ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংস্থা হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মতি জানানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধে ইসরায়েলকে নির্দেশ দেন। কিন্তু তার এ নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শনিবার গাজা সিটিতেই ৪৬ জনকে হত্যা করেছে দখলদাররা। এরমধ্যে তুফ্ফাহ এলাকার একটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে একসাথে ১৭ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
হামাস বলছে, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা কমানোর দাবি করলেও বাস্তবে ইসরায়েল তার আগ্রাসন থামায়নি। শনিবার এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি এই প্রতিরোধ গোষ্ঠীটি জানায়, ‘নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান কমানোর বিষয়ে যুদ্ধাপরাধী নেতানিয়াহুর সরকারের দাবি মিথ্যা প্রমাণ করেছে এই রক্তক্ষয়ী হামলা।’
হামাস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, আরব ও ইসলামি দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন আইনগত ও মানবিক দায়িত্ব পালন করে ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে, ত্রাণ সহায়তা জোরদার করে এবং দুই বছর ধরে চলা ‘নিধনযজ্ঞ ও গণঅনাহার বন্ধে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ায়।’
গাজার গণমাধ্যম কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী শনিবার ৯৩টি বিমান হামলা চালিয়েছে, যাতে ৭০ জন নিহত হন। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে’ ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান। কারণ হামাস তার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের অংশ হিসেবে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দিতে প্রস্তুতির কথা প্রকাশ করেছে। ট্রাম্প বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন হামাস ‘টেকসই শান্তির জন্য প্রস্তুত।’
এ ছাড়া শনিবার মিসর ঘোষণা করেছে, সোমবার দেশটিতে ইসরায়েলি ও হামাস প্রতিনিধিদল উপস্থিত থাকবে এবং সেখানে ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
এর আগে ট্রাম্প গত ২৯ সেপ্টেম্বর তার ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। এতে যুদ্ধবিরতি, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং সংঘাত বন্ধের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।