতে চাই। আমার যেসব বন্ধুকে অবৈধভাবে জেলে রাখা হয়েছে, তারা যেন মুক্তি পায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘রঙিন কিছু পরলে সহজেই আমাদের চেনা যাবে, আর চেনা গেলে জেলে যেতে হবে’। মূলত সরকারি নজরদারির অংশ হিসেবে রুস্তাভেলি এভিনিউতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন নজরদারি ক্যামেরা বসানো হয়েছে এবং এটাই বোঝাতে চাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সরকার বলছে, ‘রাস্তা অবরোধের মতো বেআইনি কর্মকাণ্ডে’ অংশ নেওয়ার অভিযোগে শত শত বিক্ষোভকারীকে ৫ হাজার জর্জিয়ান লারি (প্রায় ১ হাজার ৮৩৫ ডলার) জরিমানা করা হয়েছে।